উয়েফার সেরা তিনে নয়্যার-লেভা-ডি ব্রুইনা
দশক শেষ হলো, সেই সঙ্গে যেন শেষ হলো লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর রাজত্বও। উয়েফার বর্ষসেরা ফুটবলারের জন্য মনোনীত সেরা তিনে এর আগের নয় বছর (২০১০-১১ থেকে ২০১৮-১৯) মেসি-রোনালদোর একজন অন্তত ছিলেন, কখনো কখনো ছিলেন দুজনই। সেই ধারাটা ভেঙে গেল এবার। আজ ঘোষিত উয়েফার বর্ষসেরা (২০১৯-২০) খেলোয়াড়ের জন্য মনোনয়ন পেয়েছেন ম্যানুয়েল নয়্যার, কেভিন ডি ব্রুইনা ও রবার্ট লেভানডফস্কি। সেরা দশের মধ্যে মেসি আছেন ৪ নম্বরে, রোনালদো দশে। মেসি-রোনালদোর এই সেরা তিনে না থাকার মধ্যে দিয়ে একটা যুগেরই শেষ হলো যেন! আগামী ১ অক্টোবর সুইজারল্যান্ডের নিয়নে ঘোষণা করা হবে বিজয়ীর নাম।
উয়েফার বর্ষসেরা (২০১৯-২০) খেলোয়াড়ের জন্য মনোনয়ন পেয়েছেন ম্যানুয়েল নয়্যার, কেভিন ডি ব্রুইনা ও রবার্ট লেভানডফস্কি।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি তিনবার হয়েছেন ইউরোপের সেরা। পর্তুগিজ উইঙ্গার সেরা তিনে মনোনয়ন পেয়েছেন সব মিলিয়ে ১০ বার। লিওনেল মেসি জিতেছেন দুইবার, সেরা তিনে ছিলেন ছয়বার। সেরা তিনে মেসি-রোনালদো দুজনের কেউই ছিলেন না, সর্বশেষ এমন দেখা গেছে ২০০৯-১০ মৌসুমে। সেবার ইন্টার মিলান ফরোয়ার্ড ডিয়েগো মিলিতো জিতেছিলেন বর্ষসেরার ট্রফি।
গত দুই বছরও মেসি-রোনালদোর কেউই এটা জিতেননি। গতবার সেরা হয়েছিলেন লিভারপুলের ভার্জিল ফন ডাইক, এর আগের বছর রিয়াল মাদ্রিদের লুকা মদরিচ।
এবার সেরা তিনে মেসি-রোনালদোর নাম থাকাটা অবশ্য অবাক হওয়ার মতো কোনো ঘটনা নয়। রোনালদোর জুভেন্টাস তো চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলো থেকেই ছিটকে গেছে। মেসির বার্সেলোনার ওপর দিয়ে গিয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ-ঝড়। কোয়ার্টার ফাইনালে ৮-২ গোলে হেরে বার্সেলোনা তো পুরো দল পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
স্বাভাবিকভাবে এবারের সেরার তালিকায় ইউরোপের চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখের দাপট। নয়্যার ও লেভানডফস্কি দুজনই বায়ার্নের। গোলরক্ষক নয়্যার তো পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ খেলেছেন, ফাইনাল ছাড়াও চ্যাম্পিয়নস লিগের আরও পাঁচটি ম্যাচে কোনো গোল হজম করেননি জার্মান এই গোলরক্ষক। বায়ার্নের ট্রেবল জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন লেভানডফস্কিও। গোল মুখে ভয়ংকর ছিলেন পোল্যান্ডের এই স্ট্রাইকার। পুরো মৌসুমে ৪৭ ম্যাচ খেলে গোল করেছেন ৫৫টি। চ্যাম্পিয়নস লিগেই ১৫ গোল করে হয়েছেন সর্বোচ্চ গোলদাতা।
তাঁদের প্রতিপক্ষ ম্যানচেস্টার সিটির মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনা। সিটি কোয়ার্টার ফাইনালে অলিম্পিক লিওঁর কাছে হারার আগে ডি ব্রুইনার পারফরম্যান্সও ছিল দুর্দান্ত। বেলজিয়ান এই মিডফিল্ডার দারুণ খেলেছেন প্রিমিয়ার লিগেও, সেখানে হয়েছেন বর্ষসেরা । ১৩ গোলের সঙ্গে গোল করিয়েছেন ২০টি।
সেরা কোচের লড়াইয়েও স্বাভাবিকভাবে আছেন বায়ার্ন মিউনিখের হ্যান্সি ফ্লিক। তাঁর প্রতিপক্ষ লিভারপুলের কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ ও লাইপজিগের জুলিয়ান নাগেলসম্যান
আগামী ১ অক্টোবর সুইজারল্যান্ডের নিয়নে ঘোষণা করা হবে উয়েফার বর্ষসেরা হিসেবে জয়ীদের নাম।
আরও মনোনীত যারা
বর্ষসেরা নারী ফুটবলার: লুসি বোন্জ, পার্নিল হারডার ও ওয়েনডি রিনার্দ
বর্ষসেরা কোচ: হ্যান্সি ফ্লিক, ইয়ুর্গেন ক্লপ ও ইউলিয়ান নাগেলসম্যান
বর্ষসেরা গোলরক্ষক: কেইলর নাভাস, ম্যানুয়েল নয়্যার ও ইয়ান ওব্লাক
বর্ষসেরা ডিফেন্ডার: জর্দি আলবা, আলফোনসো ডেভিস ও ইউশোয়া কিমিখ
বর্ষসেরা মিডফিল্ডার: ডি ব্রুইনা, টমাস মুলার ও থিয়াগো আলকানতারা
বর্ষসেরা ফরোয়ার্ড: লেভানডফস্কি, কিলিয়ান এমবাপ্পে ও নেইমার