নেইমারের সঙ্গে কি মেসিকেও বিক্রি করে দিতে চায় পিএসজি
পিএসজিতে নেইমারকে ঘিরে এমন খবর নতুন কিছু নয়। গত বছর মার্চেই স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’ জানিয়েছিল, মৌসুম শেষেই নেইমারকে বেচে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে পিএসজি। খবরটি তখনো নতুন কিছু ছিল না। তার আগেও ব্রাজিলিয়ান তারকাকে ঘিরে এমন খবর বের হয়েছে।
কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে নাকি সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না নেইমারের। অগত্যা তাঁকে বেচে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে পিএসজি—এমন গুঞ্জন ইউরোপের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বেশ কয়েকবার খবর হয়েছে। এবারও তেমনই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। ফরাসি সংবাদমাধ্যম ‘ফুট মেরকাতো’র সংবাদকর্মী সান্তি আওনা জানিয়েছেন, শুধু নেইমার নয়, মেসিকেও নাকি ছেড়ে দিতে পারে পিএসজি।
ভ্রুকুটি জাগাই স্বাভাবিক। মেসির সঙ্গে নতুন চুক্তি নিয়ে কথা চলছে পিএসজির—এ খবর পুরোনো। আর্জেন্টাইন তারকা বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকেই এই নতুন চুক্তি নিয়ে কথা চলছে। কিন্তু সান্তি আওনার টুইটে রয়েছে অন্য কিছুর ইঙ্গিত, ‘মেসির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে পিএসজি সম্ভাব্য সবকিছুই করছে। দুই পক্ষই চুক্তির কাছাকাছি, তবে মেসির মনে সন্দেহ জেঁকে বসেছে।’
কি সেই সন্দেহ—প্রতিবেদনে সেসব খুলে বলা হয়নি। তবে মেসির নতুন চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এমনিতে মনে হচ্ছে, মেসির চুক্তি নবায়নের সম্ভাবনাই বেশি। তবে বিষয়টি যদি বাতিল না–ও হয়ে যায়, মেসির মনের মধ্যে অন্য ভাবনা আসাটা অস্বাভাবিক নয়। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর মেসির নতুন করে শুরুর ভাবনা আসতেই পারে। পিএসজি যদিও মেসির সঙ্গে এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে, তবে মনে হচ্ছে, দুই পক্ষই এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে ক্লাবের ভাগ্য জানার অপেক্ষায় আছে। (চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বাদ পড়লে) বার্সেলোনার সাবেক দুই খেলোয়াড়ের হিসাবটাও একই রকম হতে পারে। তখন নতুন যুগ শুরুর ঘোষণা দিতে পারেন পিএসজি সভাপতি।’
বার্সেলোনা থেকে ২০১৭ সালে নেইমারকে দলবদলের ফি–তে বিশ্ব রেকর্ড গড়ে দলে টেনেছিল পিএসজি। একই ক্লাব ছেড়ে ২০২১ সালে প্যারিসে নেইমারের সতীর্থ হন মেসি। চ্যাম্পিয়নস লিগে কাল রাতে শেষ ষোলো প্রথম লেগে বায়ার্ন মিউনিখের মুখোমুখি হবে পিএসজি। পেট্রো ডলারসমৃদ্ধ ক্লাবটি কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করে মেসি-নেইমার ও কিলিয়ান এমবাপ্পের মতো তারকাদের দিয়ে আক্রমণ সাজিয়েছে। ঘরোয়া পর্যায়ে সাফল্য পেলেও চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে পারেনি পিএসজি।
‘ফুট মেরকাতো’র প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, পিএসজির কাতারি মালিকপক্ষ প্রতি মৌসুমেই একই সমস্যায় পড়া (চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে না পারা) নিয়ে বিরক্ত। গত জুনেই এ নিয়ে বাঁকা কথা বলে রেখেছেন পিএসজির সভাপতি নাসের আল-খেলাইফি, ‘আমাদের সম্ভবত এমন দামি তারকার দরকার নেই। ঝলক দেখানোর যুগ শেষ হয়েছে।’
নেইমারের সঙ্গে পিএসজির বর্তমান চুক্তির মেয়াদ ২০২৭ পর্যন্ত। ২০১৯ সালে নেইমার প্যারিস ছাড়তে চাওয়ার পরও তাঁকে ক্ষমা করে দিয়ে চুক্তি নবায়ন করেছে ক্লাবটি।
কিন্তু কাতার বিশ্বকাপের পর থেকে পিএসজির হয়ে সেভাবে ভালো খেলতে পারছেন না নেইমার। ‘ফুট মেরকাতো’র প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ‘দোহায় (পিএসজির) কর্মকর্তারা মিলে ১০ নম্বর জার্সি (নেইমার) পরা খেলোয়াড়ের ভবিষ্যৎ ঠিক করেছেন। মৌসুম শেষে তাঁকে ছেড়ে দেবেন। সাম্প্রতিক সময়ে এই ইচ্ছা আরও জোরদার হয়েছে, কারণ তাঁর বাজে পারফরম্যান্স এবং সতীর্থদের সঙ্গে আচরণ, মোনাকোর বিপক্ষে ম্যাচেও যা দেখা গেছে। এখন দেখার বিষয়, নেইমার নিজের ইচ্ছা পাল্টান কি না।’
পিএসজির ক্রীড়া উপদেষ্টা লুইস কাম্পোস গত মৌসুম শেষেই জানিয়েছিলেন, কিছু খেলোয়াড়কে ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্লাব। শনিবার রাতে মোনাকোর কাছে পিএসজির ৩-১ গোলে হারের পর লুইস কাম্পোসের সঙ্গে কথা–কাটাকাটি হয় নেইমারের। পিএসজির দুই খেলোয়াড় ভিতিনহা ও উগো একিতেকেরও সমালোচনা করেন ব্রাজিলিয়ান তারকা।