তিন মাস পর বাফুফেতে ফিরলেন সালাউদ্দিন
খেলোয়াড়ি জীবনে তিন মাস মাঠের বাইরে কখনোই থাকেননি কাজী সালাউদ্দিন। সেই সালাউদ্দিনই বাফুফে ভবনে অনুপস্থিত থাকলেন টানা তিন মাস। গত ডিসেম্বরে গুরুতর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর বাইপাস অপারেশন করিয়েছেন। দেশে-বিদেশে পূর্ণ বিশ্রাম শেষে আজ বাফুফে ভবনে এসেছিলেন সভাপতি।
ফুটবল ফেডারেশন অফিসে ফিরে নিজের বাড়িতে ফেরার অনুভূতিই হয়েছে তাঁর, ‘ফুটবল আমার রক্তে আছে। ফুটবলের কাজে ফেরাটা তাই আমার ঘরে ফেরার মতোই।’
আজকের আগে গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর সর্বশেষ বাফুফে ভবনে এসেছিলেন সালাউদ্দিন। সেদিন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড়দের নামের একটি ফলক উন্মোচন অনুষ্ঠান ছিল। সেদিন শারীরিকভাবে খুব একটা সুস্থ ছিলেন না বলে জানালেন, ‘সেদিন শরীরটা খুব একটা ভালো ছিল না। অনুষ্ঠান ছিল, তাই এসেছিলাম। আমার তার আগে থেকেই রক্তচাপ বেশি ছিল। কিছুতেই নামছিল না। বাফুফে থেকে বাসায় গিয়ে দেখি রক্তচাপ অনেক বেশি, এরপর হাসপাতালে ভর্তি হই। পরের গল্পটা তো সবাই জানেনই।’
এর আগে খেলোয়াড়ি জীবনে হাঁটুতে একটা অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন সালাউদ্দিন। প্রায় ৪০ বছর পর এবার হৃদ্যন্ত্রে বাইপাস। তবে এবারের সঙ্গে কোনো কিছুরই তুলনা টানতে চান না বাফুফে সভাপতি, ‘আগে হাঁটুতে যে অস্ত্রোপচার হয়েছিল, সেটি প্রাণঘাতী কিছু ছিল না। শঙ্কা শুধু ছিল, আমি ফুটবল খেলতে পারব কি পারব না, এটিই। কিন্তু এবার তো জীবন নিয়েই শঙ্কা। অস্ত্রোপচারের ঘরে যখন যাচ্ছি, তখনো জানি না, আমি বেঁচে ফিরব কি না।’
অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ফাইনাল বাড়িতে বসে দেখেছি। ম্যাচ কমিশনারের সিদ্ধান্তে প্রচণ্ড বিরক্ত হয়েছি। সে আমার স্টাফ হলে আমি তাকে বরখাস্ত করতাম। এমন ভুল কেউ করে নাকি।কাজী সালাউদ্দিন, বাফুফে সভাপতি
বাফুফে সভাপতির বিশ্রামের সময়ই ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ টুর্নামেন্টের শিরোপা ভারতের সঙ্গে ভাগাভাগি করেছে বাংলাদেশ। কয়েক দিন আগেই নেপাল থেকে এল মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলের শিরোপা। সালাউদ্দিন সন্তুষ্ট মেয়েদের এই সাফল্যে, ‘আমি বাফুফের নারী উইংকে অভিনন্দন জানাই। তারা অন্তত সাফ অঞ্চলে বাংলাদেশের মেয়েদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে দিয়েছে। আমরা সিনিয়র সাফ জিতেছি, বয়সভিত্তিক সব ট্রফিই জিতেছি। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ফাইনাল বাড়িতে বসে দেখেছি। ম্যাচ কমিশনারের সিদ্ধান্তে প্রচণ্ড বিরক্ত হয়েছি। সে আমার স্টাফ হলে আমি তাকে বরখাস্ত করতাম। এমন ভুল কেউ করে নাকি। তবে আমি কোচ সাইফুল বারীকে বলেছি, কিছুটা বকাও দিয়েছি, মেয়েদের খেলা আরও সুন্দর হতে পারত। সেই জায়গায় একটু ঘাটতি আছে।’
কিছুদিন আগেই ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান তাঁর বারিধারার বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানে পারস্পরিক কুশলাদি বিনিময় ছাড়াও ফুটবল নিয়ে নানা কথা হয়েছিল। নাজমুল হাসান সেদিনই জানিয়েছেন নিজের প্রতিক্রিয়া। সেই সাক্ষাৎ নিয়ে আজ কথা বললেন সালাউদ্দিন, ‘পাপনের (নাজমুল হাসান) সঙ্গে আমার পারিবারিক সম্পর্ক। আমাদের মধ্যে সম্পর্ক সব সময়ই ভালো। বাইরের কিছু মানুষ এটা খারাপ বলে প্রচার করেছিল। ফুটবল নিয়ে সেদিন অনেক আলোচনা হয়েছে। দুনিয়াতে ফুটবলের অবস্থান কী, সেটা নাজমুল খুব ভালো করেই জানে। সেদিন আমার সঙ্গে কথা বলে ক্রীড়ামন্ত্রী যা যা বলেছে, সেটি প্রত্যাশিতই ছিল।’