সভাপতির পদ থেকে ইতোর পদত্যাগের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান ক্যামেরুন ফুটবল ফেডারেশনের
কয়েক দিন ধরেই তোলপাড় চলছে ক্যামেরুনের ফুটবলে। আফ্রিকা কাপ অব নেশনসের শেষ ষোলো থেকে বিদায়ে এমনিতেই হতাশা ছড়িয়ে পড়েছিল দেশটির ফুটবল অঙ্গনে। এর সঙ্গে যুক্ত হয় ক্যামেরুন ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি ও কিংবদন্তি ফুটবলার স্যামুয়েল ইতোর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি, অসদাচরণ এবং ম্যাচ পাতানোর অভিযোগও।
এসব অভিযোগের জেরে ফেডারেশন সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন ইতো। তবে তাঁর পদত্যাগের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটি।
সোমবার রাতে ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির এক বৈঠকে সভাপতি পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান ইতো। এ সময় তিনি বোর্ডের বাকি সদস্যদেরও পদত্যাগ করার আহ্বান জানান। তবে এক বিবৃতিতে ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটি ইতোর পদত্যাগের প্রস্তাব ‘সর্বসম্মতভাবে প্রত্যাখ্যান’—এর কথা জানিয়েছে। পাশাপাশি তারা ইতোর ওপর ‘দায়িত্ব চালিয়ে যেতে আস্থা পুনর্বহাল’ করার কথাও বলেছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ইতো ক্যামেরুন ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি নির্বাচিত হন।
ক্যামেরুন ফুটবল ফেডারেশনের এই বৈঠকটি ডাকা হয়েছিল মূলত আফ্রিকা কাপ অব নেশনসে নিজেদের পারফরম্যান্সের মূল্যায়নের লক্ষ্যে। এ প্রতিযোগিতায় চার ম্যাচের মাত্র একটিতে জয় পায় ক্যামেরুন। আর শেষ ষোলোতে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ২-০ গোলে হেরে বিদায় নেয় তারা।
মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে ব্যর্থতার রেশ কাটার আগেই ইতোর বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উঠে। যেখানে বলা হয় দেশের ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি হওয়ার পর অনিয়মের পাহাড় গড়ে তুলেছেন সাবেক এই বার্সেলোনা তারকা। তাঁর বিরুদ্ধে ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকা, মিথ্যা তথ্য ছড়ানো, হুমকি দেওয়া, সহিংসতামূলক কর্মকাণ্ডকে উসকে দেওয়া এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের মতো গুরুতর অভিযোগ সামনে আসে।
ক্রীড়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য অ্যাথলেটিক জানায়, ইতোর বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগগুলো নথি আকারে ফিফার নৈতিকতা কমিটিকে পাঠিয়েছেন ফেডারেশনের সাবেক সহসভাপতি হেনরি এনজাল্লা কুয়ান জুনিয়র। আর এই নথি ফিফার কাছে পাঠানোর আগে তদন্ত করে যাচাই করেছে আফ্রিকা মহাদেশের ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা (সিএএফ)।
অ্যাথলেটিকের সংবাদে বলা হয়, ইতোর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোর সত্যতা পেয়েছে সংস্থাটি। এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরেও ইতোকে ক্যামেরুন ফুটবল ফেডারেশনের পদ থেকে সরিয়ে দিতে ফিফার কাছে আহ্বান করেছিল সিএএফ। তবে এনজাল্লার এ কাজকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি ইতো। এমনকি সাবেক সহসভাপতিকে হুমকিমূলক বার্তাও পাঠান তিনি।
যেখানে লেখা ছিল, ‘আমি এই বিপ্লবের মাফিয়া এবং এখানে আমরা আমাদের নেতাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করি না। এখন পর্যন্ত আমি নিজেদের এ অভিযানের স্বার্থ রক্ষা করে চলেছি। আর তুমি যদি আমার সঙ্গে আজেবাজে কিছু করো, তবে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে।’
চাপের মুখে এখন অবশ্য ইতোকে ভিন্ন পথে হাঁটতে হচ্ছে। এমনকি পদত্যাগের সিদ্ধান্তও নিয়েছেন তিনি। এখন এই ঘটনা শেষ পর্যন্ত আর কোনো নাটকের জন্ম দেয় কি না, সেটিই দেখার অপেক্ষা।