সন হিউন–মিন: মারামারি করে আঙুল ভেঙেছেন দক্ষিণ কোরিয়ান তারকা
৬ ফেব্রুয়ারি এশিয়ান কাপের সেমিফাইনালে জর্ডানের বিপক্ষে সন হিউন-মিনের হাতে স্ট্র্যাপ দেখে চমকে উঠেছিলেন অনেকেই। আগের দিন পর্যন্ত চোটে পড়ার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। কিন্তু ম্যাচে নামলেন আঙুলে সমস্যা নিয়ে। এর চার দিন পর প্রিমিয়ার লিগে ব্রাইটনের বিপক্ষে ম্যাচেও ডান হাতের আঙুলে স্ট্র্যাপ নিয়ে নামেন এই টটেনহাম তারকা।
এক সপ্তাহের বেশি সময় পর জানা গেল, দক্ষিণ কোরিয়ান সতীর্থদের সঙ্গে মারামারিতে জড়িয়ে আঙুল ভেঙেছেন সন। ৩১ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের ডান হাতের একটি আঙুল স্থানচ্যুত হয়েছে। এশিয়ান কাপ সেমিফাইনালের আগের রাতে দলের মধ্যে মারামারি বাধলে সেখানে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে নিশ্চিত করে কোরিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (কেএফএ)।
এশিয়ান কাপের সেমিফাইনালে জর্ডানের বিপক্ষে ২–০ ব্যবধানে হারে দক্ষিণ কোরিয়া। ম্যাচে জর্ডান গোলপোস্টে একটিও লক্ষ্যে শট নিতে পারেনি ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৬৪ ধাপ এগিয়ে থাকা সনদের দল।
জর্ডান ম্যাচের আগের রাতে সনদের মারামারির ঘটনা প্রথম সামনে আনে দ্য সান। আজ দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ জানায়, প্রকাশিত সংবাদটি সত্য বলে নিশ্চিত করেছে কেএফএ। কোরিয়ান ফুটবল সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ঘটনাটি ঘটেছে কিছু তরুণ খেলোয়াড় টেবিল টেনিস খেলতে যাওয়ার পর। সন হিউন–মিন এবং আরও কয়েকজন সিনিয়র খেলোয়াড় এটিতে জড়িয়ে যান। খেলোয়াড়দের মধ্যে ঝগড়া বেধে গেলে সন আঙুলে আঘাত পান।’
সেদিন রাতে কী ঘটেছিল জানা আছে, এমন একটি সূত্রের বরাতে ঘটনার বিস্তারিত প্রকাশ করেছে ইয়োনহাপ। পিএসজি উইঙ্গার লি কাং–ইন, সিওল ইয়ং–উ এবং জিয়ং উ–ইয়ংরা রাতের খাবার খেয়ে পাশের কক্ষে টেবিল টেনিস খেলতে যান। সনসহ অন্যরা আসেন পরে। খেতে বসে টেবিল টেনিস কক্ষ থেকে হইচইয়ের শব্দ শুনে তাঁদের শান্ত থাকতে বলেন অধিনায়ক সন। কিন্তু তারা শুনছিলেন না। একপর্যায়ে লির শার্টের কলার চেপে ধরেন সন। লি–ও খেপে গিয়ে সনকে ঘুষি মারেন, যদিও সন মাথা সরিয়ে নেওয়ায় আঘাত লাগেনি। দুজনের এই ধস্তাধস্তির মধ্যে অন্য খেলোয়াড়েরা এসে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টার সময় সনের আঙুল ভেঙে যায়।
দ্য সানের খবরে বলা হয়, মারামারির সূত্রপাত ঘটে সন তরুণ খেলোয়াড়দের চুপ করতে বলার পর তাদের পক্ষ থেকে কিছু অসম্মানজনক শব্দ ভেসে এলে। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগের দিন দলীয় সংহতি বাড়ানোর জন্য সবাই একসঙ্গে ডিনার করার পরিকল্পনা ছিল সনের। কিন্তু টেবিল টেনিস খেলার জন্য তরুণ খেলোয়াড়েরা আগেভাগে খেয়ে ফেলায় অসন্তুষ্ট ছিলেন তিনি।
ইয়োনহাপের খবরে বলা হয়, ঘটনার পর কিছু সিনিয়র খেলোয়াড় (সন ছাড়া) কোচ ইয়ুর্গেন ক্লিন্সমানকে বলেন, লিকে যেন পরদিন জর্ডানের বিপক্ষে না খেলানো হয়। তবে জার্মান কোচ তাদের অনুরোধে সাড়া দেননি। অন্য ম্যাচগুলোর মতো জর্ডানের বিপক্ষেও শুরুর একাদশে ছিলেন লি।
লি এবং সন দুজনই এশিয়ান কাপে তিনটি করে গোল করেছেন। তবে শিরোপার স্বপ্ন নিয়ে কাতার যাওয়ার পর ফাইনালের আগেই ছিটকে যাওয়ায় ব্যাপক সমালোচনায় পড়েন তাঁরা। কোচ ক্লিন্সমানের চাকরি বহাল থাকা নিয়েও অনিশ্চয়তা আছে। বৃহস্পতিবার কেএফএ জাতীয় দল কমিটির সঙ্গে ক্লিন্সমানের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলবে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভিডিও কনফারেন্সে ক্লিন্সমানেরও যোগ দেওয়ার কথা আছে।