বিশ্বের অন্যতম সেরা মিডফিল্ড ও আক্রমণভাগ নিয়ে এবারের ইউরো খেলতে এসেছে ইংল্যান্ড। জুড বেলিংহাম, ফিল ফোডেন, বুকায়ো সাকা এবং হ্যারি কেইনরা বিশ্বের যেকোনো শক্তিশালী রক্ষণভাগকে কাঁপিয়ে দিতে যথেষ্ট। ক্লাব ফুটবল মাতিয়ে আসা এই তারকাদের কারণে ইউরোর আগে থেকেই ফেবারিট হিসেবে উচ্চারিত হচ্ছিল ইংল্যান্ডের নাম। তবে মাঠে এখনো নিজেদের সেরাটা উপহার দিতে পারেননি বেলিংহাম–ফোডেনরা।
প্রথম ম্যাচে ১–০ গোলে সার্বিয়াকে হারানো ইংল্যান্ডকে এবার রুখেই দিল ডেনমার্ক। গ্রুপ ‘সি’তে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ড্র হয়েছে ১–১ গোলে। এ ম্যাচ জিতলে জামার্নির পর দ্বিতীয় দল হিসেবে শেষ ষোলোর টিকিট পেতে পারত ইংলিশরা। কিন্তু পয়েন্ট হারানোয় এখন গ্রুপের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে গ্যারেথ সাউথগেটের দলকে।
সময়ের অন্যতম সেরা আক্রমণভাগ নিয়ে নিয়ে শুরু থেকেই আক্রমণকে পাখির চোখ করে ইংল্যান্ড। মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডেনিশ–রক্ষণকে চাপে ফেলার চেষ্টা করে তারা। তবে প্রতিপক্ষের অ্যাটাকিং থার্ডে খুব একটা সুবিধা করতে পারছিল না ‘থ্রি লায়ন্স’রা। অন্য দিকে ডেনমার্কও অবশ্য নিজেদের গুটিয়ে রাখেনি। ইংল্যান্ডের আক্রমণ ঠেকিয়ে প্রতি–আক্রমণ থেকে সুযোগ তৈরির চেষ্টা করছিল তারাও। ১৩ মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ এসেছিল ইংলিশ তারকা ফিল ফোডেনের সামনে। তবে জায়গা বের করে ফোডেনের নেওয়া শট চলে বারের ওপর দিয়ে।
১৮ মিনিটে অবশ্য ইংল্যান্ডকে ঠিকই গোল এনে দেন হ্যারি কেন। দারুণ এক দলীয় আক্রমণ থেকে এই গোল করেন ইংলিশ অধিনায়ক। তবে এই গোলে বড় কৃতিত্ব রাইট–ব্যাক কাইল ওয়াকারের। ডান প্রান্তে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড় ভিক্টর ক্রিস্টিনসেনের সামনে থেকে ছোঁ মেরে বল ছিনিয়ে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাসটি বাড়ান ওয়াকারই।
পিছিয়ে পড়ে ডেনমার্ক অবশ্য ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। কয়েকবার ইংলিশ রক্ষণে হুমকিও তৈরি করে তারা। কিন্তু সমতাসূচক গোলটি পাওয়া হচ্ছিল না তাদের। ২৯ মিনিটে গোলের কাছাকাছি গিয়েও শেষ পর্যন্ত গোলটি পাওয়া হয়নি ডেনমার্কের। ইংলিশ রক্ষণের দৃঢ়তায় সে যাত্রায় হতাশ হতে হয় ডেনিশদের।
সমতাসূচক গোলটি না মিললেও গোল হজম করার পর থেকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল ডেনমার্কের কাছেই। অবশেষে নিজেদের দাপুটে ফুটবলের সুফল ম্যাচের ৩৪ মিনিটে ঠিকই আদায় করে নেয় তারা। বক্সের বেশ বাইরে থেকে মর্টেন হিলমান্ডের নেওয়া দুর্দান্ত শট ইংলিশ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ডকে ফাঁকি দিয়ে জালে জড়ালে ম্যাচে ফেরে ডেনিশরা।
সমতা ফিরিয়ে ডেনমার্ক আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী ফুটবল খেলতে শুরু করে। ইংল্যান্ডের বিখ্যাত মিডফিল্ডার এবং ফরোয়ার্ডদের যেন এ সময় খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না। বিশেষ করে প্রথম ম্যাচে জয়ের নায়ক জুড বেলিংহাম এ সময় একেবারেই নিষ্ক্রিয় ছিলেন। ইংল্যান্ডের হয়ে ফোডেনকেই কিছুটা আলো ছড়াতে দেখা গেছে। বিরতির আগে অবশ্য কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয় ইংল্যান্ড। শেষ দিকে ফোডেনের আরও একটি শট বারের ওপর দিয়ে গেলে সমতাতে শেষ হয় প্রথমার্ধ।
বিরতির পর দুই দলই চেষ্টা করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার। তবে কোনো দলেই এককভাবে আধিপত্য তৈরি করতে পারেনি এ সময়। ৫৬ মিনিটে ফোডেনের শট ফিরে আসে পোস্টে লেগে। ৭১ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ এসেছিল ওলি ওয়াটকিনসের সামনে। তবে ডেনিশ গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি অ্যাস্টন ভিলা ফরোয়ার্ড। অন্য দিকে ডেনমার্ক চেষ্টা করছিল বক্সের বাইরে থেকে শট নিয়ে পিকফোর্ডকে চমকে দিতে। তবে আর কোনো সাফল্য পায়নি তারাও। শেষ পর্যন্ত ১–১ গোলের ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে দুই দলকে।