হ্যাটট্রিক হতেই গ্যালারির সামনে এসে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ‘ট্রেডমার্ক’ উদযাপন অনুকরণ করলেন ওমর জোবে। উদযাপনে সঙ্গী হতে ছুটে এলেন সলোমন কিং ও সুলাইমান সিল্লাহ।
শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের এই ‘ত্রিফলা’র আক্রমণে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে আজ তছনছ আরামবাগ। প্রিমিয়ার লিগে উড়তে থাকা শেখ জামাল ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে আরামবাগকে। এবার লিগে শেখ জামালের এটাই সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয়। টানা তিন জয়ে ৯ পয়েন্ট শেখ জামালের।
শেখ জামালের হয়ে একাই চার গোল করেন ওমর জোবে। এই মৌসুমে এটা লিগের প্রথম হ্যাটট্রিক। বাকি দুই গোল সুলাইমান সিল্লাহ-র। লিগে তিন ম্যাচে এ পর্যন্ত প্রতিপক্ষের জালে ১০ গোল করেছে শেখ জামাল।
এর মধ্যে ৯টি গোলই করেছেন বিদেশিরা। লিগে এটা জোবের পঞ্চম গোল।
শেখ জামাল আক্রমণভাগের সবচেয়ে বড় অস্ত্র জোবে, কিং ও সিল্লাহ। তিন গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ডকে লিগের কোনো ম্যাচে এক সঙ্গে মাঠে নামাতে পারেননি কোচ শফিকুল ইসলাম।
কুঁচকির চোটে প্রথম দুই ম্যাচে দর্শক হয়ে ডাগ আউটে বসে ছিলেন সিল্লাহ। ফিট হওয়ার পর আজ প্রথম সিল্লাহকে একাদশে রাখেন কোচ। এই ত্রিফলার আক্রমণ যে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, তা টের পেয়েছেন আরামবাগের গোলরক্ষক আবুল কাশেম।
এমনিতেই এবার আরামবাগ কোনোরকমে একটা দল গড়েছে। এর ওপর গত তিন ম্যাচ হেরে আত্মবিশ্বাস তলানিতে ঠেকেছিল আরামবাগ ফুটবলারদের। প্রথম ম্যাচে তারা হারে মোহামেডানের কাছে। এরপর চট্টগ্রাম আবাহনী ও মুক্তিযোদ্ধার কাছে হার।
আজ তো শেখ জামালের বিপক্ষে একটুও লড়াই করতে পারেনি। শেখ জামাল নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে খেলতে নামে আজ। প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনীকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল শেখ জামাল। পরের ম্যাচে মুক্তিযোদ্ধাকে হারায় ২-১ গোলের ব্যবধানে।
শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলা শেখ জামাল পুরো ম্যাচে যেন একই ছন্দে খেলে গেছে। কখনো ওমর জোবে ও সোলেমান কিংয়ের মেলবন্ধন। কখনো জোবেকে সঙ্গত করেছেন সিল্লাহ।
ম্যাচের ১৪ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে রেজাউল করিমের লম্বা পাস ধরে বক্সে ঢোকার চেষ্টা করেন জোবে। বক্সে ঢুকে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে শূন্যে ভেসে থাকা বল জালে পাঠিয়ে গোল উৎসবের শুরু করেন জোবে।
ম্যাচের ১৮ মিনিটে ভালি জোনোভ ওতাবেকের ক্রস থেকে সিল্লাহর হেডে ব্যবধান ২–০। এরপর ৩৪ মিনিটেও শেখ জামালের স্কোর ৩-০ করেন সিল্লাহ। ম্যাচের ভাগ্য ততক্ষণে প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। কিন্তু তারপরও আরামবাগকে এতটুকু ছাড় দেয়নি শেখ জামাল। দ্বিতীয়ার্ধে হয়েছে আরও তিন গোল।
৬০ মিনিটে কিংয়ের সঙ্গে বল দেওয়া নেওয়া করে বক্সে ঢোকেন জোবে। দারুণ দক্ষতায় প্লেসিং শটে গোল করেন তিনি। দুই মিনিট পরই বক্সের সামান্য বাইরে থেকে শটে হ্যাটট্রিক পূর্ণ হয় জোবের। আর ম্যাচের যোগ হওয়া সময়ে নিজের চতুর্থ গোলটি করে আরামবাগকে ৬ গোল হজমের তেতো স্বাদ উপহার দেন তিনি।