গুলি করার ভঙ্গি ও স্যালুটে সাবিনাদের উদ্যাপনের পেছনে...
একের পর এক গোল করছেন সাবিনা খাতুনেরা। এরপর গ্যালারির দিকে ছুটে এসে করছেন অদ্ভুত ভঙ্গিমায় উদ্যাপন। নেপালে অনুষ্ঠানরত মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে মারিয়া–কৃষ্ণাদের গোল উদ্যাপন আলাদা করে সবার নজর কেড়েছে। সেই উদ্যাপনে কখনো ছিল গুলি করার ভঙ্গি, কখনো স্যালুট। যে উদ্যাপনের মূলে মুক্তিযুদ্ধ এবং প্রতিপক্ষ পাকিস্তান।
কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতেছে ৬-০ গোলে। উঠে গেছে সেমিফাইনালে, ১৩ সেপ্টেম্বর গ্রুপের শেষ ম্যাচে প্রতিপক্ষ সাফের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত। এই ম্যাচ সামনে রেখে আজ দশরথ স্টেডিয়ামের লাগোয়া আর্মি হেডকোয়ার্টার মাঠে হালকা অনুশীলন করেছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। সেই অনুশীলনের শুরুতেও দেখা গেল একই উদ্যাপন। ভঙ্গিটা ঠিকমতো করতে পারছিলেন না কৃষ্ণা, যা দেখে অধিনায়ক সাবিনা বলে উঠলেন, ‘তোকে আরও প্র্যাকটিস করতে হবে।’ এরপর মারিয়া মান্দা ওই উদ্যাপনের ভঙ্গি দেখিয়ে দিলেন কৃষ্ণাকে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে এভাবে উদ্যাপনের পরিকল্পনাটা হয়েছে ম্যাচের আগের রাতের টিম মিটিংয়ে। দলের ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম যা জানিয়ে বললেন, ‘ম্যাচের আগের রাতে মেয়েদের অনুপ্রাণিত করতে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের গল্প শুনিয়েছিলাম। যুদ্ধের সময় তো এই মেয়েদের কারও জন্ম হয়নি। সেমিফাইনালে উঠতে আমাদের পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় দরকার ছিল, তাই মেয়েদের তাতিয়ে তুলতে পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের অতীতটা বুঝিয়ে বলেছিলাম।’
টিম মিটিংয়ের সেই অনুপ্রেরণা যে বেশ কাজে লেগেছে, সেটা বোঝা গেল মাঠে। হ্যাটট্রিক করে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া সাবিনা বলছিলেন, ‘ওদের বিপক্ষে ম্যাচে নামলে মুক্তিযুদ্ধের কথা মনে পড়ে যায়। আমাদের মনের জোর বেড়ে যায়। একাত্তর সালে যাঁরা যুদ্ধ করেছিলেন, যাঁরা শহীদ হয়েছিলেন, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমাদের পরিকল্পনা ছিল গোল করার পর আমরা এভাবে উদ্যাপন করব।’
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচেও যদি উদ্যাপনের উপলক্ষ আসে, সেটি কীভাবে করা যায়, তা নিয়ে ভাবছেন টানা দুই ম্যাচে সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি পাওয়া সাবিনা, ‘ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে কীভাবে উদ্যাপন করব, সেটা ভাবছি। পাকিস্তানের বিপক্ষে যেভাবে উদ্যাপন করার পরিকল্পনা ছিল, সেটা আমরা করেছি। আশা করি, আমরা প্রতি ম্যাচেই জিতে অনেক রকম উদ্যাপন করব।’