‘নরকে’ অগ্নিপরীক্ষা ইউনাইটেডের

গালাতাসারাইয়ের বিপক্ষে নামার প্রস্তুতি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডেরম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এক্স হ্যান্ডলার থেকে

৩০ বছর আগের সেই ম্যাচটাও ছিল এমনই এক নভেম্বরে।

গালাতাসারাইয়ের মাঠে অতিথি হয়ে গিয়েছিল স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। চ্যাম্পিয়নস লিগেরই দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচ। ওল্ড ট্রাফোর্ডে প্রথম লেগটা ৩-৩ গোলে ড্র করে গিয়েছিল গালাতাসারাই। টিকে থাকতে হলে ইউনাইটেডকে তাই ওই ম্যাচটা জিততেই হতো।

ইউরোপের অন্য অতিথি দলগুলোর কাছে ‘নরক’ হিসেবে পরিচিত ইস্তাম্বুলের আলী সামি ইয়েন স্টেডিয়ামে এরপর যা হয়েছিল, তা নিয়ে ফার্গুসনের আত্মজীবনীতে একটা আলাদা অধ্যায়ই আছে। আছে ইউনাইটেডের সেই দলে খেলা বেশির ভাগ খেলোয়াড়ের আত্মজীবনীতেও।

ফার্গুসন পরে বলেছিলেন, ‘ফুটবল মাঠে যতটা শত্রুতা ও হয়রানির মুখোমুখি হওয়া সম্ভব, সবকিছুই আমাদের সঙ্গে হয়েছিল সেদিন।’ ইউনাইটেডের ওই দলের সেন্টারব্যাক গ্যারি প্যালিস্টার তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন, ‘প্রতিকূলতা কেমন হতে পারে, সেটা দেখেছিলাম সেদিন। আমার বাকি ক্যারিয়ারে আর কখনো এমন কিছু দেখিনি। আপনি দেখবেন আর ভাববেন, এর চেয়ে খারাপ কিছু হতে পারে না।’

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এক্স হ্যান্ডলার থেকে

ইউনাইটেড সেন্টারব্যাক স্টিভ ব্রুসের গায়ে সেদিন গ্যালারি থেকে ইট ছুড়ে মারা হয়েছিল, ম্যাচের শেষ দিকে গালাতাসারাই খেলোয়াড়দের সময় নষ্ট করা নিয়ে অভিযোগ জানাতে গিয়ে লাল কার্ড দেখেছিলেন এরিক ক্যান্টোনা, ইস্তাম্বুলের পুলিশ বেশ কয়েকজন ইউনাইটেড খেলোয়াড়ের গায়ে হাত তুলেছিলেন টানেল দিয়ে ফেরার পথে, ১৬৪ জন ইউনাইটেড সমর্থককে আটক করে জেলে ভরা হয়েছিল। গোলশূন্য ড্র করে সেবার তুরস্ক থেকে ফিরেছিল ইউনাইটেড, বাদ পড়েছিল চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে।

আরও পড়ুন

এরপর আরও দুবার তুরস্কে অতিথি হয়ে গেছে ইউনাইটেড এবং সেই ঘটনার রেশ ছিল সেই ম্যাচগুলোতেও। সেই ইউনাইটেড আজ আবার গালাতাসারাইয়ের অতিথি হয়ে তুরস্কে।

এটা অবশ্য নক আউট ম্যাচ নয়, গ্রুপ পর্বের লড়াই। কিন্তু গ্রুপে ইউনাইটেডের অবস্থা ৩০ বছর আগের চেয়ে খুব একটা ভালো নয়। ৪টি করে ম্যাচ শেষে শতভাগ জয়ের রেকর্ড নিয়ে এই গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বায়ার্ন মিউনিখ এরই মধ্যে শেষ ষোলোতে জায়গা নিশ্চিত করে ফেলেছে। বাকি তিন দলের মধ্যে কোপেনহেগেন ও গালাতাসারাইয়ের পয়েন্ট ৪, ইউনাইটেডের ৩।

আজ গালাতাসারাইয়ের কাছে হারলে ইউনাইটেডের গ্রুপে দ্বিতীয় হওয়ার সব আশা শেষ হয়ে যাবে। ড্র করলেও যে ক্ষীণ আশা থাকবে, সেটা এত ‘যদি-কিন্তু’র ওপর নির্ভরশীল, সে আশা ছেড়ে দেওয়াই ভালো।

এমন কঠিন সমীকরণের ম্যাচ, সেটাও আবার এমন একটা মাঠে যেখানে এত অস্বস্তিকর স্মৃতি, এরিক টেন হাগের দলের জন্য আজ অগ্নিপরীক্ষা ছাড়া আর কী!

আরও পড়ুন