ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের কর্মকর্তারা ফুটবলারদের স্বাস্থ্য নয়, অর্থকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন। এ কারণে যে করেই হোক জুনের মধ্যে খেলা শুরু করার চেষ্টা করছে তারা। অন্তত গ্যারি নেভিলের ধারণা তাই। স্কাই স্পোর্টসের সঙ্গে কথোপকথনে করোনা সংক্রমণের মাঝে ফুটবল ফেরানোর এ চেষ্টার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না নেভিল।
গ্যারি নেভিল সরাসরিই বলেছেন, ফুটবলারদের এভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। স্কাই স্পোর্টসের ‘দ্য ফুটবল শো’তে বলেছেন, ‘ফিফার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সরাসরি বলেছেন সেপ্টেম্বরের আগে কোনো ফুটবল খেলা উচিত হবে না। আমার ধারণা, এখানে আর্থিক ব্যাপার জড়িত না থাকলে আরও বহুদিন কোনো ফুটবল খেলার কথা উঠত না।’
ফুটবল থেকে আয়ের জন্য কর্মকর্তা এই ভয়ংকর ঝুঁকি নিচ্ছে বলে ধারণা করছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কিংবদন্তি, ‘মানুষ এখন ঝুঁকির পরিমাণ হিসাব করতে নেমেছে। কতজন ফুটবলার খেলতে গিয়ে মারা যাওয়ার পর প্রিমিয়ার লিগের কাছে ব্যাপারটা অরুচিকর ঠেকবে? একজন? একজন খেলোয়াড়? নাকি কোনো স্টাফকে আইসিইউতে নেওয়ার পর? কোন পর্যায়ের ঝুঁকি আমরা নিতে চাইব? এ আলোচনা পুরোপুরি আর্থিক।’
এর মাঝেই করোনার কাছে হার মেনে নিয়েছে ডাচ, বেলজিয়ান ও ফ্রেঞ্চ লিগ। এই তিনটি দেশেই এ মৌসুমের জন্য শেষ করে দেওয়া হয়েছে তাদের শীর্ষ পর্যায়ের লিগ। কিন্তু ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ এখনো ফেরার চিন্ত করছে। ১৮ মের মধ্যে সবাই অনুশীলনেও নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নেভিলের মনে কোনো সন্দেহ নেই আর্থিক বিষয়ই গুরুত্ব পাচ্ছে ক্লাবগুলোর কাছে, ‘অনেকেই আছে যারা এটার ঝুঁকির পরিমাপ করবে। খেলোয়াড়েরা চাইবে মাঠে নামতে। নিচু স্তরের ফুটবল লিগের খেলোয়াড়েরা খেলতে চাইবে। এক হাজার ৪০০ খেলোয়াড় চাকরি হারানোর পথে।’
ক্লাবগুলো কেন এই ঝুঁকি নিচ্ছেন সেটা বুঝতে পারছেন নেভিল, ‘এ মৌসুমের জন্য অনেক বিনিয়োগ করেছে ক্লাবগুলো। লিডসের কথাই চিন্তা করুন, কত বড় সুযোগ তাদের সামনে (প্রিমিয়ার লিগে ওঠার সুযোগ)। অনেক বড় পুরস্কার অপেক্ষা করছে। ওদিকে আর্থিকভাবে অনেক বড় ক্ষতি (খেলা না হলে)। এতে মানুষের অনেক বড় ঝুঁকি নিতে ইচ্ছা হয়, কারণ তারা স্বাভাবিকভাবে চিন্তা করতে পারে না।’
এভাবে তাড়াহুড়া করে মাঠে ফেরার নেতিবাচক দিকটা সবাইকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছেন নেভিল, ‘কিছু খেলোয়াড় থাকবে যারা করোনাভাইরাসের কারণে অন্যদের চেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকবে। এটা মাথায় রাখতে হবে। যদি স্বাস্থ্যের কথাই ভাবা হতো, তাহলে এখন একটাই সিদ্ধান্ত (খেলা না হওয়া)। কতজন খেলোয়াড়ের হাঁপানি আছে? কতজনের ডায়াবেটিস আছে? তারা কি এসব ভেবেছে, স্বেচ্ছায় এভাবে মানুষকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিতে চায়? তারা যদি এটাই চায়, তবে আমরাও আসব এবং ধারাভাষ্য দেব। আশা করি এমন কিছু দেখব না যে কোনো এক খেলোয়াড় বা স্টাফ মাঠেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।’