চোটে চোটে যায় বেলা
চোট ফুটবলের অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ। খেলাটির ধরন ও মেজাজের কারণে ফুটবলারদের চোটে পড়া একটি নৈমিত্তিক ঘটনা। প্রায় সব ফুটবলারকেই ক্যারিয়ারে ছোট–বড় চোটের মুখে পড়তে হয়। চলতি মৌসুমে যেমন তারকাদের চোটে পড়ার উচ্চ হার দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে বার্সেলোনা গোলরক্ষক মার্ক–আন্দ্রে টের স্টেগেন এবং ম্যানচেস্টার সিটি মিডফিল্ডার রদ্রির তো মৌসুমই শেষ হয়ে গেছে। চোটে পড়েছেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পেও।
এরপরও খেলোয়াড়দের মধ্যে এমন কেউ কেউ আছেন, যাঁরা অধিক চোটপ্রবণ। আবার এমনও কেউ থাকেন, যিনি কদাচিৎ চোটে পড়েন। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পর্তুগিজ মিডফিল্ডার ব্রুনো ফার্নান্দেজের কথা যেমনটা বলা যায়। ট্রান্সফারমার্কেটের হিসাবে প্রিমিয়ার লিগে আসার পর চোট নিয়ে কেবল তিন ম্যাচ বাইরে ছিলেন এই মিডফিল্ডার।
উল্টো দিকে রোনালদো নাজারিও বা নেইমারের মতো এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা চোটের কারণে নিজেদের পুরোপুরি মেলেই ধরতে পারেননি। ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদোকে নিয়ে যেমনটা বলা হয়, চোটপ্রবণ না হলে ক্যারিয়ার আরও উঁচুতে শেষ করতে পারতেন এ স্ট্রাইকার।
তবে রোনালদো বা নেইমার নন, চোটের কারণে সবচেয়ে বেশি সময় মাঠের বাইরে ছিলেন আর্সেনালের সাবেক মিডফিল্ডার আবু দিয়াবি। সম্প্রতি ট্রান্সফারমার্কেটের পরিসংখ্যান ব্যবহার করে আধুনিক ফুটবলে চোটে সবচেয়ে বেশি দিন কারা মাঠের বাইরে ছিলেন সেই তালিকা প্রকাশ করেছে ফুটবলভিত্তিক পোর্টাল পপফুট। সেখানেই শীর্ষে দেখা গেছে দিয়াবির নাম।
এই ফরাসি ফুটবলার চোট নিয়ে সব মিলিয়ে বাইরে ছিলেন ১৭৪৭ দিন। এ সময়ে ২১ বার চোটে পড়ে তিনি মিস করেছেন ৩১৪ ম্যাচ। এই তালিকার ২ নম্বরে আছেন ইন্টার মিলানের সাবেক স্ট্রাইকার স্টেভান জোভেটিক। মন্টেনেগ্রোর এই ফুটবলার সব মিলিয়ে বাইরে ছিলেন ১৫১০ দিন। এই সময়ে ৩৫ বার চোটে পড়ে তিনি মিস করেছেন ২১১ ম্যাচ।
তালিকার ৩ নম্বর নামটি অবশ্য বেশ বিখ্যাত। বায়ার্ন মিউনিখের কিংবদন্তি ডাচ উইঙ্গার আরিয়ান রোবেন ১৫০৭ দিন মিস করেছেন চোটের কারণে। ২৪৩ ম্যাচ মিস করার পথে তিনি সব মিলিয়ে চোটে পড়েছেন ৫৮ বার। রোবেনের বায়ার্ন সতীর্থ ফ্রাঙ্ক রিবেরিও একইভাবে চোটপ্রবণ ছিলেন। ১৩৬৩ দিন চোটের কারণে বাইরে থাকা এই উইঙ্গার ক্যারিয়ারে চোটে পড়েছেন ৭২ বার। আর ম্যাচ মিস করেছেন ২২৭টি।
একই অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে দুই ব্রাজিলিয়ান মহাতারকা রোনালদো নাজারিও ও নেইমারকে। তালিকার আটে থাকা রোনালদো ক্যারিয়ারে আটবার চোটে পড়লেও মাঠের বাইরে ছিলেন ১৩২৪ দিন। এ সময়ে তাঁর মিস করা ম্যাচের সংখ্যা ১৫৯টি। পূর্ণ ফিট রোনালদোকে না পাওয়ার হতাশা যেমন ব্রাজিলিয়ান সমর্থকদের মাঝে আছে, তেমনি হতাশা আছে নেইমারকে নিয়েও।
লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর সবচেয়ে বড় প্রতিভাবান বিবেচিত হওয়া নেইমারকে বারবার থামিয়ে দিয়েছে চোট। গত অক্টোবরে পাওয়া চোটের কারণে এখনো মাঠের বাইরে আছেন তিনি। চোটের কারণে ১২৯৪ দিন বাইরে থেকে ২৩৩টি ম্যাচ মিস করেছেন সাবেক এই বার্সেলোনা তারকা।