বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের শুরুর দিনই চমক। রানার্সআপ ঢাকা আবাহনী লিমিটেডকে জিততে দেয়নি রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে ম্যাচটি ড্র হয়েছে ১-১ গোলে।
কদিন আগেই স্বাধীনতা কাপের সেমিফাইনালে বসুন্ধরা কিংসের কাছে ৪-০ গোলে উড়ে গিয়েছিল আবাহনী। আর্জেন্টাইন কোচ আন্দ্রেস ক্রুসিয়ানির অধীনে মৌসুমের শুরুতে বেশ নড়বড়েই মনে হচ্ছে আকাশি-নীলদের। কিংস অ্যারেনায় স্বাধীনতা কাপ সেমিফাইনালের ধাক্কা যে আবাহনী এক সপ্তাহ পরও কাটিয়ে উঠতে পারেনি, সেটি বোঝা গেল আজ গোপালগঞ্জে। যদিও রহমতগঞ্জের বিপক্ষে প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল আবাহনী। ২১ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড জোনাথন ফার্নান্দেজ এগিয়ে দিয়েছিলেন আকাশি নীলেদের। ৬৭ মিনিটে রহমতগঞ্জকে সমতায় ফেরান ঘানাইয়ান স্ট্রাইকার আরনেস্ট বোয়াটেং।
আবাহনীর গোলটি একটি পরিকল্পিত আক্রমণ থেকে। বাঁ প্রান্তে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ওয়াশিংটন দস সান্তোস রহমতগঞ্জের বক্সে থ্রু বাড়ালে জোনাথন তা থেকে গোল করেন। রহমতগঞ্জের সমতাসূচক গোলটি আসে ফ্রিকিক থেকে। আবু সাঈদের ক্রস থেকে গোলটি করেন বোয়েটাং। আবাহনীর খেলোয়াড়েরা অবশ্য অফসাইডের দাবি তুলেছিলেন। কিন্তু সহকারী রেফারি রেফারি তাতে সাড়া দেননি।
ওদিকে রাজশাহীতে শুভ সূচনা হয়েছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের। ফর্টিস এফসিকে তারা হারিয়েছে ২-১ গোলে। ১৩ মিনিটে শাহরিয়ার ইমনের গোলে মোহামেডান এগিয়ে গেলেও ফর্টিস ৪৩ মিনিটে সমতায় ফেরেন। গাম্বিয়ার স্ট্রাইকার ওমর সার গোলটি করেন। দুই দলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইটি যখন নিশ্চিত ড্রয়ের দিকে এগোচ্ছে তখনই ৯০তম মিনিটে মোহামেডানের ত্রাণকর্তা হয়ে হাজির হন নাইজেরিয়ান ডিফেন্ডার ইমানুয়েল টনি।
স্বাধীনতা কাপে সেনাবাহিনী ফুটবল ক্লাবে নিবন্ধিত ছিলেন শাহরিয়ার ইমন। মোহামেডানের সম্ভাবনাময় এই মিডফিল্ডার দলে ফেরায় মোহামেডানের স্বস্তি মিলেছে ভালোই। স্বাধীনতা কাপে যে শাহরিয়ার ইমনের অভাব সাদাকালোরা অনুভব করেছে, সেটি বোঝা গিয়েছিল। আজ উজবেকিস্তানের মিডফিল্ডার মোজাফফরভের সঙ্গে শাহরিয়ার ইমন আক্রমণগুলো ভালোই তৈরি করেছেন। ১৩তম মিনিটে তাঁর গোলটিও ছিল চমৎকার। সেটিও মোজাফফরভের সঙ্গে যুগলবন্দীই। ডানপ্রান্তে পাওয়া ফ্রিকিকে মোজাফফর বর বাঁক খাইয়ে ফেলেন ফর্টিসের বক্সের একেবারে মাথায়। ভিড়ের মধ্য থেকেই হেড করে শাহরিয়ার ইমন পরাস্ত করেন গোলকিপার আজাদ হোসেনকে।
৪৩ মিনিটে ফর্টিসের সতাসূচক গোলটির জন্য অনেকটাই দায় মোজাফফরভের। তাঁর বাড়ানো ভুল পাস মোহামেডানের বক্সের মুখ ধরে আরমান ফয়সাল আকাশ ধরে তা বাড়িয়ে দেন সারের কাছে। ঘানাইয়ান ফরোয়ার্ড কোনো ভুলই করেননি। ১-১ সমতায় এগিয়ে যাওয়া ম্যাচে মোহামেডান জয়সূচক গোলটি পায় ডিফেন্ডার মোহাম্মদ সবুজ হোসেনের লম্বা থ্রো থেকে। ডান প্রান্ত থেকে সবুজের লম্বা থ্রোতে মাথায় ছুঁইয়ে মোহামেডানকে জয় এনে দেন নাইজেরিয়ান টনি।
আজকের জয়টি একদিক দিয়ে মোহামেডানের জন্য মধুর প্রতিশোধই। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রিমিয়ার লিগে ফর্টিসের কাছে তারা হেরেছিল ৪-৩ গোলে।