ইউরোপের সেরা ভার্জিল ফন ডাইক
গত এক বছরে ইউরোপের সেরা খেলোয়াড় কে ছিলেন, সেটা জানার জন্য হাজির হয়েছিলেন সবাই। ফ্রান্সের মোনাকোতে বাংলাদেশ সময় আজ রাত ১০টায় ইউরোপীয় ফুটবলের সবচেয়ে বড় সংস্থা উয়েফা জানিয়ে দিল মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কারের বিজয়ী এবার ভার্জিল ফন ডাইক। লিওনেল মেসি, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে হারিয়ে ইউরোপে গত মৌসুমের রাজা হিসেবে অধিষ্ঠিত হলেন লিভারপুল ডিফেন্ডার। ১৩ বছর পর একজন ডিফেন্ডারের হাতে বর্ষসেরার পুরস্কার দেখল বিশ্ব।
ভার্জিল ফন ডাইক লিভারপুলকে জিতিয়েছেন চ্যাম্পিয়নস লিগ, একটুর জন্য লিগ জেতা হয়নি। কিছুদিন আগে চেলসিকে হারিয়ে উয়েফা সুপার কাপও জিতেছেন লিভারপুলের হয়ে। ওদিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশ্বকাপ না খেলতে পারা নেদারল্যান্ডসকে নেশনস লিগের ফাইনালে ওঠানোর পেছনে অধিনায়ক ফন ডাইকের ভূমিকা ছিল অনেক। টানা দ্বিতীয়বারের মতো মেসি-রোনালদোকে টপকে অন্য কারও বর্ষসেরা হওয়া এ জন্যই সম্ভব হয়েছে।
ইউরোপের বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার দেওয়ার পাশাপাশি উয়েফা গত মৌসুমের সেরা ডিফেন্ডার, গোলরক্ষক, মিডফিল্ডার ও স্ট্রাইকারের নামও জানিয়েছে। সেরা গোলরক্ষক হয়েছেন লিভারপুলকে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতানো আলিসন বেকার। নাপোলির সঙ্গে তাঁর একটি অবিশ্বাস্য সেভই লিভারপুলের স্বপ্নটা বাঁচিয়ে রেখেছিল গ্রুপ পর্বে। দলকে চ্যাম্পিয়ন করার পুরস্কার পেয়েছেন ভার্জিল ফন ডাইকও। ইউরোপের এ মৌসুমের সেরা ডিফেন্ডার লিভারপুলের ডাচ ডিফেন্ডার। সেরা মিডফিল্ডারও নেদারল্যান্ডসের, আয়াক্সের হয়ে দুর্দান্ত মৌসুম কাটিয়ে বার্সেলোনায় এসেছেন ফ্র্যাঙ্কি ডি ইয়ং। বার্সেলোনার ঘরে এসেছে সেরা স্ট্রাইকারের পুরস্কারও। গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা লিওনেল মেসিই হয়েছেন সেরা ফরোয়ার্ড। মেয়েদের ফুটবলে সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন লিঁওর ইংলিশ ফুলব্যাক লুসি ব্রোঞ্জ।
গত বছরের ৩১ জুলাই থেকে পরবর্তী এক বছরে ইউরোপে খেলা খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স বিবেচনা করে দেওয়া হয়েছে সম্মানজনক এই পুরস্কার। চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ইউরোপা লিগের মোট ৮০ জন কোচ ও ৫৫ জন সাংবাদিক ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন উয়েফাসেরাদের। তাঁরা যাঁকে প্রথম ভেবেছেন, তিনি পেয়েছেন ৫ পয়েন্ট, দ্বিতীয়জন ৩ ও শেষজন পাচ্ছেন ১ পয়েন্ট। এভাবে সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট পেয়েছেন ডাইক ।
অনেকের মতেই ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা মৌসুম কাটিয়েছেন মেসি। তাঁর খেলা দেখে সেই ১০ বছর আগের মেসির কথা মনে পড়েছে বারবার। গোটা মৌসুমে ৫১ ম্যাচ খেলে ৫০ গোল করেছেন, অনেক ম্যাচে বার্সেলোনাকে একাই বিপদের হাত থেকে উদ্ধার করেছেন। লা লিগা ও ইউরোপের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কারও বগলদাবা করেছেন। ব্যক্তিগত দিক দিয়ে মৌসুমটা উজ্জ্বল কাটলেও দলগত দিক দিয়ে তেমন সফলতা পাননি এ আর্জেন্টাইন তারকা। সেটি ক্লাবের ক্ষেত্রে হোক বা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে। মেসির অতিমানবীয় পারফরম্যান্সের সুফল শুধু লিগেই নিতে পেরেছে বার্সা, চ্যাম্পিয়নস লিগ আর কোপা দেল রে জেতা হয়নি। আর্জেন্টিনাও কোপা আমেরিকার সেমিফাইনাল থেকে বাদ পড়েছে এ বছর।
দলগত শিরোপার দিক দিয়ে অবশ্য মেসির চেয়ে ভালো মৌসুম কাটিয়েছেন রোনালদো। লিগ জিতেছেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মেসিকে আবার ছাড়িয়ে গেছেন এই পর্তুগিজ তারকা। নতুন চালু হওয়া উয়েফা নেশনস লিগ জিতেছেন পর্তুগালের হয়ে। দলগত দিক দিয়ে সফল মৌসুম কাটালেও ব্যক্তিগত দিক দিয়ে কিন্তু অত দুর্দান্ত ছিলেন না রোনালদো। গোটা মৌসুমে ৪৩ ম্যাচ খেলে ২৮টা গোল করেছেন রোনালদো। গত এক দশকে এই প্রথম ত্রিশের কম গোল করেছেন পর্তুগিজ তারকা।