মুঠোফোন ‘চুরি’র অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সিটি তারকা নুনেস

ম্যানচেস্টার সিটির পর্তুগিজ মিডফিল্ডার মাথেউস নুনেসরয়টার্স

ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার রদ্রি ও তারকা মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনা চোট পাওয়ায় মাথেউস নুনেসকে নিয়ে আশায় বুক বেঁধেছিলেন ম্যানচেস্টার সিটির সমর্থকেরা। সিটির মূল দলে নুনেস দায়িত্ব নিয়ে খেলে দুজনের শূন্যতা পূরণ করার চেষ্টা করবেন—এমনটাই ছিল প্রত্যাশা। স্লোভাকিয়ায় গতকাল রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগে স্লোভান ব্রাতিস্লাভার মাঠে সিটির ৪-০ গোলের জয়ে পর্তুগিজ এই মিডফিল্ডার সেই প্রত্যাশা পূরণও করেছেন।

কিন্তু ম্যাচের পরের দিন সকালে নুনেসকে নিয়ে মিলল সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত এবং অনাকাঙ্ক্ষিত এক খবর। স্পেনের সংবাদমাধ্যম ‘এল মুন্দো’ জানিয়েছে, মাদ্রিদে গত ৮ সেপ্টেম্বর মুঠোফোন চুরির অভিযোগে দেশটির ন্যাশনাল পুলিশ নুনেসকে গ্রেপ্তার করেছিল। কয়েক ঘণ্টা পর জামিনে বের হয়ে আসেন নুনেস। এ মামলার বিচারকার্য পরে শুরু হবে।

এল মুন্দোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাদ্রিদের লা রিভেইরা নৈশক্লাব থেকে ২৬ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত নুনেসকে গ্রেপ্তার করা হয়। নৈশক্লাবের বাথরুমে ৫৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নুনেসের অনুমতি না নিয়েই তাঁর ছবি তুলেছিলেন। নুনেসের ব্যাপারটি ভালো লাগেনি। রাগে সেই ব্যক্তির কাছ থেকে ফোনটি কেড়ে নিয়ে ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান। স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

আরও পড়ুন

সেপ্টেম্বরের শুরুতে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক বিরতিতে (৫ সেপ্টেম্বর ও ৮ সেপ্টেম্বর) উয়েফা নেশনস কাপে দুটি ম্যাচ খেলেছে পর্তুগাল। নুনেসকে বাইরে রেখেই এ দুটি ম্যাচের স্কোয়াড ঠিক করেছিলেন পর্তুগাল কোচ রবার্তো মার্তিনেজ। নুনেস সে সুযোগে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে মাদ্রিদ গিয়েছিলেন ছুটি কাটাতে।

স্পেনের পুলিশের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নুনেস সেই লোকের ফোন কেড়ে নেওয়ার আগে কী ঘটেছিল, তা এখনো পরিষ্কারভাবে জানা যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, নুনেসের অনুমতি ছাড়াই তাঁর ছবি তুলেছিলেন সেই ব্যক্তি। যেহেতু অনুমতি ছাড়া ছবি তুলেছেন, তাই রাগে ক্ষিপ্ত নুনেস ফোনটি কেড়ে নিয়ে ফেরত দিতে চাননি। এল মুন্দো এই পুলিশি প্রতিবেদনের পাশাপাশি ঘটনার আরেক রকম বর্ণনাও দিয়েছে। বাথরুমে ৫৮ বছর বয়সী সেই লোক নাকি নুনেসের শরীর স্পর্শ করেছিলেন।

তখন তাঁর হাতে ফোন ছিল। লোকটি তাঁর ছবি তুলেছেন, এটা ভেবে নুনেস ঘাড় ঘুরিয়ে তাঁর ফোন কেড়ে নেন। এরপর সেই ব্যক্তি ন্যাশনাল পুলিশকে ঘটনাটি জানিয়ে অভিযোগ করেন। পুলিশ গিয়ে নুনেসের কাছে অন্য এক ব্যক্তির ফোন পেয়েছে এবং অভিযোগকারীর সাক্ষ্য গ্রহণের পর সিটি মিডফিল্ডারের হাতে হাতকড়া পরানো হয়। নুনেস এ সময় পুলিশের সঙ্গে বেশ প্রতিবাদী আচরণ করেন বলেও জানিয়েছে এল মুন্দো।

সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, মাদ্রিদের আরগানজুয়েলা পুলিশ স্টেশনের হাজতে নুনেসকে আটক রাখা হয়েছিল। উলভারহ্যাম্পটন থেকে গত বছর সিটিতে যোগ দিয়ে প্রিমিয়ার লিগ জেতা নুনেস এরপর তাঁর আইনজীবীকে ঘটনাটি জানান। চুরির অভিযোগে পুলিশ তাঁকে আদালতে তোলার আগেই সেই আইনজীবী নুনেসকে ছাড়িয়ে নেন। তবে সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে, নুনেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে মামলার বিচারকার্য শুরু করা হবে।

আরও পড়ুন

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মেইল অনলাইন স্পেনের ন্যাশনাল পুলিশের এক মুখপাত্রের উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে, ‘আমি এটুকু নিশ্চিত করতে পারি, ৮ সেপ্টেম্বর মাদ্রিদের নৈশক্লাবে অন্য এক ব্যক্তির ফোন চুরির অভিযোগে এক পর্তুগিজ নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।’ পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যে ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তাঁর জন্ম ১৯৯৮ সালে। নুনেসের জন্মও ১৯৯৮ সালে। তবে গ্রেপ্তার ব্যক্তি নুনেসই ছিলেন কি না, তা নিশ্চিত করতে কোনো মন্তব্য করেনি পুলিশ। মেইল অনলাইনকে ঘনিষ্ঠ এক সূত্র বলেছেন, ‘এই ব্যাপারটি এখন আদালতে বিচারকার্যের মাধ্যমে সুরাহা করা হবে।’

আরও পড়ুন

সর্বশেষ আন্তর্জাতিক বিরতির পর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে সিটির প্রথম ম্যাচে বেঞ্চ থেকে মাঠে নেমেছিলেন নুনেস। ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতেছিল সিটি। গত মাসে লিগ কাপে ওয়াটফোর্ডের বিপক্ষে সিটির একই ব্যবধানে জয়ের ম্যাচে চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো পেপ গার্দিওলার একাদশের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন নুনেস। লিগে আর্সেনাল ও নিউক্যাসল ইউনাইটেডের বিপক্ষে সিটির সর্বশেষ দুই ম্যাচেই বেঞ্চে বসেছিলেন তিনি। কিন্তু গতকাল রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগে ব্রাতিস্লাভার বিপক্ষে ম্যাচের পুরো সময়ই মাঠে ছিলেন।