বিশ্বকাপে সেরা গোল করা রিচার্লিসনকে ঘিরে বিতর্ক
আর্সেনাল গোলকিপার অ্যারন রামসডেল ভাবতেই পারেননি তাঁর সঙ্গে এমন কিছু হতে পারে। গতকাল টটেনহামের বিপক্ষে তাঁর দলের ২–০ গোলে জয়ের উদ্যাপন শুধু করেছিলেন। তখন কিনা টটেনহামের এক সমর্থকের কাছে তাঁকে লাথি খেতে হলো!
বিষয়টা যে নিন্দনীয়, বিবৃতি দিয়ে তা জানিয়ে দিয়েছে টটেনহাম কর্তৃপক্ষ। তাদের মাঠে খেলতে নেমে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের এমন হেনস্তা ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে অগ্রহণযোগ্য। টটেনহাম কথা দিয়েছে, সেই সমর্থককে দ্রুত খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা হবে। রামসডেলের লাথি খাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনও (এফএ)। কিন্তু টটেনহামের ব্রাজিলিয়ান তারকা রিচার্লিসন সবকিছু মেনে নিয়েও রামসডেলের ‘কর্মকাণ্ড’ সমর্থন করতে পারছেন না মোটেও।
বিশ্বকাপে সার্বিয়ার বিপক্ষে বাইসাইকেল কিকে দুর্দান্ত এক গোল করেছিলেন রিচার্লিসন। যেটিকে ভোটে কাতার বিশ্বকাপে সেরা গোলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। যদিও টটেনহামের জার্সিতে খেলতে নেমে গতকাল আর্সেনালের বিপক্ষে একপ্রকার নিষ্প্রভই ছিলেন রিচার্লিসন। ম্যাচের ৭১ মিনিটে কোচ আন্তোনিও কন্তে রিচার্লিসনকে নামালেও মাঠে দৌড়াদৌড়ি করেই বাকি সময়টা কাটিয়েছেন।
ম্যাচ শেষে রিচার্লিসন টটেনহামের দর্শকদের সামনে রামসডেলকে ‘উদ্যাপন’ করতে দেখে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। তিনি আর্সেনাল গোলকিপারকে ধাক্কা দিয়ে সরানোর চেষ্টা করেন। কিছু কথা–কাটাকাটিও হয় দুজনের। এরপর মাঠ ত্যাগের সময় টটেনহামের সেই উগ্র সমর্থকের লাথি খান রামসডেল।
ইএসপিএনকে রিচার্লিসন বলেছেন, রামসডেল কেন টটেনহামের দর্শকদের সামনে ওভাবে উদ্যাপন করতে গেলেন। আর্সেনালের গোলকিপার যেভাবে টটেনহামের দর্শকদের সামনে অঙ্গভঙ্গি করেছেন, সেটি অপমানসূচক বলেই মনে করেন রিচার্লিসন, ‘আমার কাছে বিষয়টা মোটেও ভালো লাগেনি। আর্সেনালের গোলকিপার যেভাবে উদ্যাপন করছিল, সেটি অপমানজনক। এটা আমাদের সমর্থকদের ভালো লাগেনি। সে এখানে এসে কেন উদ্যাপন করবে? আর্সেনালের সমর্থকেরা তো ছিল, তাদের সামনে গিয়েই জয়টা না হয় উদ্যাপন করত।’
রাসমডেলের সঙ্গে ঠেলাঠেলির জন্য শাস্তি পেতে পারেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। তবে রিচার্লিসন বলেছেন, শাস্তিকে ভয় পান না, ‘শাস্তিটাস্তি যা হয় হবে। আমি ভয় পাই না। খেলায় প্রতিপক্ষকে সম্মান জানানোটাই নিয়ম। কিন্তু রামসডেল সেটি করেনি। সে আমাদের অপমান করেছে। তার অন্যের প্রতি সম্মানবোধের অভাব রয়েছে। আমি তাঁর কাছে গিয়েছিলাম এই বিষয়টিই বলার জন্য।’
রিচার্লিসনের অবশ্য কেবল রামসডেলের সঙ্গেই লাগেনি। তাঁর সঙ্গে বেঁধেছিল গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি আর গ্যাব্রিয়েল মাগালহেসেরও। মার্তিনেল্লি কর্নার নিতে গেলে সাইডলাইনে ওয়ার্মআপ করতে থাকা রিচার্লিসন তাঁকে হাত দিয়ে বাধা দেন। এটির ব্যাখ্যা দিয়েছেন রিচার্লিসন, ‘আমি তাঁর কাছে ক্ষমা চাইতে পারি, আমার কোনো সমস্যা নেই। তবে হাত আমি নই, সে–ই আগে বাড়িয়েছিল। ব্রাজিল দলে আমরা সতীর্থ। এখানে একটি ডার্বি ম্যাচ খেলতে নেমেছিলাম দুজন দুই দলের হয়ে। এ ধরনের লড়াইয়ে এসব হয়েই থাকে। আমাদের মধ্যে কোনো সমস্যা নেই।’ গ্যাব্রিয়েলের সঙ্গে তাঁর সমস্যাটা ছিল খেলা আটকে রাখার জন্য, ‘গ্যাব্রিয়েল খেলা আটকে রেখেছিল। আমি বলছিলাম, খেলা শুরু করো। সে শুনছিল না। এ জন্য অবশ্য সে কার্ডও দেখেছে।’