দর্শক উপস্থিতির রেকর্ড গড়বে এবারের নারী বিশ্বকাপ
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে চলছে নারী ফুটবল বিশ্বকাপ। এবারের নারী বিশ্বকাপে দর্শক উপস্থিতির রেকর্ড হবে এবং ম্যাচপ্রতি গড় দর্শকের রেকর্ড গড়া ২০১৫ কানাডা বিশ্বকাপকে ছাড়িয়ে যাবে বলেই মনে করছেন ফুটবল অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী জেমস জনসন। তাঁর আশা, নারী বিশ্বকাপ সফলভাবে আয়োজনের মধ্য দিয়ে ছেলেদের বিশ্বকাপ আয়োজনের স্বত্ব পাওয়ার শক্ত ভিতও পেয়ে যাবে অস্ট্রেলিয়া।
পরশু নারী বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব শেষ হয়েছে। এখন চলছে শেষ ষোলোর লড়াই। গ্রুপ পর্ব শেষ হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে জেমস জনসন বলেছেন, ‘নারীদের যেকোনো ফুটবল বিশ্বকাপের তুলনায় বেশি দর্শক হচ্ছে (এবার)।’ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, নারী বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ১২ লাখ দর্শকের উপস্থিতির হিসাব করা হয়েছে। ২০ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল। আয়োজকদের আশা, এ সময়ের মধ্যে নারী বিশ্বকাপে প্রায় ১৯ লাখ দর্শকের সমাগম হবে।
জনসন এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল ১৫ লাখ দর্শক এবং লক্ষ্যটা পেরিয়ে যাব।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, নারী বিশ্বকাপের রেকর্ড সম্প্রচারের ‘গল্প শুনছেন বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে’।
নারী বিশ্বকাপে এবারই প্রথম ৩২টি দল অংশ নিয়েছে। সে হিসাবে এবার মোট ৬৪ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ২০১৫ কানাডা বিশ্বকাপে হয়েছিল ৫২ ম্যাচ। সেবার ২৪টি দল অংশ নিয়েছিল। কানাডা বিশ্বকাপে ম্যাচপ্রতি গড় দর্শক উপস্থিতি ছিল ২৬ হাজার।
এবারের নারী বিশ্বকাপ সেই রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ম্যাচপ্রতি এবার দর্শক উপস্থিতির হার ৩০ হাজারের বেশি। গত বুধবার পানামার বিপক্ষে ফ্রান্সের ৬–৩ গোলে জয়ের ম্যাচে সিডনি ফুটবল স্টেডিয়ামে প্রায় ৪০ হাজার দর্শকের সমাগম হয়েছিল।
আজ অকল্যান্ডে শেষ ষোলোর প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে স্পেন–সুইজারল্যান্ড। সুইস মেয়েদের ৫–১ ব্যবধানে উড়িয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেছে স্প্যানিশরা। এই ম্যাচের দর্শকসংখ্যা ফ্রান্স–পানামা ম্যাচকে ছাড়িয়ে গেছে। আজ খেলা দেখতে মাঠে এসেছিলেন ৪৩ হাজার ২১৭ জন দর্শক।
এবারের বিশ্বকাপের এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি দর্শক হয়েছে গত ২০ জুলাই আসর শুরুর দিন। ওই দিন সিডনি অলিম্পিক স্টেডিয়ামে সহ–আয়োজক অস্ট্রেলিয়া ও আয়ারল্যান্ডের খেলা দেখতে আসেন ৭৫ হাজার ৭৮৪ জন ফুটবলপ্রেমী।
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে জনপ্রিয়তায় ফুটবল বেশ পিছিয়ে। তবে সেখানকার নিরপেক্ষ দর্শকেরা নারী বিশ্বকাপের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়েছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স। এ ছাড়া খেলার বিভিন্ন সরঞ্জামও ভালোই বিক্রি হচ্ছে।
জনসন জানিয়েছেন, ছেলেদের সর্বশেষ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দল যে জার্সি পরেছে, তার চেয়ে এবার নারী বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া দলের জার্সি দ্বিগুণ বিক্রি হচ্ছে। ছেলেদের জাতীয় দলের মতো মেয়েদের জাতীয় দলেও টাকা ঢেলেছে ফুটবল অস্ট্রেলিয়া।
গবেষণার সূত্র ধরে রয়টার্স জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ায় জনপ্রিয়তায় ছেলেদের ক্রিকেট ও ফুটবল জাতীয় দলের চেয়ে পিছিয়ে নারীদের জাতীয় ফুটবল দল। তবে ছেলেদের রাগবি ইউনিয়ন ও রাগবি লিগের দলগুলোকে জনপ্রিয়তায় পেছনে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়ার নারী ফুটবল দল। নারী বিশ্বকাপে এরই মধ্যে শেষ ষোলোয় উঠেছে তারা। সোমবার কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে সহ–আয়োজকদের প্রতিপক্ষ ডেনমার্ক।
ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো অস্ট্রেলিয়ার গিয়ে বলেছেন, ‘এবারের নারী বিশ্বকাপ সর্বকালের সেরা।’ জেমস জনসনের আশা, এবারের নারী বিশ্বকাপ সফলভাবে আয়োজন করে ২০২৯ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ আয়োজনের পথে আরও এগিয়ে যাবে ফুটবল অস্ট্রেলিয়া। এ ছাড়া ২০৩৪ সালে ছেলেদের বিশ্বকাপ আয়োজনে বিশেষভাবে আগ্রহী দেশটির ফুটবল ফেডারেশন।