হেলিকপ্টার থেকে নেমে ঘোড়ায় চড়ে তরবারি হাতে ‘রাজা’ ভিদাল

চিলির ক্লাব কোলো কোলো ভিদালকে রাজার সাজে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেকোলো কোলো এক্স অ্যাকাউন্ট

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মেইল অনলাইনের প্রশ্ন—ফুটবল ইতিহাসে খেলোয়াড়কে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার এটাই কি সবচেয়ে পাগলাটে নজির? সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এমন সব প্রশ্ন তুলছেন ফুটবলপ্রেমীরা। কারণটা আরতুরো ভিদাল ও কোলো-কোলো।

আরও পড়ুন

সবার আগে কোলো-কোলোর পরিচয়টা দেওয়া যাক। তারা চিলির ঘরোয়া ফুটবলে সবচেয়ে সফল ক্লাব হিসেবে স্বীকৃত। চিলির প্রিমিয়ার লিগ জিতেছে রেকর্ড ৩৩ বার এবং এই লিগ ১৯৩৩ সালে যাত্রা শুরুর পর কোলো–কোলো এই প্রতিযোগিতা থেকে কখনো অবনমনের শিকার হয়নি। আর ভিদাল তো চেনা তারকাই।

চিলির ৩৬ বছর বয়সী মিডফিল্ডারের শৈশব কেটেছে কোলো–কোলোর বয়সভিত্তিক দলে। ২০০৫ সালে ক্লাবটির মূল দলে অভিষেক। দুই বছর সেখানে কাটিয়ে ভিদাল সেই যে দেশ ছাড়লেন, তারপর জার্মানি, ইতালি, স্পেন ও ব্রাজিলিয়ান ফুটবলে ঘুরতে ঘুরতে কেটে গেল দীর্ঘ ১৭ বছর। এ সময়ে বায়ার লেভারকুসেন, জুভেন্টাস, বায়ার্ন মিউনিখ, বার্সেলোনা, ইন্টার মিলান, ফ্লামেঙ্গোর হয়ে কম শিরোপা জেতেননি ভিদাল। কিন্তু কালে কালে বেলা তো কম হলো না! ক্যারিয়ারের গোধূলিলগ্নে এসে ভিদাল তাই দীর্ঘ ১৭ বছর পর ফিরলেন শৈশবের ক্লাব কোলো-কোলোয়। গত বৃহস্পতিবার তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের খেলোয়াড় হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয় ক্লাবটি। আর সেই পরিচয়পর্ব দেখে ‘দ্য লর্ড অব দ্য রিংস’ সিরিজের শেষ সিনেমাটার নামটা মনে পড়তে পারে—‘দ্য রিটার্ন অব দ্য কিং’!

মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে হেলিকপ্টার থেকে নামছেন ভিদাল
কোলো কোলো এক্স অ্যাকাউন্ট

হ্যাঁ, রাজার মর্যাদা দিয়েই ভিদালকে নিজেদের খেলোয়াড় হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে কোলো–কোলো। সান্তিয়াগোর মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে পরিচয়পর্ব অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া প্রায় ৩৫ হাজার সমর্থক যেন তাঁর ‘প্রজা’, আর ‘রাজা’ ভিদাল হেলিকপ্টার থেকে নেমে নাইটের সাজে চড়েছেন ঘোড়ায়। মাথায় মুকুট, হাতে নাঙা তরবারি!

আরও পড়ুন

ভিদাল আসার আগে তিনজন শিল্পী দিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গ্যালারিভর্তি সমর্থকদের মাতিয়ে রেখেছিল কোলো–কোলো। প্রায় এক ঘণ্টা পর হেলিকপ্টারে করে মাঠে আসেন ভিদাল। ক্লাবের জার্সি পরে তিনি হেলিকপ্টার থেকে নামতেই হর্ষধ্বনি করে ওঠেন সমর্থকেরা। তাঁদের অভিবাদনের জবাবে হাত নাড়েন চারপাশে। এরপর কাঁধে লম্বা আলোয়ান চাপিয়ে ভিদাল চড়ে বসেন ঘোড়ায়। মাথায় মুকুট ও খাপ খোলা তলোয়ার হাতে নিয়ে ঘোড়ায় চড়ে মাঠ প্রদক্ষিণ করেন কিছুক্ষণ। খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ারে ‘ওয়ারিয়র’ ও ‘কিং আর্থার’ তকমা পেয়েছেন ভিদাল। খেলার মাঠে ‘রাজা’ তকমাটা অর্জন করে নেওয়াতেই সম্ভবত কোলো–কোলো তাঁকে রাজার মর্যাদায় পরিচয় করিয়ে দিল।

চমকে দেওয়া এই পরিচয়পর্বের মূল আকর্ষণ হয়ে ভিদাল নিজেও চমকেছেন
কোলো কোলো এক্স অ্যাকাউন্ট

সমর্থকদের জার্সি ও বলও উপহার দেন ভিদাল। এরপর মাইক্রোফোন হাতে জানিয়েছেন, এমন অভ্যর্থনা তাঁর কল্পনায়ও ছিল না, ‘এমনভাবে বরণ করে নেওয়া হবে, সেটা জানা ছিল বললে মিথ্যা বলা হবে। রোমাঞ্চ অনুভব করছি। হেলিকপ্টারে আসার সময় কী ভেবেছি, মনে নেই। কোলো–কোলোর সমর্থকদের ভালোবাসা অনুভব করছি।’

কোলো–কোলো তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার আগেই ক্লাবটির হয়ে মাঠে নেমেছেন ভিদাল। গত শনিবার চিলির ক্লাব এভারটনের বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়ে ২৩ নম্বর জার্সি পরে মাঠে নেমেছিলেন চিলি কিংবদন্তি।

আরও পড়ুন