অর্থের চেয়ে খেলোয়াড়ের মূল্য বেশি: বেল
ভয়ংকর ব্যস্ত এক মৌসুম শেষ হয়েছে। ইংল্যান্ড ও ইতালিতে একদম শেষ ম্যাচে গড়িয়েছে শিরোপার মীমাংসার লড়াই। ক্লাব মৌসুমের মাঝে জাতীয় দল নিয়েও ব্যস্ত থাকতে হয়েছে ফুটবলারদের। কেউ নেশনস লিগে খেলেছেন, কেউ আফ্রিকান কাপ অব নেশনসে। এর বাইরে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব তো ছিলই। অবশেষে একটু ছুটি মিলেছে ফুটবলারদের। কিন্তু শীর্ষ ফুটবলারদের কপালে তা–ও নেই। শীর্ষ পর্যায়ের ক্লাবগুলোর সেরা তারকারাই মৌসুমজুড়ে ব্যস্ত থাকেন। আবার তাঁরাই যেহেতু নিজ নিজ জাতীয় দলের প্রাণভোমরা, জাতীয় দলেও ব্যস্ত থাকতে হয় তাঁদের বেশি।
মৌসুম শেষ হতেই তাঁদের আবার ব্যস্ত হয়ে যেতে হচ্ছে। একসময় মৌসুম শেষ হলে প্রাক্-মৌসুমের আগে এক মাস ছুটি পেতেন ফুটবলাররা। কিন্তু উয়েফার বাড়তি অর্থ আয়ের চেষ্টা সেটাতেও বাঁধ দিয়েছে। একসময় জাতীয় দলগুলো প্রীতি ম্যাচ খেললেও সেটা সংখ্যায় কম ছিল। কিন্তু এখন ইউরোপে সেই প্রীতি ম্যাচগুলোকে নেশনস লিগের মোড়কে খেলানো হচ্ছে, ম্যাচও বেড়ে গেছে। ফলে গত তিন মৌসুম ধরে বলতে গেলে কোনো বিশ্রাম ছাড়াই খেলে যাচ্ছেন ফুটবলাররা। গ্যারেথ বেল বলছেন, অর্থ কামানোর চেয়ে ফুটবলারদের স্বাস্থ্যের কথা আগে ভাবা উচিত।
ব্যস্ত খেলোয়াড়দের কথায় ইদানীং বেলের নাম ওঠে না। গত মৌসুমে চোটের কারণে অনেক দিন মাঠে ছিলেন না। আর যখন সুস্থ ছিলেন তখন রিয়াল মাদ্রিদের বেঞ্চেই বেশি দেখা গেছে। তাঁকে জাতীয় দলের হয়েই বেশি দেখা গেছে। কিন্তু নিজে খেলেননি বলে সতীর্থদের ক্লান্তি টের পাচ্ছেন না এমন তো না। গতকাল রাতে বেলজিয়ামের বিপক্ষে নেশনস লিগে খেলেছে ওয়েলস। সে ম্যাচের আগের সংবাদ সম্মেলনে ফুটবলের ব্যস্ত সূচি নিয়ে কথা বলেছেন বেল।
ম্যাচের আগে এ নিয়ে বেল বলছিলেন, ‘খেলোয়াড়দের সুস্থতার কথা ভাবতে হবে। খেলোয়াড় না থাকলে আপনি কী বিক্রি করবেন। দীর্ঘ মেয়াদে এর প্রভাব পড়বেই। বছরের পর বছর ধর এমন সূচি সামলাতে পারবে না মানুষের শরীর। এখানে বদল আনতে হবে। যাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, তাঁদের কিছু করা দরকার। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এর মাঝে অর্থ ঢুকে পড়েছে। দিন শেষ এটা ব্যবসা, কিন্তু খেলোয়াড়দের ভালোর জন্য অর্থের কথা ভুলতে হবে।’
একটি টুর্নামেন্ট সৃষ্টি করে ব্যস্ত সূচিতে ভিড় বাড়ানো নিয়ে কদিন আগেই বিরক্তি প্রকাশ করেছেন বেলজিয়ামের কেভিন ডি ব্রুইনা। নেশনস লিগকে অর্থহীন এক টুর্নামেন্ট বলেছেন।
প্রতি দুই বছর পর পর যেখানে বিশ্বকাপ ও ইউরোর মতো টুর্নামেন্ট আছে, সেখানে আবার নেশনস লিগের ব্যস্ততা ভালো লাগেনি তাঁর। বিরক্তি প্রকাশ করলেও ঠিকই জাতীয় দলের হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন ডি ব্রুইনা। এর আগে এই টুর্নামেন্ট নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে, টনি ক্রুসের মতো তারকারাও।
বেল এ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ডি ব্রুইনার উদাহরণই টেনেছেন, ‘সেদিন লাঞ্চ করার সময় কে জানি বলছি, মাত্র তিন সপ্তাহের বিরতি নিয়ে আগামী মৌসুমে কেভিন ডি ব্রুইনাকে ৭৯টার মতো ম্যাচ খেলতে হতে পারে। এটা নিশ্চিতভাবেই বাড়াবাড়ি। পরিবর্তন আনতেই হবে। সব খেলোয়াড়ই আপনাকে বলবে যে এখন ম্যাচ অনেক বেশি। এত ম্যাচ থাকলে শীর্ষ মান বজায় রেখে খেলা অসম্ভব।’