সতীর্থদের চাপড়–থাপ্পড় খেতে কেমন লাগে বুঝলেন রুডিগার
ধরুন, আপনি কারও সঙ্গে প্রায় নিয়মিত একটা মজা করেন। যাঁর সঙ্গে করেন, সে যদি তা আপনাকে ফিরিয়ে দেয়, তখন কেমন লাগবে? এই অভিজ্ঞতা না থাকলে জিজ্ঞেস করতে পারেন আন্তনিও রুডিগারকে। বেচারা! গোল করে কেউ ওভাবে মার খায়!
চ্যাম্পিয়নস লিগে গতকাল রাতে রিয়াল মাদ্রিদ-স্টুটগার্ট ম্যাচ না দেখে থাকলে এই কথা শুনে ভ্রুকুটি জাগতে পারে। আত্মঘাতী গোল তো আর করেননি! গোল করেছেন দলের জন্য, সেখানে মার খাওয়ার প্রশ্ন আসছে কেন? মজার ব্যাপার হলো, এই প্রশ্নটাও রুডিগারকেই করা উচিত। তিনি-ই তো নাটের গুরু!
আন্তনিও রুডিগারকে আমি চাপড়–থাপ্পড়গুলো ফেরত দিয়েছি। সে আমাকে অনেক চাপড় মারে। এবার ছিল আমার তা ফিরিয়ে দেওয়ার পালা।কিলিয়ান এমবাপ্পে, রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড
খুলে বলা যাক। রিয়ালের ৩-১ গোলের জয়ে ৮৩ মিনিটে কর্নার থেকে হেডে দ্বিতীয় গোলটি রুডিগারের। লুকা মদরিচের কর্নার থেকে ১০ বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগে গোল পেল রিয়াল। সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল ২০১৪ লিসবনের ফাইনালে। সেই গোলদাতাও ডিফেন্ডার ছিলেন—সের্হিও রামোস, এবার রুডিগার। গোল করেই মাঠের এক কোণে ছুটে গিয়ে হাঁটু মুড়ে বসে পড়েন জার্মান এই ডিফেন্ডার।
পরের দৃশ্যটা যতটা মজার, তার চেয়েও বেশি বিস্ময়ের। রিয়াল ফরোয়ার্ড এনদ্রিক ও ডিফেন্ডার এদের মিলিতাও কী করলেন, হাঁটু ও মাথা মুড়ে ওপর হয়ে থাকা রুডিগারের পিঠে বেশ কয়েক ঘা বসিয়ে দিলেন! রীতিমতো থাপ্পড় আর কী, স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’ যার নাম দিয়েছে ‘শাওয়ার অব স্ল্যাপস’ বা থাপ্পর-বৃষ্টি। শুধু এনদ্রিক ও মিলিতাও-ই নয়, কিলিয়ান এমবাপ্পেও রুডিগারকে একই কায়দায় অভিনন্দন জানাতে ছাড়েননি।
প্রশ্ন হলো, কেন এমন অদ্ভুত কিন্তু ব্যথাতুর যন্ত্রণার উদ্যাপন? এমবাপ্পেই এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন এবং তাঁর সেই উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে মার্কা, ‘আন্তনিও রুডিগারকে আমি চাপড়–থাপ্পড়গুলো ফেরত দিয়েছি। সে আমাকে অনেক চাপড় মারে। এবার ছিল আমার তা ফিরিয়ে দেওয়ার পালা।’
ফরাসি তারকা মিথ্যা বলেননি। রিয়ালের হয়ে এ পর্যন্ত সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৭ ম্যাচে ৫ গোল করা এমবাপ্পে গোল করলেই রুডিগার উদ্যাপনের ছলে তাঁর পিঠে কয়েকটা চাপড় বসিয়ে দেন। অবশ্যই সেটি মজা কিংবা উদ্যাপনেরই অনুষঙ্গ। গতকাল রাতেই যেমন রুডিগারের পিঠে কয়েক ঘা পড়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। প্রায় সব ভিডিওতেই দেখা গেছে, এমবাপ্পে গোল করার পর রুডিগার এসে বেশ জোরের সঙ্গে তাঁর পিঠ চাপড়ে দিচ্ছেন। এই পিঠ চাপড়ে দেওয়াটা একটু জোরের ওপর হয়েছে বলেই সেটি কারও কারও চোখে থাপ্পর মনে হতে পারে।
ভীষণ মজার মানুষ রুডিগার গতকাল রাতে ম্যাচ শেষে অবশ্য এর শোধ তুলেছেন। মার্কা প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ম্যাচ শেষে হুট করেই ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের পিঠ বেশ জোরেই চাপড়ে দিলেন রুডিগার। বেচারা ভিনি ব্যথায় পিঠটা বাঁকিয়ে ফেলেন। স্বদেশি সতীর্থের এই ব্যথা পাওয়া সম্ভবত মেনে নিতে পারেননি রদ্রিগো। ব্রাজিল উইঙ্গার সঙ্গে সঙ্গে রুডিগারের পিঠে থাপ্পড় মারেন। জয়ের পর রিয়ালের খেলোয়াড়েরা এভাবে খুনসুটি ও মজা করে মাঠ ছাড়ার সময় দেখে মনে হয়েছে, এ যেন সুখী এক পরিবার!