ইউনাইটেডকে পেনাল্টি নিয়ে খোঁচা দিলেন মরিনিও
কোচ হিসেবে এখনো কিছু জিতেননি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ওলে গুনার সুলশার। কোচ হিসেবে এখনো পাকা হয়ে ওঠেননি এই নরওয়েজিয়ান। এ কারণেই হয়তো ভুলটা করে বসেছেন, কথাবার্তা ছাড়া জোসে মরিনিওকে খোঁচা দিয়ে বসেছিলেন পরশু। অন্য কোনো কোচ হলে হয়তো ছাড় পেয়েও যেতেন। কিন্তু মরিনিও বলে কথা, এ যে খাল কেটে কুমির আনা নয় একেবারে হাঙর ডেকে আনা!
ইউরোপার বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলতে গিয়ে মেসিডোনিয়ান ক্লাবের গোলবার পাঁচ সেন্টিমিটার কম পেয়েছিলেন মরিনিও। সেটা কর্তৃপক্ষকে বলে সরিয়ে নিয়েছিলেন। সে প্রসঙ্গে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে টেনে আনার কোনো সম্ভাবনা ছিল না। পরশু ব্রাইটনের বিপক্ষে পাঁচবার গোল পোস্ট ও বার বাঁচিয়ে দিয়েছিল ইউনাইটেডকে। জয়ের আনন্দে তাই মরিনিওকে টেনে এনেছিলেন সুলশার। কাল নিজের দল ড্র করায় এমনিতেই ক্ষেপে ছিলেন, এর মধ্যে সুলশারের কথা মনে করিয়ে দিতেই পাটকেল ছুড়লেন মরিনিও।
শনিবার ব্রাইটনের বিপক্ষে শেষ বাঁশি বাজার পরও পেনাল্টি পেয়েছিল ইউনাইটেড। এর আগে পাঁচবার পোস্ট ও বার বাঁচিয়ে দেওয়াতেই ম্যাচে টিকে ছিল ইউনাইটেড। এমন ম্যাচে জয়ের পর আবেগ আটকাতে পারেননি সুলশার, আনন্দে বলে ফেলেছিলেন, আপনাকে খুশি হতে হবে এখানে গোলপোস্ট মাপার জন্য জোসে নেই!
একদিকে শেষ বাঁশি বাজার পরও পেনাল্টি থেকে জয় পেয়েছে ইউনাইটেড। ওদিকে যোগ করা সময়ের পেনাল্টির সুবাদে জেতা ম্যাচ ড্র নিয়ে ফিরতে হয়েছে টটেনহামকে। পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়েই বিতর্ক ছিল, এর পর আবার তাঁকে সুলশারের খোঁচা দেওয়ার কথাও মনে করিয়ে দিলেন সাংবাদিকেরা।। ম্যাচের আগে গোলপোস্ট এর আকার মেপেছিলেন কি না এমন প্রশ্নে কড়া জবাব দিয়েছেন মরিনিও, ‘না, কারণ আমি জানি এখানে গোল পোস্টগুলো ঠিকই আছে। আমার ধারণা ওলে গতকাল এত খুশি ছিল আর দলের জয়ে এতটাই অবাক হয়েছিল যে সে রসিকতা করার চেষ্টা করেছে।’
মরিনহোর পাটকেল গোলার রূপ নিল এরপরই। গত মৌসুম থেকেই ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির সিদ্ধান্তের সুবিধা পাচ্ছে ইউনাইটেড। বেশ কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত তাঁদের পক্ষে গিয়েছিল। প্রিমিয়ার লিগের রেকর্ড ১৪টি পেনাল্টি পেয়েছিল ইউনাইটেড। এবারও লিগের দ্বিতীয় ম্যাচেই আবার পেনাল্টির সুবাদে জয় পাওয়ায় মরিনিও খোঁচাটা দিলেন বেশ আয়োজন করে, ‘আমি বুঝি যে ওর (সুলশার) জন্য গোল পোস্টের আকারটা গুরুত্বপূর্ণ না। ওর জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো ১৮ গজের বক্স (পেনাল্টি বক্স)। সে কখনো ১৭ গজের বক্সে খেলা মানতে পারবে না। আমার ধারণা সে ২২ গজের বক্সে খেলতে পছন্দ করবে। ওর জন্য এটাই বেশি ভালো হবে।’
এর আগেও ইউনাইটেডের পেনাল্টি ভাগ্য নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন মরিনিও। গত মৌসুমের মাঝপথে ব্রুনো ফার্নান্দেজ ইউনাইটেডে যোগ দিয়েছেন। দারুণ খেলেছেন এই পর্তুগিজ। তাঁর সুবাদেই লিগে বাজে অবস্থান কাটিয়ে উঠে তিনে জায়গা পেয়েছে দল। সব প্রতিযোগিতা মিলে ১০ গোল করেছেন ফার্নান্দেজ। তো ফার্নান্দেজ সম্পর্কে দুটো ভালো কথা শুনতে চেয়েছি পর্তুগিজ পত্রিকা রেকর্ড। মৌসুম শেষে ছুটি কাটাতে ব্যস্ত মরিনিও খোঁচা দিয়ে বলেছিলেন, ‘ব্রুনো প্রিমিয়ার লিগে এল, ভালো ফিট ছিল, খুবই ভালো খেলল এবং ইউনাইটেড দলটার বেশ উন্নতি করল। এবং সবাইকে দেখিয়ে দিয়েছে সে দুর্দান্ত পেনাল্টি নিতে পারে, বিশ্বের অন্যতম সেরা সে। কারণ সে প্রায় ২০টির মতো পেনাল্টি নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে।’
না, ২০টি পেনাল্টি নেননি ব্রুনো। দলে যোগ দেওয়ার পর ৬টি পেনাল্টি নিয়েছিলেন সে মৌসুমে। তবে এ মৌসুমে দুই ম্যাচ না যেতেই পেনাল্টি থেকে এক গোল করে ফার্নান্দেজ ২০-এর পথে যাত্রাটা তো অন্তত শুরু করেছেন।