আগের মতো আর হাসেন না মেসি
সম্পর্কটা আজকের নয়। এক এক করতে করতে প্রায় বিশটি বছর একে অন্যের সঙ্গে কাটিয়ে দিয়েছেন। মেসি মাথার ওপর পেয়েছেন বার্সেলোনার ছায়া, কাতালান ক্লাবটাও তাঁদের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম সময়টা কাটিয়েছে মেসির কালেই। এই সম্পর্কচ্ছেদ করার সিদ্ধান্তটা নিতে মেসির নিশ্চয়ই কষ্ট হয়েছে অনেক। প্রাণের ক্লাবকে বিদায় বলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা তো চাট্টিখানি কিছু নয়!
দুই থেকে তিন বছর হবে, ও আর আগের মতো হাসে না।
কিন্তু কঠিন কিছু না ঘটলে মেসি কি আর এই সিদ্ধান্ত নিতেন? হয়তো না। ওই কথাটাই মনে হয়েছে বার্সেলোনায় মেসির সাবেক সতীর্থ স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড জেফরেন সুয়ারেজের। রেডিও মার্কাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেফরেন জানিয়েছেন, শেষ কবে মেসিকে প্রাণখুলে হাসতে দেখেছেন, ভুলে গেছেন তিনি, ‘দুই থেকে তিন বছর হবে, ও আর আগের মতো হাসে না। ঠাট্টা করে না। ও আগে ওর দল আর সতীর্থদের নিয়ে অনেক খুশি থাকত। এখন সেটা আর দেখা যায় না বললেই চলে। ও নিশ্চয়ই বিরক্তির শেষ সীমায় পৌঁছে গিয়েছে।’
জেফরেন কে, সেটি মনে করাতে হলে দশ বছর আগে বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদ ম্যাচে ফিরতে হবে। বার্সায় ততদিনে পেপ গার্দিওলার তৃতীয় মৌসুম চলছে, তাঁকে টেক্কা দিতে রিয়াল মাদ্রিদ নিয়ে আসে আগের মৌসুমেই ইন্টার মিলানকে চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ট্রেবল জেতানো হোসে মরিনহোকে। নভেম্বরে তখন দুদলের প্রথম দেখা। দুদলই দুর্দান্ত ফর্মে। দারুণ উত্তেজনার ম্যাচটি বার্সেলোনা ৫-০ গোলে জিতে নেয়, যাতে শেষ গোলটি করেন জেফরেন।
সেই জেফরেন এখানে-সেখানে ঘুরে এখন আছেন ক্রোয়েশিয়ার শীর্ষস্তরের ক্লাব স্লাভেন বেলুপোতে। দূর থেকেই বার্সেলোনার এই অবস্থা দেখছেন। তবে মেসিকে অনেকদিন তো কাছ থেকেই দেখেছিলেন, তা থেকে জেফরেনের মনে হচ্ছে, মেসি যে সিদ্ধান্তই নিন না কেন, সেটা যে বেশ ভেবেচিন্তেই নিয়েছেন। তাঁর বিশ্লেষণ, ‘মেসি অনেক বড় বার্সেলোনা ভক্ত। ও যখন অনেক ছোট ছিল সেই তখন থেকেই। নিশ্চয়ই অনেক বড় কিছু ঘটেছে যার কারণে ও ওর প্রাণের ক্লাবের বিরুদ্ধে এমন একটা কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। আমি বুঝতে পারি ওর অবস্থাটা, ওর সেখানেই যাওয়া উচিত যেখানে ও খুশি থাকে।’
তা কোথায় যাবেন মেসি, সে-ও তো বড় এক প্রশ্ন। এখন পর্যন্ত যা গুঞ্জন, তাতে সব পথ ম্যানচেস্টার সিটিতেই গিয়ে মিলছে। সেখানে গার্দিওলা আছেন, যেটি মেসিকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করছে বলে সংবাদমাধ্যমে শোনা যায়। জেফরেন বললেন, ‘মেসি ও গার্দিওলা দুজন দুজনকে অনেক পছন্দ করে। আমি যেহেতু অনেক আগে আগে ক্লাব ছেড়ে বের হয়ে এসেছিলাম, তাই হয়তো বলতে পারি না আসল অবস্থাটা কী।’
সাবেক কোচের সঙ্গে মেসির সুসম্পর্কের কারণে হয়তো ম্যানচেস্টার সিটিতেই দেখা যাবে এই তারকাকে, এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন জেফরেন, ‘তবে এটা সত্যি, মেসি গার্দিওলাকে কোচ হিসেবে অনেক উঁচুমানের মনে করত। গার্দিওলাও জানতেন তাঁর হাতে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় রয়েছে।’