গতবারের চ্যাম্পিয়ন গণ বিশ্ববিদ্যালয় বিদায় নিয়েছে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে। সেমিফাইনাল থেকে বাদ পড়েছে রানার্সআপ ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিও।
ইস্পাহানি-প্রথম আলো দ্বিতীয় আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবলের ফাইনালে উঠছে নতুন দুটি দল—ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (এআইইউবি)। আগামীকাল সোমবার বেলা আড়াইটায় সাভারের বিরুলিয়ায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মাঠে ফাইনাল।
ড্যাফোডিলের মাঠেই আজ দুটি সেমিফাইনাল হয়েছে। প্রথমটিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে এআইইউবির জয় ১-০ গোলে। পরের ম্যাচে স্বাগতিক ড্যাফোডিল ৩-০ গোলে হারিয়েছে ফারইস্টকে।
দুই ফেবারিট ড্যাফোডিল-ফারইস্ট ম্যাচটা দারুণ জমে উঠেছিল। স্বাগতিক হওয়ায় ড্যাফোডিলের দিকে সমর্থন ছিল একতরফা। মাঠের চারপাশ ভরে গিয়েছিল স্বাগতিকদের সমর্থকে। আশপাশের ভবনের ছাদ, বারান্দায় তিল পরিমাণ জায়গাও ছিল না। সমর্থকদের প্রত্যাশার প্রতি ষোলো আনা সম্মান দেখিয়ে ড্যাফোডিল খেলেছে চলতি টুর্নামেন্টে নিজেদের সেরা ফুটবল।
ড্যাফোডিলের হয়ে খেলেছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ডিফেন্ডার রহমত মিয়া ও ঈসা ফয়সাল। জাতীয় দলের ফরোয়ার্ড ফয়সাল আহমেদ ফাহিম ও গত বছর জাতীয় দলে ডাক পাওয়া ফরোয়ার্ড চন্দন রায় বেঞ্চে ছিলেন। ফাহিম খেলার অনুমতি পাননি তাঁর ক্লাব বসুন্ধরা কিংস থেকে। চন্দনের হালকা চোট ছিল। তাঁরা না থাকলেও ড্যাফোডিল এই ম্যাচে দাঁত ফোটাতে দেয়নি ফারইস্টের মতো বিশ্ববিদ্যালয় ফুটবলের পরাশক্তিকে।
প্রথমার্ধেই ব্যবধান ২-০ করে চাপটা অনেক কমিয়ে ফেলে ড্যাফোডিল। এর পেছনে বড় অবদান রেখেছেন ঈসা ফয়সাল। লেফটব্যাক ঈসা শুরু থেক ওভারল্যাপ করে আক্রমণে বল জোগান দিয়েছেন একের পর এক। ফারইস্টের রক্ষণ বিভ্রান্ত হয়েছে তাতেই।
১০ মিনিটে পাওয়া প্রথম গোলে অবদান রেখেছেন রহমত মিয়া। বক্সে বল ফেলেন রহমত, আলতো টোকায় বাকি কাজ সারেন ডিফেন্ডার রাজীব হোসেন। ৩২ মিনিটে কর্নার থেকে ফরোয়ার্ড মাহবুবুর রহমান জুয়েলের দুরন্ত হেডে ব্যবধান বেড়েছে। এরপর যোগ করা সময়ে মাহবুবুর রহমানের আরেকটি হেডে ৩-০। ফারইস্টের পোস্টের নিচে ছিলেন পাপ্পু হোসেন। জাতীয় দলে ডাক পাওয়া এই গোলকিপারও রক্ষা করতে পারেননি ফারইস্টকে।
জাতীয় দলের মিডফিল্ডার মোহাম্মদ হৃদয়, ডিফেন্ডার ইয়াছিন আরাফাত ছিলেন ফারইস্টের একাদশে। আক্রমণে স্বাধীন হোসেনসহ বেশ কয়েকজন প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলার নিয়েও ড্যাফোডিলের সঙ্গে পেরে ওঠেনি ফারইস্ট। দিনটা ছিল ড্যাফোডিলের, নির্দিষ্ট করে বললে মাহবুবুর রহমান জুয়েলের। দুই গোল করে হয়েছেন ম্যাচসেরা। টুর্নামেন্টে ড্যাফোডিলের ৫ ম্যাচে যেটি তাঁর তৃতীয় ম্যাচসেরার পুরস্কার।
প্রথম সেমিফাইনালে এআইইউবি জিতেছে যোগ্যতর দল হিসেবেই। গতবারের চ্যাম্পিয়ন গণ বিশ্ববিদ্যালয়কে কোয়ার্টার ফাইনালে ২-০ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে আসা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি–আক্রমণনির্ভর ফুটবল খেলছে। কিন্তু গোল পায়নি। ২০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে এআইইউবির একমাত্র গোলটি করেন ঢাকা মোহামেডানের ফরোয়ার্ড মইনুল ইসলাম।
বিরতির পর ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি এআইইউবি। মইনের শট লাগে ক্রসবারে। মইন ছাড়াও এআইইউবির জার্সিতে খেলেছেন প্রিমিয়ার লিগের আরিফুল হক, আজিজুল হক, নাবিল খন্দকার, আক্কাস আলীসহ আরও পাঁচ ফুটবলার। তবে সবাইকে ছাপিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন এআইইউবির অধিনায়ক ফয়েজ আহমেদ।
দুটি সেমিফাইনাল শেষে পুরস্কার বিরতণী অনুষ্ঠানে ছিলেন টুর্নামেন্টের টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান, জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ইমতিয়াজ সুলতান জনি ও অন্য অতিথিরা।
প্রথম ম্যাচে ছিলেন ইস্পাহানি গ্রুপের মানবসম্পদ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক ফারহানা আফরীন। দ্বিতীয় ম্যাচে ছিলেন ইস্পাহানি টি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক ওমর হান্নান, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স ডিরেক্টর প্রফেসর সৈয়দ মিজানুর রহমান ও ২০০৩ সালে বাংলাদেশের সাফজয়ী ফুটবলার রোকনুজ্জামান কাঞ্চন।