বেনজেমাকে নিয়ে আনচেলত্তি—‘সর্বকালের সেরা স্ট্রাইকারদের একজনকে কোচিং করাতে পেরেছি’
কয়েক সপ্তাহ ধরে কানাঘুষা চলছিল—চুক্তির মেয়াদ এক বছর বাকি থাকলেও রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে সৌদি আরব যাচ্ছেন করিম বেনজেমা। শেষ পর্যন্ত গুঞ্জনটাই সত্যি হয়েছে। রিয়ালের সঙ্গে ১৪ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন বেনজেমা।
অথচ এক দিন আগেও কোচ কার্লো আনচেলত্তি বলেছিলেন, বেনজেমার রিয়ালে থাকা নিয়ে তাঁর মনে কোনো সন্দেহ নেই। আনচেলত্তি কেন, রিয়ালের সবার এমনটা ভাবাই ছিল স্বাভাবিক। কারণ, সাধারণ দিনগুলোর মতোই পরশু দলের সঙ্গে অনুশীলন করেছেন ফরাসি স্ট্রাইকার। তখন কেউ ধারণা করতে পারেননি, রিয়ালের অনুশীলনে এটিই তাঁর শেষ দিন।
পরশু বেনজেমার ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত তাই বড় বিস্ময় হয়ে এসেছে সবার কাছে। তবে সেই সিদ্ধান্তের প্রতি সবাই সম্মান জানিয়েছেন। বিদায়ী ম্যাচে গোল করে ৩৫ বছর বয়সী তারকা যেমন রিয়ালের হার এড়িয়েছেন, ম্যাচ শেষে সতীর্থরাও তাঁকে শূন্যে ভাসিয়ে রাজসিক বিদায় দিয়েছেন।
পরে সংবাদ সম্মেলনে আনচেলত্তি জানিয়েছেন, একদম শেষ মুহূর্তে নিজের ভবিষ্যৎ ঠিক করেছেন বেনজেমা, ‘ওর বিদায়ের ঘোষণা অপ্রত্যাশিত ছিল। ও সবাইকে চমকে দিয়েছে। একদম শেষ মুহূর্তের সিদ্ধান্ত এটি। গতকাল (পরশু) সে স্বাভাবিকভাবেই অনুশীলন করেছে, আজকে (কাল) সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা তা মেনে নিয়েছি। সকালে ওর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। জানিয়েছে, সে চলে যেতে চায়।’
বেনজেমা মৌসুম শেষ হওয়ার দিনে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়ায় একধরনের সুবিধাও হয়েছে আনচেলত্তির। আগামী মৌসুমের আগে কোন পজিশনে কোন খেলোয়াড় দরকার, সেটা এখন থেকেই জানতে পারছেন তিনি, ‘সে এটা নিয়ে অনেক ভেবেছে। ওর সিদ্ধান্তের পেছনে একটা কারণ ছিল ক্লাবে বদলের হাওয়া লাগা, যেটা এখন চলছে এবং আগামী বছরেও চলবে। আমাদের কী করতে হবে, এটা ভাবার জন্য যথেষ্ট সময় পাচ্ছি। আমরা কিছু স্ট্রাইকার কিনব।’
২০০৯ সালে রিয়ালে যোগ দেওয়ার পর সাফল্য–ব্যর্থতার অনেক অম্লমধুর স্বাদ পেয়েছেন বেনজেমা। তবে তাঁর সাফল্যের পাল্লাই ভারী। বিদায় নিচ্ছেন ক্লাব ইতিহাসের যৌথ সর্বোচ্চ ট্রফি জয়ী হিসেবে (মার্সেলো ও বেনজেমা দুজনই জিতেছেন ২৫টি করে ট্রফি)। স্পেন ও ইউরোপের সফলতম ক্লাবের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোল (৩৫৪) ও সবচেয়ে বেশি গোলে সহায়তা (১৬৫) করার রেকর্ড তাঁর। ব্যালন ডি’অর ও উয়েফার বর্ষসেরা খেলোয়াড়ও হয়েছেন রিয়ালে থেকে। এমন একজনকে কোচিং করাতে পেরে গর্বিত আনচেলত্তি, ‘বিশ্বের সেরা ফুটবলারদের একজন ও সর্বকালের সেরা স্ট্রাইকারদের একজনকে আমি কোচিং করিয়েছি। এই তৃপ্তি নিয়ে ওকে বিদায় জানাতে পারছি।’
বেনজেমার অবদান রিয়াল মাদ্রিদ চিরকাল মনে রাখবে বলে বিশ্বাস আনচেলত্তির, ‘ওর বিদায়ে খুশি হওয়ার কারণ নেই। তবে ওর সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাতে হবে। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার সে অর্জন করেছে এবং ক্লাবের জন্য সে যা কিছু করেছে, সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ জানাই। সে একজন কিংবদন্তি, অবিস্মরণীয় একজন এবং এই ক্লাবের স্মৃতিতে সে আজীবন রয়ে যাবে।’