চাকরি হারিয়েও বদলাননি ভালভার্দে
>আর্নেস্তো ভালভার্দের আমলে বার্সা ঠিক বার্সার মতো খেলত না। এমন অভিযোগ মাথায় নিয়েই ছাঁটাই হয়েছিলেন দলটার সাবেক কোচ
সেই ইয়োহান ক্রুইফের আমল থেকে শুরু। ক্রুইফের 'টিকিটাকা ফুটবল' এর ঝাণ্ডাই পরে কাতালান ক্লাব বার্সেলোনায় উড়িয়ে গেছেন ফ্রাঙ্ক রাইকার্ড, পেপ গার্দিওলা, টিটো ভিয়ানোভা, লুইস এনরিকের মতো কোচেরা।
কী এই টিকিটাকা ফুটবল? সহজ ভাষায় বলতে গেলে ম্যাচের অধিকাংশ সময়ে বল পায়ে রেখে খেলা নিয়ন্ত্রণ করার যে বিশেষ স্টাইল, তাকেই বলে টিকিটাকা। জাভি-ইনিয়েস্তা থেকে শুরু করে মেসি, এমনকি হালের আর্থুর বা ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং, বার্সেলোনার অধিকাংশ খেলোয়াড়ই এই ধরণের সঙ্গে অভ্যস্ত। বর্তমান কোচ কিকে সেতিয়েনও এভাবেই খেলান দলকে। সবার আগে বল নিয়ন্ত্রণ কর। তার পর অন্য হিসেব।
কিন্তু সাবেক কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দের অধীনে সে 'পরিচয়' থেকে যেন একটু বের হয়ে আসে বার্সেলোনা। ফলে সমর্থকদের সমালোচনাও কম শুনতে হয়নি সাবেক এই স্প্যানিশ কোচকে। পরম আরাধ্য চ্যাম্পিয়নস লিগের বারংবার ব্যর্থতাও সে সমালোচনার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছিল বহুগুণ। যার খেসারত ভালভার্দেকে দিতে হয়েছে চাকরি হারিয়ে।
কিন্তু চাকরি হারিয়েও নিজের দৃষ্টিভঙ্গী বদলাননি ভালভার্দে। মাঠে প্রতিপক্ষের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনার জন্য বলকে নিয়ন্ত্রণ রাখাই মুখ্য নয়, মনে করেন তিনি, 'মাঠে নামার মূল লক্ষ্যই হল প্রতিপক্ষের চেয়ে ভালো অবস্থানে থাকা, তাঁদের ওপর ছড়ি ঘোরানো। আমার মতে প্রতিপক্ষের তুলনায় গোল করার সুযোগ বেশি পেলে কিংবা প্রতিপক্ষ আপনার চেয়ে কম গোল করার সুযোগ পেলেই আপনি খেলা নিয়ন্ত্রণ করছেন, এমনটা বলা যায়। অনেক সময় দেখা যায় আপনি বল পায়ে রাখছেন ঠিকই, কিন্তু গোল করার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারছেন না। এটাকে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করা বলে না। তবে এটাও ঠিক, গোল করার সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য বল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।'
খামোকা নিজেদের অর্ধে বল নিয়ন্ত্রণে রাখার কোনো মানেই খুঁজে পান না বার্সার সাবেক এই কোচ, 'বল নিয়ন্ত্রণ করে খেলা আমিও পছন্দ করি। তবে এটাও দেখতে হবে আপনি বল নিয়ন্ত্রণ কি নিজেদের রক্ষণভাগে করছেন, না প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে। দিনের শেষে বল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখা জয় লাভ করার একটা পথ মাত্র। তাই বলে ফুটবল খেলায় জেতার জন্য বল নিয়ন্ত্রণে রাখাই সব কিছু নয়। বল পায়ে থাকুক বা না থাকুক, আপনাকে সব সময় আক্রমণাত্মক থাকতে হবে।'
সাবেক কোচের এই কথা শুনে বার্সার খেলোয়াড় ও সমর্থকেরা হয়তো মনে মনে বলবেন, 'যাক বাবা, চলে গিয়েছে, ভালোই হয়েছে!'