করোনার থাবায় একাদশ সাজানোই কঠিন হয়ে পড়েছিল দিনামো কিয়েভের। মূল দলের মাত্র ১৩ জন খেলোয়াড় নিয়ে বার্সেলোনায় এসেছিল ইউক্রেনিয়ান দলটি। সেই দলটিকে হারাতেই কী কষ্টই না করতে হলো লিওনেল মেসির বার্সেলোনাকে। কাল রাতে ন্যু ক্যাম্পে দিনামোকে ২-১ গোলে হারিয়েছে বার্সা। পেনাল্টি থেকে একটি গোল করেছে মেসি।
তবে বার্সার জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেনের। এ মৌসুমে কালই প্রথম মাঠে নেমেছিলেন লম্বা সময় হাঁটুর চোটে ভোগা টের স্টেগেন। আর নেমেই দলের ত্রাতা হতে হয়েছে জার্মান গোলরক্ষককে। বেশ কয়েকটা গোল বাঁচিয়েছেন বার্সার এক নম্বর গোলরক্ষক।
৫ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে বার্সাকে এগিয়ে দেন মেসি। ৬৫ মিনিটে ব্যবধানটা দ্বিগুণ করেন জেরার্ড পিকে। বিকল্প হিসেবে যুব দলের ছয়জনকে নিয়ে বার্সেলোনায় আসা দিনামো ৭৫ মিনিটে ভিক্তর সিগানকোভের গোল ব্যবধান কমায়। টানা তৃতীয় জয়ে ‘জি’ গ্রুপে শীর্ষেই আছে বার্সেলোনা।
কষ্টে-সৃষ্টে পাওয়া জয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে শতভাগ সাফল্য ধরে রাখলেও খুব একটা স্বস্তিতে নেই বার্সা। লা লিগায় যে জিততেই ভুলে গেছে দলটি। টানা চার ম্যাচ জয়হীন দলটি লিগে আছে ১২তম স্থানে। সর্বশেষ গতি শনিবার আলাভেসের সঙ্গে ড্র করা দলটি চির প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে পিছিয়ে আছে ৮ পয়েন্টে।
আমরা জিতেছি তাই আমি খুশি। তবে আজ যা খেলেছি এর চেয়ে ভালো খেলতেই হবে।
কাল বার্সার দ্বিতীয় গোলটি করা পিকে অবশ্য আশাবাদী তাঁর দল শিগগিরই বাজে অবস্থা কাটিয়ে উঠবে, ‘চ্যাম্পিয়নস লিগে আমরা ভালোই আছি। তবে লিগে আমাদের ভাগ্য বদলাতে হবে। আমি নিশ্চিত আমরা সেটি পারব। দলের আবহ আগের চেয়ে ভালো। নতুন ও তরুণ খেলোয়াড়েরা দল ও খেলায় বৈচিত্র্য নিয়ে এসেছে।’
গতকালের এই জয়েও কি স্বস্তি নিয়ে ফিরতে পেরেছেন বার্সা কোচ রোনাল্ড কোমান? ম্যাচ জেতার পর যে কোনো ধরনের উদ্যাপন করেননি তাঁর খেলোয়াড়েরা। আর পুরো ম্যাচেই দলের খেলায় হতাশ কোমানের চেহারাটা ছিল দেখার মতো। ম্যাচ শেষে বার্সা কোচ বললেন খেলায় উন্নতি না আনতে পারলে বিপদ, ‘আমরা জিতেছি তাই আমি খুশি। তবে আজ যা খেলেছি এর চেয়ে ভালো খেলতেই হবে। আমাদের উন্নতি করতে হবে। বিশেষ করে যখন আমাদের পায়ে বল থাকে না সে সময়ে খেলা উন্নতি করতে হবে।’
মেসিকে নিয়েও অবশ্য ভাবতে হবে বার্সেলোনাকে। এ মৌসুমে যে পেনাল্টি ছাড়া গোলই পাচ্ছেন না আর্জেন্টাইন মহাতারকা। লিগে ছয় ম্যাচে মাত্র একটি গোল মেসির, ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে সেই গোলটিও এসেছে পেনাল্টি থেকে। ১৬ বছরের বার্সা ক্যারিয়ারে ৪৪৫ গোল করা মেসির গোলখরা চলছে বলাই যায়।
মেসিকে কাল ভুগিয়েছেন দিনামোর ১৮ বছর বয়সী গোলরক্ষক রুসলান নেসচেরেতও। দলের মূল দুই গোলরক্ষকের করোনা হওয়ায় কাল অভিষেক হয়েছে নেসচেরেতের। আর প্রথমবার মূল দলের হয়ে খেলতে নেমে কী দুর্দান্ত পারফরম্যান্স তাঁর। মেসির একটি ফ্রিকিক কী দারুণভাবেই না রুখে দিলেন নেসচেরেত।