মাঠে মদ নিষিদ্ধ: নিরাপদ বোধ করছেন নারী দর্শকেরা

নিরাপদে বিশ্বকাপ উপভোগ করছেন নারী দর্শকরাছবি: এএফপি

দর্শক, বিশেষ করে পশ্চিমা দর্শকদের কাছে বিশ্বকাপের স্বাগতিক হিসেবে কাতার নিয়ে খুব উচ্ছ্বাস ছিল না। সেই ২০১০ থেকেই কাতার তাদের কাছে ‘ভয়ংকর এক দেশ’।

কাতারের মানবাধিকার পরিস্থিতি, নারীর পোশাকের স্বাধীনতা ইত্যাদি নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে, প্রকাশ করা হয়েছে নানা রকম শঙ্কা। বিশ্বকাপ শুরুর ক্ষণেও দর্শকদের মধ্যে কাতার নিয়ে অনেক দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করেছে। কিন্তু বিশ্বকাপ শুরুর পর থেকে যতই দিন গেছে, সেই ধারণার পরিবর্তন হয়েছে অনেক।

পশ্চিমা দর্শকেরা মাঠে খেলা দেখতে দেখতে বিয়ার পানে অভ্যস্ত। বিশ্বকাপে এর আগের প্রায় সব আসরে সেই সুবিধা ছিল। কিন্তু এবার কাতার পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছিল, মুসলিম অধ্যুষিত দেশটি কোনোভাবেই মাঠে অ্যালকোহল বিক্রির অনুমতি দেবে না।

এ নিয়ে সমালোচনা ছিল। অনেকেই মনে করেছিলেন এতে খেলা দেখার মজাই আর থাকবে না। কিন্তু বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের শেষাংশে এসে দেখা যাচ্ছে মাঠে অ্যালকোহল নিষিদ্ধ থাকার কারণে নারী দর্শকেরা নিজেদের নিরাপদই মনে করছেন।

আরও পড়ুন

ইংল্যান্ড থেকে খেলা দেখতে আসা এলি মলোসন বলেছেন, ‘আমি মনে করেছিলাম কাতার মেয়েদের জন্য খুবই ভয়ংকর একটা জায়গা। আমি নিজের নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তিত ছিলাম। কিন্তু এখানে আসার পর যত দিন যাচ্ছে, মনে হচ্ছে আমি যা ভেবেছি, সেটি ঠিক ছিল না। নারী হিসেবে কাতারে ঘুরে আমি নিরাপদ বোধ করেছি।’

মলোসন নিজে একটি নারীবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। ‘হার গেম টু’ নামের সেই সংগঠন ফুটবলে নারী দর্শকদের অংশগ্রহণ নিয়ে কাজ করে থাকে। তিনি জানিয়েছেন, কাতার আসার আগে তাঁর বাবা এতটাই অস্বস্তিতে ছিলেন যে তিনি শেষ পর্যন্ত এখানে তাঁর সঙ্গী হয়েছেন।

কাতারে মাঠের খেলাও জমে উঠেছে
ছবি: রয়টার্স

মাঠে অ্যালকোহল নিষিদ্ধ থাকাটাকেও ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন মলোসন, ‘মাঠে যেকোনো ধরনের অ্যালকোহল নিষিদ্ধ থাকাটা ভালো হয়েছে। এতে গ্যালারির পরিবেশ ভালো থাকছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে হইহুল্লোড় পছন্দ করি। উদ্দামতায় আমার আপত্তি নেই। তবে কাতারের স্টেডিয়ামগুলোর পরিবেশ অনেক ভালো, শান্ত। বেশ “পারিবারিক”।’

আরও পড়ুন

আর্জেন্টাইন নারী দর্শক আরিয়ানা গোল্ডও বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে প্রায় একই কথা বলেছেন, ‘কাতারে আসার আগে আমি ঠিক স্বস্তি পাচ্ছিলাম না। ভেবেছিলাম, এখানকার পরিবেশটা খুবই কট্টর হবে। ভেবেছিলাম এই দেশটা খালি পুরুষদের, মেয়েদের জন্য অস্বস্তিকর। কিন্তু না, আমি এই দেশে খুব আনন্দে আছি, স্বস্তিতে আছি।’

ইংল্যান্ডের শেফিল্ড থেকে আসা এমা স্মিথও গলা মিলিয়েছেন মলোসন ও আরিয়ানার সঙ্গে, ‘আমি এখানে খুবই নিরাপদ বোধ করছি। কোনো সমস্যা নেই। অ্যালকোহল নিষিদ্ধ থাকাটা বরং নারীদের জন্য অনেক নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করেছে।’