যে ৪ কারণে লিওঁর কাছে হারল মেসি–এমবাপ্পের পিএসজি
হারের তেতো স্বাদ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিরতিতে যাওয়া, ফিরেও সেই একই স্বাদ। শুধু প্রতিপক্ষ আলাদা।
পার্ক দে প্রিন্সেসে রেনের কাছে ২-০ ব্যবধানে হারের পর গত রাতে অলিম্পিক লিওঁর কাছে ১-০ গোলে হেরেছে পিএসজি। ঘরের মাঠে এই নিয়ে টানা দুই ম্যাচ হারল তারা। ফ্রেঞ্চ লিগ ‘আঁ’-এর চলতি মৌসুমে এ পর্যন্ত যে ৫ ম্যাচে হারল পিএসজি, তার সব কটিই এ বছর।
লিওনেল মেসি-কিলিয়ান এমবাপ্পেরা থাকার পরেও কেন হারল পিএসজি, এমন ৪টি কারণ খুঁজে পাওয়া গেছে।
অন্তর্দ্বন্দ্বের প্রভাব
পিএসজিতে একতা আছে—মুখে যতই এমন বুলি আওড়ানো হোক, বাস্তবে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব এখন আর লুকিয়ে রাখার সুযোগ নেই। বেতনসংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে ক্লাবের সঙ্গে লিওনেল মেসির মন কষাকষির খবর চাউর হয়েছে সম্প্রতি। এমন খবরও এসেছে যে কিলিয়ান এমবাপ্পেও পিএসজিতে থেকে যাওয়ার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না। ড্রেসিংরুমের অস্বস্তিকর পরিবেশের প্রভাব মাঠেও পড়তে শুরু করেছে। দলের কারও মধ্যে জয়ের ক্ষুধা দেখা যাচ্ছে না। উল্টো লিওঁকে মেলে ধরার সুযোগ দিয়েছে পিএসজি। পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দল যে ১০ নম্বর দলের বিপক্ষে খেলছে, সেটা খেলার বেশির ভাগ সময়ই বোঝার উপায় ছিল না।
মেসি ও এমবাপ্পের গোলখরা
চোটের কারণে অনেক আগেই মৌসুম শেষ হয়ে গেছে নেইমারের। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের অভাব বুঝতেই দেবেন না লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপ্পে—এমন প্রত্যাশাই হয়তো করেছিলেন পিএসজির সমর্থকেরা। কিন্তু আক্রমণভাগের এই দুই তারকা সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সর্বশেষ ৪ ম্যাচে করতে পেরেছেন মাত্র একটি গোল। পিএসজিও সর্বশেষ ৪ ম্যাচের তিনটিতেই প্রতিপক্ষের জাল খুঁজে নিতে পারেনি। মেসি-এমবাপ্পে কাল বেশ কয়েকটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের গোলখরা দলকে খুব ভোগাচ্ছে। ভুগিয়েছে লিওঁর বিপক্ষেও।
রক্ষণের দুর্বলতা
সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সর্বশেষ ১৩ ম্যাচের ১২টিতেই গোল খেয়েছে পিএসজি। পিএসজির রক্ষণের দুর্বলতা বোঝার জন্য এ তথ্যই যথেষ্ট। গত রাতেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। আলেক্সান্দার লাকাজেত পেনাল্টি মিস না করলে হারের ব্যবধান আরও বড় হতে পারত প্যারিসের দলটির। দলের রক্ষণ ভঙ্গুর হয়ে পড়ার পেছনে আরেকটি কারণ সের্হিও রামোস, প্রেসনেল কিমপেম্বে ও নর্দি মুকিয়েলের অনুপস্থিতি। এই তিন অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার চোটের কারণে আপাতত মাঠের বাইরে আছেন। দানিলো পেরেইরা ও তরুণ চাদাই বিতশিয়াবুকে নিয়ে রক্ষণ সামলানোটা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে অধিনায়ক মার্কিনিওসের।
গালয়িতেরের ওপর চাপ
একদিকে দলকে ঐক্যবদ্ধ করার চ্যালেঞ্জ, অন্যদিকে নিজের চাকরি বাঁচানোর চেষ্টা—পিএসজি কোচ ক্রিস্তফ গালতিয়ের পড়ে গেছেন চাপে। বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায়ের পরেই প্যারিসজুড়ে ‘গালতিয়ের হটাও’ রব উঠেছে। পিএসজি কট্টর সমর্থকগোষ্ঠী তাঁকে বরখাস্তের দাবি তুলেছে। বেশ কয়েকজন তারকা খেলোয়াড়ের চোট ও অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণেও তিনি পছন্দের একাদশ সাজাতে পারছেন না। নেতিবাচক এ বিষয়গুলোরই প্রভাব পড়েছে মাঠে।