চ্যাম্পিয়নস লিগ? ইউরোপা লিগের আশাই যা থাকছে রোনালদোদের
আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের আশা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের একেবারে নেই বললে গণিতের মন খারাপ হবে! অঙ্কের হিসাবে এখনো আশাটা বেঁচে আছে। তবে কাগজেকলমের সে সম্ভাবনা বাস্তবে শুধুই দীর্ঘশ্বাস জাগায়। চ্যাম্পিয়নস লিগ কী, ইউরোপের দ্বিতীয় সারির টুর্নামেন্ট ইউরোপা লিগে খেলা নিঃসংশয় রাখতেই কাল রোনালদোদের জয়টা অনেক দরকার ছিল।
নিজেদের মাঠ ওল্ড ট্রাফোর্ডে মৌসুমের শেষ ম্যাচে ব্রেন্টফোর্ডকে ৩-০ গোলে হারিয়ে সে শঙ্কা অনেকটাই কমিয়েছে ইউনাইটেড। গোলখরা ঘুচিয়ে ব্রুনো ফার্নান্দেজের ক্লাবের জার্সিতে ৫০তম গোল আর রাফায়েল ভারানের ক্লাবে প্রথম গোলের মাঝে যথারীতি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর গোল—এতেই রচিত ইউনাইটেডের জয়ের গল্প।
এ জয়ে ৩৬ ম্যাচে ৫৮ পয়েন্ট নিয়ে লিগে ছয় নম্বরে ইউনাইটেড। চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা পেতে সেরা চারে থাকতে হবে, চারে থাকা আর্সেনাল দুই ম্যাচ কম খেলেই ইউনাইটেডের চেয়ে ৫ পয়েন্ট এগিয়ে। পাঁচে থাকা টটেনহামও রোনালদোদের চেয়ে ২ ম্যাচ কম খেলে ৩ পয়েন্ট এগিয়ে।
প্রথম চার দল চ্যাম্পিয়নস লিগে যাবে, পরের দুই দল সরাসরি সুযোগ পাবে ইউরোপা লিগে। সাত নম্বর দল খেলবে ইউরোপা লিগের প্লে-অফ। সে হিসেবে ইউরোপা লিগের গ্রুপ পর্বে জায়গা নিশ্চিত করতে ছয়ে থাকতেই হবে ইউনাইটেডকে। কালকের জয়ে সাতে থাকা ওয়েস্ট হামের চেয়ে এক ম্যাচ বেশি খেলে ৬ পয়েন্ট এগিয়ে থাকলেন রোনালদোরা।
৯ মিনিটে অ্যান্থনি এলাঙ্গার ক্রসে বক্সের মাঝ থেকে শটে ইউনাইটেডকে এগিয়ে দেন ব্রুনো ফার্নান্দেজ—লিগে ৮ ম্যাচ পর গোলের দেখা পেলেন তিনি। প্রথমার্ধেই পাল্টা আক্রমণে হুয়ান মাতার দারুণ ক্রসে প্রথম স্পর্শের শটে বল জালে জড়িয়েছিলেন রোনালদো, কিন্তু শট নেওয়ার সময় তিনি ভগ্নাংশ ব্যবধানের অফসাইডে ছিলেন বলে গোলটা বাতিল করে দেয় ভিএআর।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্রেন্টফোর্ডই কিছুটা দাপট দেখিয়েছে, প্রথম ১৫ মিনিটে ইভান টনি ও ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনের দুটি শট ঠেকিয়ে দেন এ মৌসুমে রোনালদোর পাশাপাশি ইউনাইটেডকে অনেক পয়েন্ট এনে দেওয়া গোলকিপার দাভিদ দে হেয়া। এরপর আবার ইউনাইটেডের দাপট ফেরে।
ফেরে রোনালদোর সৌজন্যেই। ৬১ মিনিটে বক্সে তাঁকে ফাউল করায় পেনাল্টি পায় ইউনাইটেড, সেটি জালে জড়িয়ে লিগে ১৮তম গোলটি পেলেন রোনালদো। এর ১১ মিনিট পর কর্নার থেকে দারুণ হেডে ইউনাইটেডের তৃতীয় গোলটি রাফায়েল ভারান—ইউনাইটেডের জার্সিতে ফরাসি ডিফেন্ডারের প্রথম গোল।
দারুণ এই জয়ের পরও ইউনাইটেডে একটা হতাশার সুর। থাকারই কথা, ইউরোপা লিগে খেলা তো আর ইউনাইটেডের গর্ব করার মতো কিছু নয়। ম্যাচ শেষে ফার্নান্দেজ তাই বললেন, ‘জানি, সবাই আমাদের কাছে যেমনটা চায়, সেই মানে আমরা খেলতে পারিনি। নিজেদের কাছে আমাদের নিজেদের প্রত্যাশাই এর চেয়ে বেশি। ক্লাবটার যেখানে থাকার কথা, সেখানে যাওয়া দরকার।’
সে পথে এই মৌসুম শেষে নতুন কোচ এরিক টেন হাগের দিকেই চেয়ে আছেন ফার্নান্দেজ, ‘নতুন কোচের সঙ্গে কথা বলার, তিনি কীভাবে খেলাতে চান সেটি বোঝার সময় আসবে। তবে তার আগে আমাদের এই মৌসুমটা ভালোভাবে শেষ করতে হবে।’