চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে স্টেডিয়ামের সিসিটিভি ফুটেজ মুছে ফেলা হয়েছে!
চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল নিয়ে নতুন বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে।
প্যারিসের স্তাদে দি ফ্রান্সে গত ২৮ মে রিয়াল মাদ্রিদ-লিভারপুল ফাইনালে সমর্থকদের হেনস্তা হওয়া নিয়ে তদন্ত চলছে। আধা ঘণ্টার বেশি দেরিতে ম্যাচ শুরু হওয়ার পেছনে সেদিন লিভারপুল সমর্থকদের বিনা টিকিটে মাঠে ঢুকতে চাওয়াকে দায়ী করেছিল প্যারিসের পুলিশ।
স্টেডিয়াম থেকে পুলিশের টিয়ার গ্যাস, লাঠি চার্জের শিকার লিভারপুল ও রিয়াল মাদ্রিদের সমর্থকেরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেটির প্রতিবাদ করেন। দেশটির সংসদে এ ঘটনায় নিজেদের পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল কয়েক দিন আগে। এবার বের হলো নতুন খবর। ফ্রান্সের সিনেটে একটি কমিশন ফাইনালের তদন্তের শুনানিতে কাল জানতে পেরেছে, সেদিন স্টেডিয়ামের সিসিটিভিতে কোনো ফুটেজ নেই, মুছে ফেলা হয়েছে।
ফরাসি ফুটবল ফেডারেশন (এফএফএফ) জানিয়েছে, ফাইনালে স্তাদে দি ফ্রান্সের সব ভিডিও ফুটেজ মুছে ফেলা হয়েছে। ফরাসি আইনে আছে, বিচারিক কার্যক্রমে দরকার না হলে এই ভিডিও ফুটেজ সাত দিনের মধ্যে মুছে ফেলতে হবে।
সিনেট কমিশনের সহসভাপতি লঁরা লাঁফো অবশ্য এতে অবাক হয়েছেন। কারণ ম্যাচের পরের দিনই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়। সংবাদ সংস্থা এএফপিকে লাঁফো বলেছেন, ‘আমরা বিস্মিত। ফুটেজ চাওয়ার জন্য হাতে অনেক সময় ছিল। কী ঘটেছিল সেটা আমাদের বোঝা দরকার।’
ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যম জানায়, সেদিন ফাইনালে প্যারিসের স্থানীয় মানুষ লিভারপুলের সমর্থকদের কাছ থেকে টিকিট ছিনতাই করেন। ভুয়া টিকিট ছাপিয়েও অনেকে ঢুকে পড়েন। এমন পরিস্থিতিতে ফরাসি পুলিশ মাঠে ঢোকার রাস্তা আরও সরু করে রাখলে বাইরে জনজট লেগে যায়। একপর্যায়ে ফরাসি দাঙ্গা পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।
ফ্রেঞ্চ সিনেটে সেদিনের ঘটনার শুনানিতে প্যারিস পুলিশের প্রধান দিদিয়ের লালমঁ স্বীকার করেছেন, সেদিন পুলিশের কার্যক্রম পুরোপুরি ‘ব্যর্থ’ ছিল। কারণ, তাদের কাজের কারণে সমর্থকেরা আহত হয়েছেন, ফ্রান্সের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হয়েছে।
লঁরা লাঁফো মনে করেন, সেদিন স্টেডিয়ামে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পেছনে রয়েছে ‘অব্যবস্থাপনা’ এবং ‘প্রস্তুতির অভাব।’ লিভারপুলের মেয়র স্টিভ রথাম এফএফএফের কাছে ভিডিও ফুটেজ মুছে ফেলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
‘কেন ফুটেজ মুছে ফেলা হলো, তা বুঝতে পারছেন না’ লিভারপুল মেয়র। সিনেট নেতা ব্রুনো রেঁতেলিয়াউের মন্তব্য, ‘আমরা বুঝেশুনেই প্রমাণাদি নষ্ট করেছি, সবকিছু এ দিকেই ইঙ্গিত করে।’
তবে কাল ফরাসি পুলিশ দাবি করেছে, ফাইনালে স্তাদে দি ফ্রান্সের ভিডিও ফুটেজ আছে তাদের কাছে। ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিন মনে করেন, টিকিট জালিয়াতি হয়েছে ‘শিল্পকারখানা পর্যায়ে’ এবং ভুয়া টিকিট নিয়ে ৩০ থেকে ৪০ হাজার লোক উপস্থিত হওয়ায় পুলিশের সঙ্গে সমর্থকদের দাঙ্গা-হাঙ্গামার মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটে।