২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

চ্যাম্পিয়নস লিগের ‘খুনি’ রিয়াল চ্যাম্পিয়নস লিগেরই উদ্‌যাপন করে

চ্যাম্পিয়নস লিগ আর রিয়াল মাদ্রিদের সম্পর্ক তো বিশেষ কিছুইছবি: রয়টার্স

রিয়াল মাদ্রিদের প্রতি পিএসজির চেয়ারম্যান নাসের আল-খেলাইফির খেপে থাকার কারণ আছে বটে! একে তো চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের পথে রিয়াল মাদ্রিদ তাঁর ক্লাবকে শেষ ষোলোতে বিদায় করে দিয়েছে, তার ওপর চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালটাও হয়েছে পিএসজির শহর প্যারিসে। লিভারপুলকে হারিয়ে প্যারিসে পিএসজির ঘরের পাশেই শিরোপার উৎসবে মেতেছেন বেনজেমা-মদরিচরা। তার ওপর কিলিয়ান এমবাপ্পেকে নিয়েও পুরো একটা বছর পিএসজিকে কী টেনশনেই না রেখেছে রিয়াল!

সেই রিয়ালকে নিয়ে পিএসজির চেয়ারম্যানের কথা যে মিষ্টিমধুর কিছু হবে না, তা বোধ হয় অনুমান করে নেওয়া সহজই। রিয়ালকে নিয়ে কী বলেছেন আল-খেলাইফি? চ্যাম্পিয়নস লিগের বিরোধী টুর্নামেন্ট ইউরোপিয়ান সুপার লিগের মূল হোতা তিন ক্লাবের একটি রিয়ালকে খোঁচা মেরেছেন চ্যাম্পিয়নস লিগ নিয়ে। যে চ্যাম্পিয়নস লিগকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল রিয়াল, সেটিই জেতার পর তাদের উল্লাসে দ্বিচারী মনোভাবের প্রকাশ দেখেন পিএসজির প্রধান।

ওরা কত দিন ধরে সেটির উদ্‌যাপন করল, অথচ ওরাই এই টুর্নামেন্টটাকে খুন করতে চায়!
রিয়াল মাদ্রিদকে নিয়ে পিএসজি চেয়ারম্যান নাসের আল-খেলাইফি

২০২১ সালের এপ্রিলে রিয়াল, বার্সেলোনা, জুভেন্টাসের নেতৃত্বে ইউরোপের বড় ১২টি ক্লাব মিলে সুপার লিগের ঘোষণা দেয়। কিন্তু নিজেদের সমর্থকদেরই বিরোধিতা আর উয়েফার হুমকি-ধমকির মুখে ইংলিশ ছয় ক্লাব ও ইতালির ইন্টার মিলান-এসি মিলান আর স্পেনের আতলেতিকো মাদ্রিদ সরে যায়। পরিকল্পনায় অটল থেকে যায় তিন মূল হোতা—জুভেন্টাস, বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ।

পিএসজি আবার এদিক থেকে উয়েফার পাশে, পিএসজির চেয়ারম্যান আল-খেলাইফি উয়েফার অধীন ক্লাবগুলোর সংগঠন ইসিএর (ইউরোপিয়ান ক্লাবস অ্যাসোসিয়েশন) সভাপতি কিনা! সেদিক থেকেও রিয়াল-বার্সার মতো ক্লাবগুলো তো পিএসজিরও প্রতিদ্বন্দ্বী!

সেই প্রতিদ্বন্দ্বীদের একটি রিয়ালকে খোঁচা মারার সুযোগ তাই ছাড়লেন না আল-খেলাইফি।

নাসের আল খেলাইফি
ছবি : রয়টার্স

ইতালিয়ান দৈনিক গাজেত্তা দেল্লো স্পোর্তে পিএসজি চেয়ারম্যানের কথা, ‘বড় ক্লাবগুলোকে প্রাপ্য সম্মান আমি দিই। চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা রিয়াল মাদ্রিদের প্রাপ্যই ছিল। ওরা কত দিন ধরে সেটির উদ্‌যাপন করল, অথচ ওরাই এই টুর্নামেন্টটাকে খুন করতে চায়!’

সুপার লিগের সবচেয়ে বড় সমালোচনা ছিল, এখানে ছোট ক্লাবগুলোর ঢোকার, বেড়ে ওঠার পথ নেই। শুধু নির্ধারিত কয়েকটি ক্লাবের ‘পৈত্রিক সম্পত্তি’ই যেন টুর্নামেন্টটা। তাতে কী সমস্যা, সেটিও উঠে এসেছে আল-খেলাইফির কথায়, ‘আয়াক্সকে সেমিফাইনালে দেখে আমার ভালো লেগেছে, টটেনহামকে ফাইনালে। ইউরোপে পিএসজির প্রথম ম্যাচটার কথা এখনো মনে আছে, সালজবুর্গে খালি গায়ে সমর্থকেরা ঠান্ডায় কাঁপছিল। ফুটবলের প্রাণই এটি। ঢোকার পথ বন্ধ—এমন লিগ সেদিক থেকে পুরোপুরি অন্যায্য। এটা আমরা হতে দিতে পারি না।’

রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায় নিয়েছে পিএসজি
ছবি: রয়টার্স

রিয়াল-বার্সার মতো স্পেনে আরেকজনের সঙ্গেও ইদানীং বাধছে পিএসজির লা লিগার প্রধান হাভিয়ের তেবাসের। সুযোগ পেলেই পিএসজি, ম্যানচেস্টার সিটির মতো মধ্যপ্রাচ্যের তেলেধন্য ক্লাবগুলোর অর্থের উৎস নিয়ে খোঁচা মারেন লা লিগা প্রধান। গত মৌসুমে লিওনেল মেসি ও সের্হিও রামোসের মতো তারকা স্প্যানিশ লিগের দুই কুলীন ক্লাব বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদে চুক্তি শেষে পিএসজিতে যাওয়ার পর থেকেই সরব তেবাস, কদিন আগে এমবাপ্পে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে গিয়ে স্প্যানিশ লিগের ‘সম্পদ’ না হওয়ায় সমালোচনা আরও বেড়েছে।

কিন্তু তেবাসের সমালোচনা নিয়ে প্রশ্নে আল-খেলাইফির উত্তর, ‘তেবাস আবার কে? আমি কাউকে জ্ঞান দিই না, অন্য ক্লাব বা লিগ নিয়েও নাক গলাই না। কী করতে হবে, সেটি অন্যকে বলার ভাব করাও অসভ্যতা। চ্যাম্পিয়নস লিগকে যারা নিজেদের লিগের জন্য হুমকি মনে করে, তাদের কাছ থেকে উপদেশ নিই না আমি। আমার নিজস্ব একটা প্রকল্প আছে, সবাইকে সম্মান জানিয়ে সেটি নিয়েই কাজ করতে চাই।’