শিরোপার লড়াই তো নয়, যেন থ্রিলার টিভি সিরিজ। প্রতি পর্বে নতুন টুইস্ট। এই মৌসুমে লা লিগা এতই রোমাঞ্চকর! সেই রোমাঞ্চে আজ নতুন মাত্রা যোগ করেছে শিরোপা প্রত্যাশী বার্সেলোনা। লেভান্তের বিপক্ষে ওদেরই মাঠে দুইবার এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত রোনাল্ড কোমানের দল মাঠ ছেড়েছে ৩-৩ ড্র করে।
এ ড্রয়ের পর আপাতত ৩৬ ম্যাচ শেষে ৭৬ পয়েন্ট বার্সার। ৩৫ ম্যাচে ৭৭ পয়েন্ট নিয়ে যথারীতি শীর্ষে আতলেতিকো মাদ্রিদ। আজ রাতে রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে জিতলেই ব্যবধান আরও বাড়াবে ডিয়েগো সিমিওনের দল। শিরোপার লড়াইয়ে আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ (৩৫ ম্যাচে ৭৫ পয়েন্ট) আগামীকাল রাতে খেলবে গ্রানাদার বিপক্ষে।
লা লিগায় লেভান্তের সবচেয়ে বেশি গোল খাওয়ার রেকর্ড বার্সেলোনার বিপক্ষে, ৮৬টি। লিগে লেভান্তে সবচেয়ে বেশিবার হেরেছেও বার্সা আর রিয়াল মাদ্রিদের কাছে (২২ বার করে)। তার উপর বার্সেলোনার বিপক্ষে আজ মাঠে নামার আগে সর্বশেষ ৫ ম্যাচে জয়হীন (১ ড্র, ৪ হার) পাকো লোপেজের দল। এমন একটা দলের বিপক্ষে জিততে না পারাটা তাই লিওনেল মেসি-আঁতোয়ান গ্রিজমানদের জন্য বড় ব্যর্থতাই।
প্রথমার্ধটা দাপটের সঙ্গেই খেলেছেন কোমানের শিষ্যরা। বল পায়ে পেতেই ঘাম ছুটে গেছে লেভান্তের, আবার যখন পেয়েছে যুৎসই আক্রমন গড়ে তুলতে পারেনি চূড়ান্ত পাসের অভাবে। ওদিকে মেসি-পেদ্রি-দেম্বেলেরা ভালোই ব্যস্ত রেখেছেন লেভান্তের রক্ষনভাগকে।
বার্সা প্রথম গোলটা পায় ম্যাচের ২৬ মিনিটে। বাঁ দিক থেকে জর্দি আলবার ক্রস লেভান্তের রাইট ব্যাক হোর্হে মিরামনের গায়ে লেগে দিক বদলে চলে যায় বক্সে প্রায় ফাঁকা থাকা লিওলেন মেসির কাছে। ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাওয়ার আগে মেসির বাঁ পায়ের ভলি চলে যায় লেভান্তের জালে।
এ মৌসুমে লা লিগায় এটি মেসির ২৯তম গোল। সব টুর্নামেন্ট মিলিয়ে ৩৭তম।
বার্সার পরের গোলটা দারুণ খেলতে থাকা ওসমান দেম্বেলে-পেদ্রির যুগলবন্দীতে। ফরাসি ফরোয়ার্ডের ক্রস গোলমুখের একেবারে সামনে পেয়ে যান পেদ্রি। লেভান্তের গোলরক্ষক বেরিয়ে এসেছিলেন। পেদ্রি বল পাঠিয়েছেন ফাঁকা জালে।
প্রথমার্ধে এমন দাপুটে খেলা বার্সা দ্বিতীয়ার্ধে হঠাৎই ম্যাচের নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলে। ৫৭ থেকে ৫৯ এই দুই মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে ম্যাচের রং বদলে দেয় লেভান্তে। গঞ্জালো মেলেরো ব্যবধান কমানোর পর সমতা ফেরান লুইস মোরালেস।
অবশ্য জবাব দিতে দেরি করেনি বার্সেলোনাও। ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় দেম্বেলে আবার নিজের দলকে এগিয়ে দেন ৬১ মিনিটে বক্সে ফাঁকা জায়গায় বল পেয়ে। কিন্তু নাটক যে তখনো শেষ হয়নি।
৭৫ মিনিটে স্ট্রাইকার রজারকে তুলে নিয়ে তাঁর জায়গায় সের্হিও লিওনকে বদলি নামান লেভান্তে কোচ লোপেজ। কোচের আস্থার প্রতিদান দিতে তিনি ১০ মিনিটও সময় নিলেন না। ৮৩ মিনিটেই লেফট ব্যাক তোনোর পাস থেকে বার্সাকে হতাশ করা লেভান্তের তৃতীয় গোলটা করেন লিওন।
ম্যাচটা জিতে অন্তত একদিনের জন্য হলেও লা লিগার শীর্ষে যাওয়ার সুযোগ ছিল বার্সেলোনার। কিন্তু ড্র করে পয়েন্ট হারিয়ে শিরোপার লড়াইয়ে একটু পিছিয়েই পড়ল কোমানের দল।