গার্দিওলা কি সিটিতে থাকবেন, নাকি অন্য ঠিকানায় যাবেন
পেপ গার্দিওলা হয়তো ম্যানচেস্টার সিটি ছাড়ার বিষয়ে এখনো মনস্থির করতে পারেননি। কিন্তু এখনই ইতিহাদের বাতাসে গার্দিওলার ক্লাব ছাড়ার গুঞ্জন ভাসছে। কদিন আগেও অবশ্য তাঁর ক্লাব ছাড়ার খবর সামনে এসেছিল, তবে সেবার এই খবর খুব বেশি ডালপালা মেলেনি। বরং গার্দিওলার সঙ্গে সিটির আরেকবার চুক্তি নবায়নের খবরই বেশি শোনা যাচ্ছিল। এখন অবশ্য পরিস্থিতি আবারও কিছুটা বদলে গেছে।
২০১৬ সালে সিটিতে আসার পর ক্লাবটির সঙ্গে আরও দুবার চুক্তি নবায়ন করেন গার্দিওলা। ২০২০ আর ২০২২ সালে সাফল্যের ধারাবাহিকতার কারণে গার্দিওলার চুক্তি নবায়ন একরকম অনিবার্য ছিল। দুই বছর পর এখন আবার নতুন করে তাঁর চুক্তি করা না–করা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এমনিতে অবশ্য এ মৌসুম শেষেই সিটির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে তাঁর। ধারণা করা হচ্ছে, এবারের আন্তর্জাতিক বিরতিতেই হয়তো এ বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য সামনে আসবে।
এর আগে অক্টোবরের আন্তর্জাতিক বিরতির সময়ও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শোনা গিয়েছিল। সেবার বিরতিতে আবুধাবি ঘুরতে গিয়েছিলেন গার্দিওলা। তবে সে সময় তিনি নাকি সিটির মালিক শেখ মনসুর কিংবা চেয়ারম্যান খালদুন আল মুবারকের সঙ্গে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলেননি। বিরতির পর গার্দিওলা জানান, নিজের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য তিনি কোনো তাড়া অনুভব করছেন না।
কারণ, তাঁর ধারণা, ক্লাবও বিষয়টি নিয়ে খুব একটা উদ্বিগ্ন নয়। পাশাপাশি আকস্মিক কোনো সিদ্ধান্তে ক্লাবকে চাপে ফেলবেন না বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি। গার্দিওলা বলেছিলেন, ‘যদি জানতে পারি যে আমি ক্লাবের জন্য সমস্যার, তবে আমি ব্যবস্থা গ্রহণে দেরি করব না। তেমনটা হলে আমি যত দ্রুত সম্ভব সিদ্ধান্ত নেব। কিন্তু আমার তেমন কিছু মনে হচ্ছে না।’
এর আগেও জানা গিয়েছিল, গার্দিওলা হয়তো তাঁর সিদ্ধান্ত নিয়ে কালক্ষেপণ করবেন না। এর কারণ, ক্লাবকে ভবিষ্যৎ নিয়ে অন্ধকারে না রাখা। পাশাপাশি গার্দিওলা যদি চলেও যান, তবে ক্লাব যেন ঠিকঠাকভাবে তাঁর বিকল্প খুঁজে পায়, সেটিকেও বিবেচনায় নিয়েছিলেন তিনি।
এখন গার্দিওলা যদি থাকার পরিকল্পনা করেন, তখনো কিন্তু কাজটা সহজ নয়। হ্যাঁ, অবশ্যই তাঁর থাকার কারণে ক্লাব আনন্দিত হবে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে তাঁকে নতুন করে কোচিং স্টাফ এবং পরিবারের সঙ্গে পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করতে হবে এবং এটা বোঝাতে হবে যে কেন তাঁর থেকে যাওয়া সবার জন্য ভালো। অন্যদিকে সিটির বিরুদ্ধে আনা ১১৫টি অভিযোগের রায়ের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে বলে জানা গেছে। রায় বিপক্ষে গেলে হয়তো পুরো বিষয়টি নতুন জটিলতা ধারণ করবে।
তবে এটাও অনেকে বিশ্বাস করেন যে সিটি যদি কঠিন শাস্তির মুখে পড়ে, তবে গার্দিওলা হয়তো ক্লাবে থেকেই যাবেন। কারণ, এর আগে তিনি বলেছিলেন, ক্লাবের জন্য সবচেয়ে ভালোটাই তিনি প্রত্যাশা করেন। এরপরও তেমন কিছু ঘটে গেলে সেটা সামলানো সহজ হবে না। তখন অনেকটা শূন্য থেকেই সব শুরু করতে হবে সিটিকে।
টানা চার মৌসুমে লিগ শিরোপা জেতা সিটি এখন মাঠে বেশ সংগ্রাম করছে। রদ্রিসহ দলের গুরুত্বপূর্ণ অনেকেই চোট আক্রান্ত।
এমন পরিস্থিতিতে গার্দিওলার সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত কেমন হবে, সে প্রশ্ন থেকেই যায়।
এসবের বাইরে আরেকটি বড় বিষয় হচ্ছে মাঠের পারফরম্যান্স। টানা চার মৌসুমে লিগ শিরোপা জেতা সিটি এখন মাঠে বেশ সংগ্রাম করছে। রদ্রিসহ দলের গুরুত্বপূর্ণ অনেকেই চোট আক্রান্ত। এর মধ্যে ২০১৮ সালের পর প্রথমবারের মতো টানা তিন ম্যাচ হেরেছে তারা।
এ ছাড়া মাঠের খেলায় চিরচেনা ধারও অনুপস্থিত। ফলে গার্দিওলাকে যেকোনো মূল্যে ধরে রাখা নিয়ে সিটিও হয়তো নতুন করে ভাবতে পারে। অবশ্য একদিক থেকে ভাবলে গার্দিওলার যাত্রা তো এখনো শুরুই হয়নি। বরাবরের মতো এবারও মৌসুমের শেষ দিকে কী চমক নিয়ে এই কোচ হাজির হন, তার ওপরও নির্ভর করছে অনেক কিছু।