রক্ষণে বল 'ক্লিয়ার' করতে গিয়ে সামনে পেয়ে যান অরেলিয়াঁ চুয়ামেনি। ফাঁকা দেখে বলটা টান দিয়ে মাঝ মাঠ পার করে ঠেলে দেন বাঁ প্রান্তে ভিনিসিয়ুসকে। ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার পাস দেন ডানে সুবিধাজনক জায়গায় থাকা করিম বেনজেমাকে। ফরাসি তারকা পড়ে গিয়েছিলেন, উঠে দাঁড়িয়ে শট নেবেন ঠিক তখনেই পেছন থেকে বিদ্যুৎগতিতে ছুটে আসা ফেদে ফালভার্দের শট এবং গোল!
ধারাভাষ্যকার বলে উঠলেন, 'ফ্যান্টাস্টিক ফোর ফর রিয়াল মাদ্রিদ!'
একেবারেই তাই। সেল্তা ভিগোর মাঠে ৪-১ গোলে জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ। তবে গোলসংখ্যার জন্য ধারাভাষ্যকারের হলিউডের সুপারহিরো সিনেমার নাম বলার কথা নয়। চারটি বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী চার চরিত্র নিয়ে বানানো হয়েছিল ‘ফ্যান্টাস্টিক ফোর’। সেল্তার বিপক্ষে রিয়ালের চার গোলদাতার নাম দেখুন, করিম বেনজেমা, লুকা মদরিচ, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও ফেদে ভালভার্দে। রিয়ালের সব সুপারহিরোই তো! শুধু কাসেমিরোই নেই।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে কাসেমিরো নিশ্চয়ই দেখেছেন, তাঁকে ছাড়া প্রথম ম্যাচে কিছু টের পেতে দেননি বেনজেমা-মদরিচরা। চিরসবুজ মদরিচের বক্সের বাইরে থেকে বাঁকানো শটে করা গোলটি হতে পারে ব্রাজিলিয়ানের জন্য বিদায়ী উপহার। আর চুয়ামেনির জন্যও হয়তো করতালি।
কাসেমিরো যাওয়ার পর ফরাসি ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার যেন আগমনী বার্তাই ঘোষণা করলেন। বল কাড়ায় যেমন, তেমনি বলের জোগানেও। এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা ও মদরিচকে নিয়ে কার্লো আনচেলত্তির তিন মিডফিল্ডারের ছক পুরো নম্বরই পাবে।
ম্যাচের প্রথম দুটো গোল পেনাল্টি থেকে। দুটোতেই অপরাধ হ্যান্ডবল। ১৪ মিনিটে খেলার ধারার বিপরীতে পেনাল্টি পায় রিয়াল মাদ্রিদ। তার আগে সেল্তা দুটি গোলের ভালো সুযোগ তৈরি করেছিল। কিন্তু দলটির ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার রেনাতো তাপিয়া বক্সে হ্যান্ডবল করে বসেন। স্পটকিক থেকে লা লিগার এই মৌসুমে গোলের খাতা খোলেন বেনজেমা।
প্রায় ১০ মিনিট পরই রিয়ালের বক্সে এদের মিলিতাওয়ের হ্যান্ডবল, পেনাল্টি থেকে ইগো আসপাসের গোলে সমতায় ফেরে সেল্তা। কিন্তু মদরিচ অন্য কিছু ভেবে রেখেছিলেন।
৪১ মিনিটে সেল্তার বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের চিরচেনা বাঁকানো শটে গোল করেন ৩৬ বছর বয়সী এ মিডফিল্ডার। সেল্তার গোলকিপার অগাস্তির মার্চেসিন বাঁ দিকে একটু ঝুঁকলেও হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন, ওই শট ঠেকানো যায় না।
বিরতির পর ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডার আরও ক্ষুুরধার। যেমন ৫৬ মিনিটে ভিনিসিয়ুসকে দেওয়া নিখুঁত পাসটা, ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার একটু দৌড়ে সেল্তা গোলকিপারকে একা পেয়ে যান। লা লিগায় এবার গোলের খাতা খুলতে তাঁরও ভুল হয়নি। এরপর ৬৬ মিনিটে ভালভার্দের দারুণ গোলটির পর 'ফ্যান্টাস্টিক ফোর' তো বলাই যায়!
৮৩ মিনিটে ভিনির বদলি নামা এডেন হ্যাজার্ড পেনাল্টি মিস না করলে জয়ের ব্যবধান বাড়াতে পারত রিয়াল। ২ ম্যাচে ২ জয়ে ৬ পয়েন্ট পেল রিয়াল। অন্য দুটি ম্যাচে জিতেছে ওসাসুনা ও রিয়াল বেতিস। কাদিজকে ২-০ গোলে হারায় ওসাসুনা ও মায়োর্কার বিপক্ষে ২-১ গোলের জয় পেয়েছে বেতিস।