সেরার লড়াইটা মেসি–ফন ডাইকের

লিওনেল মেসি ও ভার্জিল ফন ডাইকছবি: রয়টার্স

৫ ফুট ৭ ইঞ্চি বনাম ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি। উচ্চতার পার্থক্য প্রায় এক ফুটের হলেও ফুটবলের সবুজ মঞ্চে তাঁরা লড়েন সমানে সমান। বলা হচ্ছে, আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড লিওনেল মেসি ও নেদারল্যান্ডসের সেন্টারব্যাক ভার্জিল ফন ডাইকের কথা। দুজনই নিজেদের পজিশনে এই সময়ের অন্যতম সেরা দুই তারকা। মেসির কাজ আক্রমণে গিয়ে দলকে এগিয়ে দেওয়ার এবং ফন ডাইকের দায়িত্ব সেই আক্রমণ সামলানোর। এই মিশন সামনে রেখে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে যাঁর যাঁর দেশের হয়ে মুখোমুখি হবেন দুজন।

দুই দলের মূল লক্ষ্য অভিন্ন। ৩৬ বছর পর তৃতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা সামনে রেখে লড়াইয়ে নামবে আর্জেন্টিনা। নেদারল্যান্ডসের চোখ নিজেদের ইতিহাস প্রথম শিরোপা জেতায়। ফুটবলে চিরায়ত দুঃখের প্রতীক হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া কমলা জার্সির দলটি যে এবার দুঃখের গল্পটাকে আস্তাকুঁড়ে ছুড়ে ফেলতে চায়। কঠিন এই মিশনে দুই দলের বাজির ঘোড়াও হবেন মেসি ও ফন ডাইক।

প্রথমেই বলা যাক মেসির কথা। মেসির বিশ্বকাপ–স্বপ্ন পূরণে এখন মাত্র তিনটি বাধা। আর তিনটি ম্যাচ জিতলেই পূর্ণতা পাবে মেসির বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার। যে ক্যারিয়ারে সব আছে, কেবল বিশ্বকাপ শিরোপাটা ছাড়া। তবে এই তিনটি ধাপ নিশ্চিতভাবে সবচেয়ে কঠিনও। যেখানে প্রথমটিতে মেসি পড়েছেন কমলা চ্যালেঞ্জের সামনে। আরও পরিষ্কার করে বললে ফন ডাইকের সামনে। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচ ও শেষ ষোলোয় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলা ম্যাচের চেয়ে শুক্রবার রাতে শেষ আটে ডাচ চ্যালেঞ্জ যে আরও কঠিন হবে, তা জানা আছে মেসিরও।

আরও পড়ুন

একই কথা অবশ্য ফন ডাইকদের নিয়েও বলা যায়। এখন পর্যন্ত যেসব ম্যাচ খেলেছেন, সে তুলনায় বেশ কঠিন হবে আর্জেন্টিনার বাধা পেরোনো। এই ম্যাচের আগেও ফন ডাইককে যথারীতি সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন শুনতে হচ্ছে মেসিকে সামলানো নিয়ে। তবে ডাচ অধিনায়ক ফন ডাইক বলেছেন, ম্যাচটা মেসির বিপক্ষে নয়, আর্জেন্টিনার বিপক্ষে খেলতে যাচ্ছেন তাঁরা।

তাই পুরো আর্জেন্টিনা দল নিয়েই পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন। ম্যাচটা যে শুধু তাঁদের দুজনের হবে না, সেটিই মনে করিয়ে দিয়ে ফন ডাইক বলেছেন, ‘তাঁর বিপক্ষে খেলা সম্মানের ব্যাপার। তবে এটা আমার সঙ্গে তার খেলা নয় কিংবা নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে মেসির খেলা নয়। এটা নেদারল্যান্ডস বনাম আর্জেন্টিনার। কেউ একা একটা কাজটা করতে পারবে না। আর তাদের অনেক ভালো এবং বিশ্বমানের খেলোয়াড় আছে। আমাদের ভালো পরিকল্পনা নিয়েই এগিয়ে আসতে হবে।’

আরও পড়ুন

মেসির বিপক্ষে কীভাবে পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন জানতে চাইলে ফন ডাইক বলেছেন, ‘আমরা নিজেরা যখন আক্রমণে যাই, তখন তাকে সামলানো কঠিন। সে কোনো এক কোনায় কিছু একটা করতে থাকে। রক্ষণ সামলানোর ক্ষেত্রে আপনাকে খুবই নিখুঁত হতে হবে। কাউন্টারে তারা সব সময় তাঁকে খুঁজে নিতে চাইবে, যাতে আমাদের কাজটা কঠিন হয়ে যায়।’

মেসিও অবশ্য জানেন, ফন ডাইক তাঁর জন্য কত বড় বাধা হতে পারেন। এর আগে লিভারপুলের বিপক্ষে বার্সেলোনার হয়ে ফন ডাইকের মুখোমুখি হয়েছিলেন ‘এলএম-১০’।

আরও পড়ুন

ফন ডাইককে নিয়ে এর আগে একবার মেসি বলেছিলেন, ‘সে এমন একজন ডিফেন্ডার যে তার টাইমিং সম্পর্কে খুব ভালো জানে। চ্যালেঞ্জ করতে সে সঠিক মুহূর্তের জন্য অপেক্ষায় থাকে। সে দ্রুতগতিসম্পন্ন এবং উচ্চতার কারণে বেশ সুবিধাও পেয়ে থাকে। ডিফেন্স ও অ্যাটাক—দুই জায়গাতেই সে দারুণভাবে মুগ্ধতা ছড়াতে পারে।’