একাই চার গোলে অভিষেক রাঙালেন হলার
প্রশাসনিক ভুলের কারণে গত বছর ইউরোপা লিগে আয়াক্সের স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েছিলেন সেবাস্তিয়ান হলার। ক্লাবটির কর্মকর্তারা তাঁকে এই টুর্নামেন্টে নিবন্ধিত করতেই ভুলে গিয়েছিলেন!
ওয়েস্টহ্যাম ইউনাইটেডও আইভরি কোস্ট ফরোয়ার্ডের ওপর আস্থা রাখতে পারেনি। বেচে দিয়েছিল ডাচ ক্লাবটির কাছে। কাল রাতে হলার দুটি ক্লাবকেই নিজের যোগ্যতা বোঝালেন চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে অন্যতম সেরা অভিষেকের নজির গড়ে।
পর্তুগালে স্পোর্তিং লিসবনকে ৫-১ গোলে হারিয়েছে আয়াক্স। ম্যাচের দুই অর্ধে দুটি করে একাই মোট চার গোল করেছেন হলার। চ্যাম্পিয়নস লিগে এর আগে এমন চোখ ধাঁধানো অভিষেকের দেখা পেয়েছেন শুধু একজনই—ডাচ কিংবদন্তি মার্কো ফন বাস্তেন।
১৯৯২ সালে আইএফকে গোটেবর্গের বিপক্ষে এই সংস্করণে (চ্যাম্পিয়নস লিগ) অভিষেকে এসি মিলানের হয়ে একাই চার গোল করেছিলেন বাস্তেন। তবে ১৯৯২ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগ চালুর আগে এর পূর্ববর্তী সংস্করণ ইউরোপিয়ান কাপেও খেলেছেন ডাচ কিংবদন্তি।
চ্যাম্পিয়নস লিগে ১৬তম খেলোয়াড় হিসেবে কোনো ম্যাচে ন্যূনতম চার গোল করলেন হলার। তবে অভিষেক ম্যাচ ছিল বলেই বাস্তেন এবং ২৭ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড আলাদা জায়গা করে নিলেন পরিসংখ্যানে। চ্যাম্পিয়নস লিগে আফ্রিকান খেলোয়াড়দের কীর্তিমালার মধ্যেও হলার একটি জায়গায় বাকিদের চেয়ে আলাদা—এই মহাদেশের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে এই টুর্নামেন্টে ন্যূনতম চার গোল পেলেন হলার।
হলারের অভিষেক কতটা রঙিন তা বুঝিয়ে দেবে আরও কিছু পরিসংখ্যান। আয়াক্সের একাদশের হয়ে মাঠে নেমে এই টুর্নামেন্টে নিজের প্রথম ৯ মিনিটের মধ্যে জোড়া গোল পেয়ে যান হলার। এর মধ্যে প্রথম গোলটি পেয়েছেন ৬৮ সেকেন্ডে!
চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে নিজের প্রথম ৯ মিনিটের মধ্যেই জোড়া গোলের দেখা পান তিনি। আয়াক্সও তাঁর সৌজন্যে বহুদিন পর ইউরোপ-সেরার ক্লাব প্রতিযোগিতায় নিজেদের কোনো খেলোয়াড়ের হ্যাটট্রিক দেখল। হলারের আগে চ্যাম্পিয়নস লিগে আয়াক্সের হয়ে সর্বশেষ হ্যাটট্রিক করেছিলেন ফিনল্যান্ডের সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে বিবেচিত জারি লিটমানেন (১৯৯৫)।
এমন দুর্দান্ত অভিষেকের পর স্বাভাবিকভাবেই আনন্দে ভেসে গেছেন হলার, ‘এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না। মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখছি। এর চেয়ে বেশি কিছু চাওয়ার ছিল না। নিজেকে খুব সুখী লাগছে।’