আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলে কাবরেরা এখন আত্মবিশ্বাসী
তাঁর চিন্তাভাবনাজুড়েই আছে অক্টোবরে মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচ! আর ১২ ও ১৭ অক্টোবর ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রাথমিক রাউন্ডে মালদ্বীপের বিপক্ষে দুটি ম্যাচের প্রস্তুতি দারুণ হলো বলে সন্তুষ্ট বাংলাদেশের স্প্যানিশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচকে তিনি মালদ্বীপ ম্যাচের প্রস্তুতি হিসেবেই দেখছেন। আফগানদের বিপক্ষে জয়-পরাজয় তাঁর কাছে কোনো সমস্যা নয়। তিনি খুশি মালদ্বীপের সঙ্গে লড়াইয়ের আগে আফগানিস্তানের মতো একটা শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সঙ্গে দুটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ বাংলাদেশ খেলতে পেরেছে বলেই।
প্রথম ম্যাচে গোলশূন্য ড্র, আজ স্কোরলাইনটা ১-১! আফগানদের বিপক্ষে এ দুটি ম্যাচেই কিন্তু জিততে পারতেন জামাল ভূঁইয়া-তপু বর্মণরা। গোলের সুযোগ নষ্ট হয়েছে, হাতছাড়া হয়েছে জয়ও। তবে কাবরেরা সেই আক্ষেপ এক পাশে সরিয়েই রাখলেন। তিনি সন্তুষ্ট দলের খেলায়, ‘আমি মনে করি, আমার দল একেবারে ঠিক পথে আছে। আফগানিস্তানের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেলে আমাদের প্রস্তুতিটা দারুণ হয়েছে। এখন আমাদের যেটি করতে হবে, সেটি হচ্ছে, যেসব জায়গায় ঘাটতি আছে, সেগুলো খুঁজে বের করা।’
গত জুনে বেঙ্গালুরুতে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে দারুণ খেলে সেমিফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। কাবরেরা মনে করেন, সাফে যেমন খেলেছিল দল, সেটি তো ধরে রাখা গেছেই, আরও উন্নতিও দৃশ্যমানই, ‘আমরা সাফের সময় থেকে আরও উন্নতি করেছি। এই পর্যায়ে আমি মনে করি, বাংলাদেশের বড় কিছু অর্জনের ক্ষমতা তৈরি হয়েছে।’
আফগানিস্তানের বিপক্ষে আজকের ম্যাচটিকে ঠিক এভাবেই বিশ্লেষণ করেছেন কাবরেরা, ‘প্রথমার্ধের খেলা তিন ভাগে ভাগ করতে চাই। প্রথম ভাগে প্রচুর আগ্রাসন দেখিয়েছে দুই দলই। কথার লড়াই হচ্ছিল মাঠে। ওই ধরনের পরিস্থিতিতে খেলাটা আমাদের দলের জন্য ভালো হয়েছে। এরপর আফগানিস্তান কিছুক্ষণ ম্যাচে প্রাধান্য বিস্তার করেছে। এরপর আমরা ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছিলাম। ২টি গোলও করতে পারতাম। কর্নার থেকে জামালের শট ঠেকিয়েছে তাদের গোলরক্ষক। রাকিবেরও একটা শট ঠেকিয়েছে। বাকি ম্যাচ আমরা ভালো করেছি। নিয়ন্ত্রণ করেছি ম্যাচ। ওদের গোলও শোধ করেছি।’
মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচের আগে এর চেয়ে আর ভালো প্রস্তুতি হয় না বলেই মনে করেন বাংলাদেশের স্প্যানিশ কোচ, ‘ম্যাচ দুটি খেলে আমি খুবই সন্তুষ্ট। মূল ব্যাপার ছিল বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচের আগে প্রস্তুতিটা ভালো নেওয়া। আমাদের প্রস্তুতি অবশ্যই ভালো হয়েছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দুটি খেলার পর আমরা মালদ্বীপের বিপক্ষে আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলব। আমি মনে করি, আমরা পরের রাউন্ডে জায়গা করে নেব।’
সামনেই এশিয়ান গেমস। সেখানে অনূর্ধ্ব-২৩ দলের মোড়কে খেলবেন জাতীয় দলেরই ১০-১৫ জন খেলোয়াড়। কাবরেরা সেই দলের কোচ হিসেবেই থাকবেন। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের আগে এশিয়ান গেমসকে তাই আশীর্বাদ হিসেবেই দেখছেন কাবরেরা, ‘এশিয়ান গেমসে এই দলের অনেক খেলোয়াড় খেলবে। সে হিসেবে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের আগে তাদের প্রস্তুতিটাও ভালো হবে। কিছু খেলোয়াড় বসুন্ধরা কিংসের হয়ে খেলতে যাবে এএফসি কাপ। তারাও সর্বোচ্চ অনুশীলন সুবিধার মধ্যেই থাকবে। এশিয়াডে বাংলাদেশ খেলবে চীন, ভারত ও মিয়ানমারের বিপক্ষে। প্রস্তুতির জন্য এর চেয়ে বেশি আর কী চাই!’
আফগানিস্তানের কুয়েতি কোচের লাল কার্ড, নিজের সহকারী হাসান আল মামুনের লাল কার্ড নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি কাবরেরা। তবে তাঁর সন্তুষ্টি এমন একটা অনভিপ্রেত ঘটনার পরও নিজ দলের খেলোয়াড়দের মাথা ঠান্ডা রাখায়, ‘লাল কার্ড আমাদের দলে কোনো নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করতে পারেনি। বরং আফগানিস্তানের চেয়ে আমরা মাথা ঠান্ডা রেখেছিলাম। আমি আসলে রেফারির সঙ্গে ঘটনাটি নিয়ে আলাদাভাবে কথা বলিনি। তাই বলতে পারব না, কী হয়েছিল। তবে আপনারা সবাই দেখেছেন কী হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে নিশ্চয়ই আপনাদেরও অভিমত আছে।’