টুখেল পেয়েছেন ‘মজা’ আর সিটি কি পেয়ে গেল সেমিফাইনালের টিকিট
ইতিহাদ স্টেডিয়ামে কাল রাতে বায়ার্ন মিউনিখ যখন মাঠের লড়াইয়ে কাবু হচ্ছিল, তখন ডাগআউটে দাঁড়িয়ে ‘মজা’ পাচ্ছিলেন দলটির কোচ টমাস টুখেল। কথাটা শুনতে অদ্ভুত শোনাচ্ছে? টুখেলের কথার তরজমা করলে কিন্তু এমনই মনে হয়!
চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল প্রথম লেগে কাল রাতে ম্যানচেস্টার সিটির মাঠে ৩-০ গোলে হেরেছে বায়ার্ন। পিএসজির কাছে ২০১৭ সালে ৩-০ গোলে হারের পর এই ছয় বছরে চ্যাম্পিয়নস লিগে এটাই সবচেয়ে বড় ব্যবধানের হার জার্মান ক্লাবটির। আর সেই হারই আবার চ্যাম্পিয়নস লিগে বায়ার্ন কোচ হিসেবে টুখেলের প্রথম ম্যাচ।
কিন্তু ম্যাচ শেষে জার্মান কোচের কথা শুনলে মনে হবে, এ হারকে তিনি পাত্তাই দিচ্ছেন না, ‘এ দলের সঙ্গে আমি কতটা ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি, তা ভেবে চমকে গিয়েছি। আজ (কাল) অনেক মজা হয়েছে। আমরা শক্তিশালী, কিছুটা আবেগপ্রবণ ও চালাকও ছিলাম।’
টুখেলের সম্ভবত পরিসংখ্যানে তেমন আগ্রহ নেই। নইলে প্রথম লেগে ডাগআউটে দাঁড়িয়ে শিষ্যদের তিন গোল হজম করা দেখে অন্তত ‘মজা’ পেতেন না! প্রথম লেগের স্কোরকার্ড কিন্তু দাবি করছে, ম্যানচেস্টার সিটি এরই মধ্যে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে একরকম উঠেই গেছে! টুখেল প্রশ্ন করতে পারেন, কীভাবে? ফিরতি লেগ এখনো বাকি আর সেটাও হবে বায়ার্নের মাঠে। আর দলটার নাম যেহেতু বায়ার্ন মিউনিখ, তাই এখনই তাদের বাতিলের খাতায় ফেলে দেওয়াটা তো একরকম বোকামিই।
হ্যাঁ, কথাগুলো বায়ার্ন সমর্থকদের শুনতে ভালো লাগতে পারে। তবে মুদ্রার অপর পিঠও কিন্তু আছে আর সেই ‘পিঠ’ দেখিয়ে দিচ্ছে পরিসংখ্যান।
ফুটবলের পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করা ‘মিস্টারচিপ (অ্যালেক্সিস)’ জানিয়েছে, দুই লেগের ম্যাচে ন্যূনতম ৩ গোলের ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ার পর বায়ার্ন কখনোই ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। শুধু চ্যাম্পিয়নস লিগ নয়, টুর্নামেন্টটির পূর্ববর্তী সংস্করণ ইউরোপিয়ার কাপকে হিসাবে নিলেও এমন কোনো নজির নেই। অর্থাৎ, কোয়ার্টার ফাইনাল ফিরতি লেগের আগেই যদি বলা হয় সেমিফাইনালের টিকিট পাচ্ছে সিটি, সেটা কি খুব বাড়াবাড়ি হয়? পরিসংখ্যানের দাবি তো তেমনই।
টুখেল জানিয়েছেন, প্রথম লেগের ফল থেকে খেলোয়াড়দের মনোযোগ সরাতে চান। কারণ, ইতিহাদের ফল মাথায় থাকলে ফিরতি লেগে তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। আর ফিরতি লেগে যে বায়ার্ন মরণকামড় দেবে, সে কথাও জানিয়ে রাখলেন টুখেল, ‘ঘুরে দাঁড়ানোর কাজটা খুব বড় চ্যালেঞ্জ হবে। তবে আমরা হাল ছাড়ছি না। জার্মানিতে ঘরের মাঠে ম্যাচ আছে। আর এ লড়াই এখনো শেষ হয়নি, যতক্ষণ না আমরা ড্রেসিংরুমে গিয়ে শাওয়ার (গোসল) নিচ্ছি, ততক্ষণ পর্যন্ত লড়াইয়ে আমরা আছি।’