চেলসিতে শেভচেঙ্কো–তোরেসের চেয়েও বড় ‘ফ্লপ’ কেপা
চেলসিতে ৯ নম্বরদের ফ্লপের তালিকাটা খুব একটা ছোট নয়। এই তালিকায় বড় নামও আছে অনেক। আন্দ্রেই শেভচেঙ্কো, ফার্নান্দো তোরেস, ক্রিস সাটনরাও পারেননি চেলসির ৯ নম্বরের ফ্লপের গল্প থেকে নিজেদের নাম কাটাতে। ফ্লপের এই গল্প এখন আর শুধু ৯ নম্বরে সীমাবদ্ধ নেই। গোলবারের নিচেও এসে ঠেকেছে। গোলকিপারদের ট্রান্সফার ফির রেকর্ড গড়ে কেনা কেপা আরিজাবালাগার কথাই ধরুন, চেলসিতে নাম লেখানোর পর কেমন যেন হয়ে গেছেন চেলসির স্প্যানিশ গোলকিপার।
২০১৮ সালে অ্যাথলেটিক বিলবাও থেকে তাঁকে ৮ কোটি ইউরোতে দলে ভেড়ায় চেলসি। কিন্তু নাম আর দামের প্রতি সুবিচার করতে পারছেন কই! লিভারপুলের কাছে গতকাল নিজেদের মাঠে ২-০ গোলে হেরে যাওয়া ম্যাচেও বাজে একটি ভুল করেছেন কেপা। তাঁর ভুলের সুযোগ নিয়েই নিজের ও দলের দ্বিতীয় গোলটি করেছেন সাদিও মানে। এই ম্যাচ শেষে অ্যালান শিয়ারার বলেছেন, ‘কেপাকে নিয়ে লিগ জিততে পারবে না চেলসি।’ চেলসির ফ্লপ ৯ নম্বরের একজন সাটন তো ঘোষণার সুরেই বলেছেন—কীসের শেভচেঙ্কো, কীসের তোরেস; চেলসির ইতিহাসের সেরা ফ্লপ কেপা!
ব্ল্যাকবার্ন রোভার্স থেকে সাটন চেলসিতে নাম লিখিয়েছিলেন ১৯৯৯ সালে। এক কোটি পাউন্ডে কেনা স্ট্রাইকারকে এক মৌসুমের বেশি রাখেনি চেলসি। এ নিয়ে হয়তো কোনো আক্ষেপও নেই সাটনের। তবে ফ্লপ ট্যাগটা পিঠে সেঁটে গিয়েছিল বলে হতাশা না থেকে পারে না। কেপা হয়তো সেই হতাশা থেকে মুক্তি দিচ্ছেন সাটনকে। ব্রিটিশ পত্রিকা ডেইলি মেইলকে তিনি বলেছেন, ‘আমাকে ১ কোটি পাউন্ডে কেনার পর হয়তো এটাই তাদের সবচেয়ে বাজে চুক্তি।’
এক মৌসুম পর চেলসি সাটনকে সেল্টিকের কাছে বিক্রি করে দেয় ৬০ লাখ পাউন্ডে। সাটনের কথা, ‘ফুটবলে এটা হতেই পারে। ফার্নান্দো তোরেসের কথাই ধরুন, চেলসি তাকে ৫ কোটি পাউন্ডে কিনেছিল। কিন্তু এত টাকা দিয়ে একটি খেলোয়াড়ের জন্য বার্সেলোনার বিপক্ষে সেমিফাইনালের সেই ঐতিহাসিক একটি গোলই যথেষ্ট বলে চেলসির কম সমর্থকই মানবে। ৩ কোটি পাউন্ডে কেনা আন্দ্রেই শেভচেঙ্কোও ব্যর্থ। কিন্তু কেপা আমাদের সবাইকে হার মানিয়েছে। সাদিও মানের গোল নিয়ে মুখোমুখি হওয়া সর্বশেষ ১৬টি শটের ১১টিতেই গোল খেয়েছে সে।’
কেপার পারফরম্যান্সে খুবই হতাশ সাটন। সব মিলিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আক্রমণভাগের জন্য আপনি অনেক অর্থ ব্যয় করতে পারেন। কিন্তু আপনার গোলকিপার যদি সাধারণ একটা শটও ঠেকাতে না পারে তাহলে কী করে হবে? কেপা নিজেকে প্রিমিয়ার লিগ যুগে নিজেকে সবচেয়ে বাজে চুক্তিগুলোর একটি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।’
এমন পারফরম্যান্সের পর চেলসিতে কেপার ভবিষ্যৎ নিয়েই শঙ্কা দেখছেন সাটন, ‘১৯৯৯ সালে আমি বড় অঙ্কে স্টামফোর্ড ব্রিজে এসেছিলাম। এটা কাজে আসেনি। এক বছর পরই তারা আমাকে সেল্টিকের কাছে বিক্রি করে দেয়। ফুটবলে আপনি শাপমুক্তির একটা সুযোগ সব সময়ই পাবেন। আমি সেটা সেল্টিকে পেয়েছিলাম। কেপারও অন্য কোথাও গিয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে পারে। তা ছাড়া চেলসি এমন ক্লাব নয় যে তারা বলবে—সমস্যা নেই, পরের মৌসুমে দেখা যাবে। ল্যাম্পার্ডও এটা ভালো করেই জানে কিছু না কিছু জিততেই হবে।’