গতবারের ফাইনালিস্টকে হারিয়ে নানীর স্মরণে কেঁদেছেন, কাঁদিয়েছেন...

কেটি বোল্টারছবি : রয়টার্স

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে হয়তো শুধু নানা ও মা নন, কেটি বোল্টারের নানিও হাজির থাকতেন উইম্বলডনের গ্যালারিতে, নাতনির খেলা দেখার জন্য।

ভাগ্যের ফেরে সেটা আর হয়নি। যে নানি টেনিসের জন্য মনে ভালোবাসার বীজ বুনে দিয়েছিলেন ছোটবেলাতেই, আজীবন যিনি অনুপ্রেরণা হয়ে কাজ করেছেন কেটি বোল্টারের, সে নানিই নাতনির সবচেয়ে গৌরবের মুহূর্তটা দেখে যেতে পারলেন না, তার আগেই পাড়ি জমালেন না ফেরার দেশে।

কেটি বোল্টার
ছবি : রয়টার্স

প্রিয় নানিকে হারানোর বেদনা নিয়েই গত রাতে গত উইম্বলডনের ফাইনালিস্ট ক্যারোলিনা প্লিসকোভার বিপক্ষে কোর্টে নেমেছিলেন বোল্টার। শোককে শক্তিতে পরিণত করার অনন্য উদাহরণই রচিত হলো তাতে। প্রথম সেট হারার পরও পরের দুই সেট জিতে নিয়ে প্লিসকোভাকে উইম্বলডন থেকে বিদায় করে দিয়েছেন বোল্টার। ৩-৬, ৭-৬, ৬-৪ গেমে ম্যাচ জিতে ব্রিটেনের অবাছাই এই খেলোয়াড় উঠে গিয়েছেন উইম্বলডনের তৃতীয় রাউন্ডে।

আরও পড়ুন

ম্যাচ শেষে ধরা গলায় বলা বোল্টারের কথাগুলো যে কাউকে নাড়িয়ে দেবে নিশ্চিত, ‘হয়তো আমি একটু আবেগিই হয়ে যাব এখন। আমার নানি দুই দিন আগে মারা গেছেন। আমি এই জয়টা তাঁকে উৎসর্গ করছি। এই জয়টা আমার কাছে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো ব্যাপার।’ নানি-হারা বোল্টার আপাতত নিজ দেশের দর্শকদেরই শক্তি মানছেন, ‘সামনের ম্যাচগুলোতেও যদি আপনাদের সমর্থন পাই, হয়তো আমি অনেক দূর যেতে পারব।’

বোল্টারের নানি জিল গার্টশোর মারা গিয়েছিলেন আগেই, প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ খেলার জন্য বোল্টার কোর্টে নামার আগে। কিন্তু প্রিয় নানির মৃত্যুসংবাদ বোল্টারকে বিহ্বল করে তুলতে পারে এই ভয়ে খবরটা জানানো হয়নি ২৫ বছর বয়সী এই তারকাকে।

আরও পড়ুন

তবে নানির অবস্থা যে বিশেষ ভালো ছিল না, সেটা জানতেন লেস্টারশায়ারের এই তরুণী, ‘প্রথম রাউন্ডের ম্যাচের আগের রাতে আমার নানার সঙ্গে কথা হয়েছিল। তিনি আমাকে তখন কিছুই বলেননি। যদিও ওনার কথা শুনে আমি বুঝতে পেরেছিলাম, নানির অবস্থা বিশেষ ভালো নয়। প্রথম রাউন্ডের ম্যাচের পর আমার মা আমাকে একপাশে ডেকে নিয়ে গিয়ে খবরটা জানান।’

ক্যারোলিনা প্লিসকোভার বিপক্ষে দ্বিতীয় রাউন্ডে ম্যাচে গ্যালারিতে বোল্টারের ৫৭ বছর বয়সী মা সু ও ৮৬ বছর বয়সী নানা ব্রায়ান দুজনই উপস্থিত ছিলেন, প্রত্যক্ষ করেন কেটি বোল্টারের ইতিহাস, ‘আমি ভাগ্যবান আমার নানা এই জয়টা দেখার জন্য সুদূর লেস্টার থেকে এসেছেন, এতকিছুর মধ্যেও। গত কয়েকটা দিন আমার অনেক বাজে কেটেছে। আমি চেষ্টা করছি আমার মনোযোগ টেনিসে ধরে রাখার জন্য। আমার নানির প্রিয় টুর্নামেন্ট ছিল উইম্বলডন। তিনি একটা ম্যাচও মিস করতেন না, প্রতিটি ম্যাচ টিভিতে দেখতেন বসে বসে। নানির সঙ্গে আমি কোর্টে অনেক সময় কাটিয়েছি। মনে রাখার মতো অনেক মুহূর্তই পেয়েছি নানির কল্যাণে। আমার টেনিস-যাত্রার একদম শুরু থেকে তিনি ছিলেন।’

ম্যাচ শেষে বোল্টার, তাঁর মা ও নানার কল্যাণে কোর্টে আবেগঘন এক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। যা দেখে আবেগী হয়ে পড়েছিলেন খেলা দেখতে আসা দর্শকেরাও। বোল্টারের সঙ্গী অ্যালেক্স দি মিনোরও টেনিস তারকা, অস্ট্রেলিয়ার এই খেলোয়াড় গতকাল উইম্বলডনে হারিয়েছেন লন্ডনের জেইক ড্রেপারকে।

আরও পড়ুন