‘গা গরম’ করে সেই মাঠের অপেক্ষায় এরিকসেন
ডান প্রান্ত থেকে উইঙ্গার আন্দ্রেয়া স্কোভ ওলসেনের পাস, বাতাসে ভাসানো বাঁকানো শটে ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনের দুর্দান্ত গোল।
দেখে কে বলবে, গত সাত-আট মাস এই লোকের ওপর কী ঝড়ঝাপটাই না গেছে! ডেনমার্কের জার্সিতে মাঠে ফেরার ২৮৭ দিন আগেও যে এই লোকের জীবনে বাঁচা–মরা নিয়ে বড় প্রশ্ন ছিল, সেটিই–বা কে বলবে!
এরিকসেনের ঘটনা মোটামুটি সবারই জানা। তবু আরেকবার মনে করিয়ে দেওয়া যাক। গত ইউরোয় ডেনমার্কের হয়ে ফিনল্যান্ডের বিপক্ষে কোপেনহেগেন স্টেডিয়ামে খেলতে নেমে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন এরিকসেন। মাঠেই হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন।
দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ায় সে যাত্রায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান। হাসপাতালে তাঁর বুকে পেসমেকার বসানো হয়। বুকে যন্ত্র নিয়ে ইতালিয়ান ফুটবলে খেলার নিয়ম না থাকায় ছাড়তে হয় ইন্টার মিলান। এরিকসেন ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে মাঠে ফেরেন।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ব্রেন্টফোর্ড তাঁকে বাকি মৌসুমের জন্য দলে টেনে নেয়। এরপর শনিবার রাতে প্রীতি ম্যাচে ডাচদের বিপক্ষে মাঠে ফিরে গোলও করেন এরিকসেন। যদিও ম্যাচটা ৪–২ গোলে হারে ডেনমার্ক।
কিন্তু ডেনিশ সমর্থকেরা এরিকসেনকে ফিরে পাওয়ায় খুশিতে হারের দুঃখ ভুলে যেতে পারেন। তবে এরিকসেনের কাছে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচটা স্রেফ ‘গা গরম’ করার, প্রশ্ন উঠতে পারে কোন ম্যাচ সামনে রেখে এই গা গরম করা?
কোপেনহেগেনের পারকেন স্টেডিয়ামে কাল প্রীতি ম্যাচে সার্বিয়ার মুখোমুখি হবে ডেনমার্ক। এই ম্যাচের অপেক্ষায়ই আছেন ৩০ বছর বয়সী অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। গত বছর ১২ জুন ইউরোয় ফিনল্যান্ড ও ডেনমার্কের মধ্যে ম্যাচ পারকেন স্টেডিয়ামেই হয়েছিল। এ মাঠেই হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন এরিকসেন।
ডাচদের বিপক্ষে বদলি হয়ে মাঠে নেমে গোল করে জাতীয় দলের জার্সিতে ফেরাকে এরিকসেন ‘নিখুঁত’ মনে করলেও তাঁর সব মনোযোগ সার্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ ঘিরেই। এই ম্যাচ সামনে রেখেই ডাচদের মুখোমুখি হওয়াকে ‘গা গরম’ বলেছেন এরিকসেন।
কারণ? যে মাঠে হার্ট অ্যাটাকের শিকার হয়ে জীবন নিয়ে সংশয়ে পড়েছিলেন ডেনিশ তারকা, সেখানে ফেরা তো অবশ্যই বিশেষ উপলক্ষ। ডেনিশ টিভি চ্যানেল ক্যানাল ৫–এর সঙ্গে আলাপচারিতায় সে কথাই বললেন এরিকসেন, ‘এটা হবে আরও বিশেষ কিছু। মঙ্গলবারের ম্যাচ সামনে রেখে আজ (ডাচদের বিপক্ষে ম্যাচ) গা গরম করলাম, যেখানে ঘটনাটা ঘটেছিল, সেখানে আমি আবার দৌড়াব।’
সার্বিয়ার বিপক্ষে এরিকসেনকে একাদশে রাখার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন ডেনমার্ক কোচ ক্যাসপার হিউলমান্দ, ‘সে এত দ্রুত উন্নতি করবে আশা করিনি। দৌড়ানোয় কোনো সমস্যা নেই, ছন্দেও ফিরেছে, শান্ত আছে। তাকে খেলতে দেখাটা আনন্দের।’