২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

‘আর্জেন্টিনার জয়টা প্রাপ্য ছিল’

মানচিনি বললেন, ফিনালিসিমা তাঁর অধীনে ইতালির পথচলার আসল প্রতিফলন নয়ছবি: রয়টার্স

এক বছর পেরোনোর আগেই কত অভিজ্ঞতাই না হয়ে গেল ইতালির। গত বছর এ সময় দলটা কী দোর্দণ্ডপ্রতাপের সঙ্গেই না ইউরোতে খেলতে নামার জন্য প্রস্তুত। দাপট দেখিয়ে ইউরো জেতা সেই দলই এক বছরের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোপ-সেরা হওয়ার মঞ্চে উঠে সম্পূর্ণ ভিন্ন অভিজ্ঞতা পেল। ‘লা ফিনালিসিমা’য় আর্জেন্টিনার কাছে ৩-০ গোলে হার।

ইউরো জয়ের পর মাঝে আবারও টালমাটাল হয় ইতালিয়ান ফুটবল—বিশ্বকাপেই যাওয়া হয়নি। বাছাইপর্বের প্লে অফে উত্তর মেসিডোনিয়ার মতো দলের কাছে হেরে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা হয়নি ‘আজ্জুরি’দের। কাল আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ভরাডুবির পর ইতালি কোচ রবার্তো মানচিনির কণ্ঠে দলে রদবদলের কথাই বেশি করে শোনা গেল।

নতুন মুখের সন্ধানে ইতালীয় ফুটবল
ছবি: রয়টাসৃ

ওয়েম্বলিতে গোলবারে জিয়ানলুইজি দোন্নারুমা না থাকলে কী হতো, সেটি ভেবেই হয়তো শঙ্কিত হচ্ছেন অনেক ইতালি–সমর্থক। লওতারো মার্তিনেজ, আনহেল দি মারিয়া আর পাওলো দিবালার শট জাল স্পর্শ করেছে, কিন্তু ইতালির গোলকিপার দোন্নারুমার কল্যাণে আরও কয়েকটি গোল খাওয়ার হাত থেকে বেঁচেছে মানচিনির দল। বিশেষ করে লিওনেল মেসির নেতৃত্বে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডদের একের পর এক আক্রমণে ইতালির রক্ষণ যেভাবে পরাস্ত হচ্ছিল বারবার, সেটি মানচিনিকে চিন্তিত করতেই পারে।

মানচিনি মনে করেন ‘ফিনালিসিমা’ তাঁর অধীন ইতালির সেরা মুহূর্তগুলোকে প্রতিনিধিত্ব করে না, বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে না পারাও যে দলের ওপর প্রভাব রেখেছে, সেটাও তিনি জানিয়েছেন, ‘ম্যাচটি কোনোভাবেই আমাদের ক্যারিয়ারের সেরা মুহূর্তগুলোকে মনে করিয়ে দিতে পারে না। এই দলই ইউরো জিতেছে। সাড়ে তিন বছর ধরে ৩৭ ম্যাচে অপরাজিত ছিল। আমি কেবল আমার ছেলেদের ধন্যবাদ দিতে পারি, যারা চার বছর ধরে অনেক কিছু অর্জন করেছে। আমরা সবাই বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে না পেরে খুবই হতাশ।’

তিন গোলের দুটিই নিজেদের দোষে, বললেন মানচিনি
ছবি: রয়টার্স

মানচিনি মনে করেন, প্রথম গোলটি খেয়েই হতোদ্যম হয়ে পড়ে তাঁর দল, ‘প্রথম গোল হওয়ার আগপর্যন্ত আমরা দুই দলই সমানে-সমান ছিলাম। এরপর আর্জেন্টিনা যেভাবে খেলেছে, তাতে জয়টা তাদের প্রাপ্যই। তাদের দুটি গোল হয়েছে আমরা বলের দখল হারিয়েছিলাম বলেই। ওই দুটি ভুল ছিল খুবই বাজে।’ মানচিনির নিজের কাছেই নিজের দলকে খুব ক্লান্ত মনে হচ্ছে, ‘আমাদের খেলোয়াড়েরা খুব ক্লান্ত। আমরা অবশ্য এ ম্যাচের পরপরই নতুন করে দল সাজানোর কথা ভাবছি।’

মানচিনি বার্তাটা দিয়েই দিয়েছেন। এর অর্থ নেশনস লিগে জার্মানি, হাঙ্গেরি ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নতুন চেহারার ইতালিকেই দেখবেন সবাই। কোন কোন জায়গায় বদল দরকার, সেটিও ভেবে রেখেছেন এই কোচ, তবে কাজটা যে অনেক কঠিন, সেটিও মনে করিয়ে দিয়েছেন মানচিনি, ‘এ ম্যাচ হয়ে গেল, এখন বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়কে আমি ছুটি দেব। ওরা পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাবে। ওরা ভীষণ ক্লান্ত, দুই বছর ধরে টানা খেলছে। ছুটিটা ওদের প্রাপ্য। ইউরোর পর আমরা গোল করতে পারছি না, এটা একটা বড় সমস্যা। এই সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। তবে এটাও ঠিক যে দল তৈরি করলাম, আর তারা দ্রুততার সঙ্গে আমাদের ফল দিতে শুরু করল, ব্যাপারটা এমন নয়।’

ইতালির সামনে আরও কঠিন দিন আছে, বললেন মানচিনি
ছবি: রয়টার্স

ইউরো জয় ছিল ইতালির বড় অর্জন। বিশেষ করে ২০০৬ বিশ্বকাপ জয়ের পর ফুটবলের ইতালির সাফল্য ছিল না বললেই চলে। কিন্তু ২০১৮ বিশ্বকাপের পর ২০২২ বিশ্বকাপেও যোগ্যতা অর্জন করতে না পারার পর মানচিনি নিজে কি ইতালি কোচের দায়িত্বে উৎসাহ কিছুটা হারিয়েছেন? মানচিনির জবাব, ‘আমার উৎসাহ মরে যায়নি। তবে এটা ঠিক, সামনে আমাদের কিছু কঠিন মুহূর্তের মুখোমুখি হতে হবে। আজকের সন্ধ্যাটা (রাত) যেমন খুব কঠিন ছিল। এই ব্যাপারগুলো আমাদের মেনে নিতে হবে। কারণ, নতুন মুখ দলে ঢুকবে ঠিকই, কিন্তু তাদের তো পারফরম করার জন্য যথেষ্ট সময় দিতে হবে।’