এমবাপ্পেকে উপেক্ষা করে রিয়াল মাদ্রিদে চুয়ামেনি
দলবদলের বাজারে ইদানীং কারও আগাম খবরকে বিশ্বাস করা কঠিন। এক বছর ধরে বিশ্বস্ত সব সূত্র বলেছে, রিয়াল মাদ্রিদে যাচ্ছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। কিন্তু শেষ মুহূর্তের নাটকে পিএসজিতেই আরও তিন বছর থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এমবাপ্পে। তাই তাঁর জাতীয় দলের সতীর্থ অরেলিয়াঁ চুয়ামেনির সঙ্গেও যখন রিয়াল মাদ্রিদের নাম জড়াল, সেটা পুরোপুরি বিশ্বাস করছিলেন না কেউ। কারণ, এই দলবদলেও জড়িয়ে গিয়েছিল পিএসজি ও এমবাপ্পে।
রিয়াল মাদ্রিদ চুয়ামেনির প্রতি আগ্রহী, এ খবরের পরই জানা গেছে পিএসজিও মোনাকোর এই মিডফিল্ডারকে পেতে চায়। কিন্তু এর মধ্যেও বিশ্বস্ত কিছু সূত্র বলছিল, অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে নেশনস লিগের খেলা শেষেই আনুষ্ঠানিকভাবে রিয়ালের হয়ে যাবেন চুয়ামেনি। গতকাল অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছে ফ্রান্স। আজই আনুষ্ঠানিকভাবে রিয়াল জানিয়েছে, আগামী ছয় বছর চুয়ামেনি বার্নাব্যুতেই খেলবেন।
আজ সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিক এক বিবৃতি দিয়েছে রিয়াল। সেখানে জানিয়েছে, ‘রিয়াল মাদ্রিদ ও মোনাকো অরেলিয়াঁ চুয়ামেনির দলবদলের ব্যাপারে একমত হয়েছে। এই ফুটবলার আগামী ছয় বছর এই ক্লাবের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকবেন। মেডিকেল পরীক্ষা শেষে ১৪ জুন, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় রিয়াল মাদ্রিদ সিটিতে অরেলিয়াঁ চুয়ামেনিকে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে। এরপরই সংবাদমাধ্যমের সামনে আসবেন অরেলিয়াঁ চুয়ামেনি।’
এখনো দলবদলের অঙ্কটা জানা যায়নি। তবে বাজারের গুঞ্জন যদি সত্যি হয়ে থাকে, তবে সেটা শর্তসাপেক্ষে ১০ কোটি ইউরো হতে যাচ্ছে। মৌসুম শেষে শোনা গিয়েছিল, ২২ বছর বয়সী চুয়ামেনির জন্য ৫ কোটি ইউরো খরচ হতে পারে। এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের জন্য রিয়াল ও লিভারপুল আগ্রহী ছিল। ইয়ুর্গেন ক্লপ নিজে এই মিডফিল্ডারকে ফোন করেছিলেন। ওদিকে রিয়াল মাদ্রিদ এমবাপ্পে কিনতে ব্যর্থ হওয়ার পর মরিয়া হয়ে ওঠে। আগ্রহী ক্লাবের হাতে খরচ করার মতো প্রচুর অর্থ আছে জেনে দর বাড়িয়ে নেয় মোনাকো।
এমবাপ্পেও একপর্যায়ে দলবদলের এই খেলায় যোগ দেন। পিএসজিতে নিজের ইচ্ছেমতো খেলোয়াড় টানার স্বাধীনতা পেয়েছেন বলে গুঞ্জন। আর সে ক্ষেত্রে মধ্যমাঠে সহযোগিতার জন্য চুয়ামেনিকেই পছন্দ হয়েছিল এমবাপ্পে। পিএসজিও এই দৌড়ে যোগ দেয়। রিয়ালকে তাই নিজেদের দর বাড়াতে হয়েছে। চুয়ামেনিকে পেতে সরাসরি ১০ কোটি ইউরো দিতে রাজি ছিল পিএসজি। ওদিকে রিয়ালের প্রস্তাব ছিল প্রথমে ৮ কোটি, পরে শর্ত সাপেক্ষে আরও ২ কোটি ইউরো। চুয়ামেনি নিজে শুধু রিয়ালের ব্যাপারে আগ্রহী হওয়াতেই পিএসজি এ ক্ষেত্রে আর পেরে ওঠেনি।
ধারণা করা হচ্ছে, রিয়াল মাদ্রিদে সপ্তাহে দেড় লাখ ইউরো বেতন পাবেন চুয়ামেনি। রিয়ালের মাঝমাঠে সাত বছর ধরে দাপট দেখাচ্ছেন লুকা মদরিচ, টনি ক্রুস ও কাসেমিরো। কিন্তু তাঁদের সবার বয়স এখন ত্রিশের বেশি। মদরিচ তো ৩৬ ছুঁয়েছেন। গত তিন বছরে ফেদে ভালভার্দে ও এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গাকে টেনে নিয়েছে রিয়াল। এ দুজন মাঠের বিভিন্ন পজিশনে খেলতে পারলেও কাসেমিরোর মতো ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের অভাব পূরণ করতে পারছেন না। সে কারণেই একজন পরিপূর্ণ রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডার খুঁজছিল রিয়াল।
মোনাকোর হয়ে এ কাজটাই করেছেন চুয়ামেনি। গত মৌসুমে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে বল কেড়ে নেওয়ায় তাঁর ধারেকাছে নেই অন্য কোনো মিডফিল্ডার। ২০২১ সালে ফ্রান্স দলে অভিষিক্ত এই মিডফিল্ডার জাতীয় দলে ১১টি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন।