এমবাপ্পে-রামোসরাও লুডু খেলেন
জীবনে লুডু খেলেনি, এ কথা কোনো বাঙালি বলতে পারবেন? একবার হলেও কাগজের ওই বোর্ডে ছয়ের আশায় ছক্কা ছুড়ে মারেননি কে? ইদানীং অবশ্য কষ্ট করে গুটি নাড়াচাড়া বা ছক্কা ছুড়ে মারতেও হয় না। এখন মুঠোফোন গেমস হিসেবেই খেলা যায় লুডু। বাংলাদেশ ও ভারতে রীতিমতো দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে এই খেলা। এ গেমস খেলতে খেলতে ভিনদেশি নারীর বাংলাদেশি বধূ হওয়ার ঘটনাও শোনা গেছে। লুডু গেমস খেলতে খেলতে একটি চলচ্চিত্রে কাহিনি বলতে শোনা গেছে বলিউডে।
লুডু জ্বরে যে শুধু উপমহাদেশ আক্রান্ত, তা নয়। গত শনিবার রাতে লিগ আঁ শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছে পিএসজি। ঘরের মাঠে লাঁসের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেই নিজেদের দশম লিগ শিরোপা নিশ্চিত করেছে প্যারিসের দলটি। চার ম্যাচ হাতে রেখেই এখন পরের মৌসুম নিয়ে ভাবতে শুরু করতে পারছে প্যারিসের হর্তাকর্তারা। তো, এমন এক ম্যাচের প্রস্তুতি কীভাবে নিয়েছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে-সের্হিও রামোসরা? লুডু খেলে।
স্বীকার করে নেওয়া যাক, রামোস-এমবাপ্পে-আশরাফ হাকিমিরা যেটা খেলছিলেন তার পোশাকি নাম ‘পারচিসি’। যা আসলে ভারতীয় পাচিসির আরেকটি সংস্করণ। যদিও মুঠোফোন অ্যাপে, পারচিসি, পাচিসি বা লুডোর মধ্যে পার্থক্য তো নেই। বোর্ডটা সেই চিরায়ত, নিয়মটা বাল্যকালের শেখা। নিজের দান আসলে ছক্কা ফেল। যত সংখ্যা ওঠে, নিজের গুটিকে সেই কয়েকটি ঘর এগিয়ে নাও। বুদ্ধি আর ভাগ্যকে পুঁজি করে এগিয়ে যাও।
এ খেলায় যে বিশ্ব ফুটবলের মহাতারকারাও মেতেছেন তা জানা গেল পিএসজির সুবাদে। লিগ জয়ের আনন্দে একের পর এক ছবি ও ভিডিও পোস্ট করে যাচ্ছে প্যারিসের ক্লাবটি। এর মধ্যে একটি ভিডিওতে যে ম্যাচ দিয়ে এই শিরোপা এল, তার একটি ভিডিওচিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ম্যাচের দিন সকাল থেকে ম্যাচের শেষে আনন্দ উৎসব—সব স্থান পেয়েছে সেখানে। টিম হোটেলে ঘুম থেকে উঠে খেলোয়াড়েরা কীভাবে নাশতা করছেন, কীভাবে সময় কাটাচ্ছেন, কিসের আড্ডা দিচ্ছেন—সব দেখানো হয়েছে।
এর মধ্যেই একটি দৃশ্য দেখে রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকদের মন খারাপ হয়ে যেতে বাধ্য। কিলিয়ান এমবাপ্পেকে বহুদিন ধরেই চাইছে রিয়াল। তাঁকে এখনো পায়নি দলটি। ওদিকে রিয়ালের অন্যতম সফল অধিনায়ক রামোস চলে গেছেন পিএসজিতে। রামোসের সঙ্গেই পিএসজিতে যোগ দিয়েছেন হাকিমি। এই রাইট ব্যাককে নিজেদের ভবিষ্যৎ ভাবতেন সমর্থকেরা। কিন্তু এমবাপ্পের জন্য তহবিল সংগ্রহের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার বলি হয়ে হাকিমি চলে গিয়েছিলেন ইন্টার মিলানে। ইন্টার ঘুরে এখন পিএসজিতে হাকিমি।
পিএসজিতে হাকিমির প্রিয় বন্ধু হয়ে উঠেছেন এমবাপ্পে। দুজনই একই বয়সের হওয়ায় মাঠে ও মাঠের বাইরে দারুণ সখ্য। এ দুজনের সঙ্গে রামোসেরও দারুণ জমেছে। সেদিন ম্যাচের আগে তিনজন তাই একই সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। রামোসের আমন্ত্রণ পেয়ে তিনজনের সময় কাটানোর উপায় সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া গেছে। তিনজনে মিলে খেলছেন পারচিসি। সেই পারচিসি বা লুডোতে কে জিতেছে সেটা অবশ্য ভিডিওতে জানায়নি পিএসজি।