জনগণের আহ্বানে লিভারপুল ছাড়বেন মানে
সাদিও মানে কি লিভারপুলে থাকবেন? চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের আগ থেকেই এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন অলরেড সমর্থকেরা। বাজারে যে গুঞ্জন, তাতে এরই মধ্যে সেনেগালিজ ফরোয়ার্ডকে পাওয়ার দৌড়ে অনেক দূর এগিয়ে গেছে বায়ার্ন মিউনিখ। দুই ক্লাবের মধ্যে দর-কষাকষি ৩ থেকে ৫ কোটি ইউরোর মধ্যে হচ্ছে বলে জানাচ্ছে জার্মান সংবাদমাধ্যমগুলো। এই দলবদলের গুঞ্জন কাল আরেকটু ভারী করলেন স্বয়ং সাদিও মানে।
গতকাল স্বদেশি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মানে বলেছেন, দেশের মানুষ যদি চায়, তাহলে অবশ্যই লিভারপুল ছাড়বেন তিনি।
ক্লাব মৌসুম শেষ। কিন্তু ফুটবলারদের ছুটি মেলেনি, অন্তত শীর্ষ তারকাদের তো নয়ই। অধিকাংশ তারকাই এখন জাতীয় দল নিয়ে ব্যস্ত। দক্ষিণ আমেরিকান দলগুলো প্রীতি ম্যাচ খেলছে, ইউরোপজুড়ে চলছে প্রীতি ম্যাচের টুর্নামেন্টখ্যাত নেশনস লিগ।
আফ্রিকান দলগুলো সে তুলনায় বেশ গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টে ব্যস্ত। আফ্রিকান কাপ অব নেশনসের বাছাইপর্ব শুরু হয়েছে। ঘরের মাঠে আজ রাতে বেনিনের বিপক্ষে খেলবে সেনেগাল। গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়েছিলেন মানে।
ক্লাবের হয়ে লিগ আর চ্যাম্পিয়নস লিগ না জিতলেও মৌসুমের শেষভাগটা দারুণ কেটেছে মানের। লিভারপুলের হয়ে ঘরোয়া দুই কাপ টুর্নামেন্ট লিগ কাপ ও এফএ কাপ জিতেছেন। দেশকে প্রথমবারের মতো কাপ অব নেশনস এনে দিয়েছেন।
সেখানে ফাইনালে ক্লাব সতীর্থ মোহাম্মদ সালাহর মিসরকে হারিয়েছেন, সেই মিসরকেই আবার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্লে-অফে হারিয়ে মূল পর্বে গেছে সেনেগাল। এতটাই দুর্দান্ত মৌসুম কেটেছে মানের যে ব্যালন ডি’অরের আলোচনায় তাঁর জায়গা পাওয়ার আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু ক্লাব তাঁকে প্রাপ্যটা দিচ্ছে না বলেই সম্ভবত মনে হচ্ছে মানের।
লিভারপুলে চুক্তি নবায়ন নিয়ে আক্ষেপের কথা বারবারই জানিয়েছেন সালাহ। উচ্চ বেতন না পেলে ক্লাব ছেড়ে দেবেন, সেটা প্রকাশ্যেই জানিয়েছেন তিনি। ক্লাবের সর্বোচ্চ বেতনভোগীদের একজন সালাহই বেতন নিয়ে অসন্তুষ্ট। সে তুলনায় অনেক কম বেতন পাওয়া মানেকে এ নিয়ে কথা বলতে শোনা যায় না। তবে এই মৌসুমেই মানের ক্লাব ছাড়তে চাওয়ার পেছনে নাকি বেতনই অনেক বড় ভূমিকা পালন করছে। বয়সে ৩০-এর ঘর ছুঁতে চলা মানের আরেকটি বড় চুক্তি জোগাড় করার এবারই শেষ সুযোগ। লিভারপুলের কাছ থেকে তাই বড় চুক্তির প্রস্তাব না পাওয়া মানে ক্লাব ছাড়তে চাচ্ছেন বলে শোনা যায়।
দেশের সবচেয়ে বড় তারকা লিভারপুলে প্রাপ্য সম্মান পাচ্ছেন না, এটা বেশ গায়ে লেগেছে সেনেগালিজদের। এতটাই যে অনলাইনে হওয়া এক ভোটে সমর্থকদের বড় অংশ বলেছেন, মানের লিভারপুল ছাড়া উচিত। সংবাদ সম্মেলনে তাঁকে এ নিয়ে কাল প্রশ্ন করা হয়েছিল। মানে এমন প্রশ্নে বেশ মজা পেয়েছেন। রসিকতার সুরেই বলেছেন, ‘বাকি সবার মতো আমিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আছি এবং মানুষের মন্তব্য দেখি।’
ভোটের ফলটাও যে জানা আছে, সেটা জানিয়েছেন মানে। মজা করে বলেছেন, স্বদেশি মানুষ যেহেতু চাচ্ছেন, তাতে ক্লাব ছাড়াটাই যুক্তিযুক্ত, ‘সেনেগালের ৬০ থেকে ৭০ ভাগ মানুষই তো চান আমি যেন লিভারপুল ছাড়ি, তাই না? তাঁরা যা চান, সেটাই করব। খুব দ্রুতই জানা যাবে। এত তাড়াহুড়ার কিছু নেই, আমরা সবাই মিলেই ব্যাপারটা দেখতে পারব (দলবদল)।’