ক্লপের অধীনে লিভারপুলের ১০০০ গোলের ভেতর–বাহির
লিভারপুলে ইয়ুর্গেন ক্লপ নিজের শেষ মৌসুম কাটাচ্ছেন। তবে বিদায়ের পথেও ক্লপ স্পর্শ করে যাচ্ছেন একের পর এক মাইলফলক। সম্প্রতি স্পার্তা প্রাহার বিপক্ষে ইউরোপা লিগ শেষ ষোলোর প্রথম লেগের ম্যাচে ৫–১ গোলে জিতেছে ‘অল রেড’রা। এ জয়ের পথে ক্লপের অধীনে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এক হাজার গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছে লিভারপুল।
২০১৫ সালের অক্টোবরে ক্লপ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে লিভারপুলকে সম্ভাব্য সব শিরোপা জেতানোর পথে এই এসেছে এই গোলগুলো। তবে গোলের ধারা অবশ্য থেমে যায়নি। আরও তিন মাস লিভারপুলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ক্লপ। নিশ্চিতভাবে এ তালিকা আরও সমৃদ্ধ হবে। সম্প্রতি ক্লপের অধীনে লিভারপুলের করা এক হাজার গোলকে বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছে ক্রীড়াভিত্তিক পোর্টাল দ্য অ্যাথলেটিক।
সবচেয়ে বেশি গোল কার, সহায়তা কার
এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই যে লিভারপুলে ক্লপের অধীনে সবচেয়ে বেশি গোল এসেছে মোহাম্মদ সালাহ (২০৬), সাদিও মানে (১২০) এবং রবার্তো ফিরমিনোর (১১১) কাছ থেকে। ক্লপ যুগে এ তিনজনই সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন। লিভারপুলের আক্রমণভাগকে বিধ্বংসী রূপ দিয়েছিলেন এ ত্রয়ী। এ তিনজনের পর তালিকায় আছেন দিয়োগো জোতা।
যদিও অনেক পিছিয়ে মাত্র ৫৫ গোল করেছেন জোতা। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এ তালিকায় দলের সেন্টারব্যাক এবং বর্তমান অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইকও আছেন। যিনি করেছেন ২৩ গোল। সম্প্রতি লিগ কাপ ফাইনালে জয়সূচক গোলটাও এসেছিল তাঁর কাছ থেকে। গোল করার মতো সহাতায়ও সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছেন সালাহ। যিনি সহায়তা করেছেন ৮৩ গোলে। এরপর ৭৯ গোলে সহায়তা করেছেন ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার আরনল্ড।
কোন মৌসুমে কত গোল
ক্লপের প্রথম মৌসুমে ২০১৫–১৬ তে লিভারপুল গোল করেছিল ৮৭টি। পরের মৌসুমে লিভারপুল গোল করে ৯২টি। কিন্তু ২০১৭–১৮ মৌসুমে গোল বন্যায় ভাসিয়ে দেয় ‘অল রেড’রা। অথচ সেরা প্রিমিয়ার লিগে চতুর্থ স্থানে থেকে শেষ করে ক্লাবটি। তবে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে ওঠার পথে ৪৭ গোল করেছিলেন ক্লপের শিষ্যরা। ক্লপের অধীনে তিনবার চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে খেলে লিভারপুল। যদিও একবারের বেশি শিরোপা জেতা হয়নি। তবে এ প্রতিযোগিতায় লিভারপুল সব মিলিয়ে করে ১৫০ গোল।
কার বিপক্ষে কত গোল
ক্লপের দাপটের সবচেয়ে বড় শিকার আর্সেনাল। এমিরেটসের ক্লাবটির বিপক্ষে লিভারপুল গোল করেছে ৫৫টি। ১০ গোল পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে বোর্নমাউথ। এই ক্লাবটি অবশ্য লিভারপুলের কাছে গত মৌসুমে এক ম্যাচেই হজম করেছিল ৯ গোল। গোল করায় ক্লপের পছন্দের তালিকার শীর্ষ পাঁচে আছে ম্যানচেস্টার সিটিও। পেপ গার্দিওলার দলের বিপক্ষে লিভারপুল গোল করেছে ৪১টি। তিন ও চারে আছে সাউদাম্পটন (৪৪) ও ওয়েস্টহাম (৪৪)।
কীভাবে এসেছে গোলগুলো
লিভারপুলের অন্যতম সেরা গোলদাতা সালাহ বাঁ পায়ের খেলোয়াড়। কিন্তু এরপরও লিভারপুলের বেশির ভাগ গোল এসেছে ডান পা থেকে। ডান পায়ে ৪৬২ গোল করে ক্লাবটি। বাঁ পায়ে এসেছে ৩৪৩ গোল। হেড থেকে এসেছে ১৬৬ গোল এবং কাঁধ থেকেও এসেছে একটি গোল। চলতি মৌসুমে একমাত্র গোলটি করেন লুইস দিয়াজ।
কোন সময়ে এসেছে এসব গোল
প্রেসিং ফুটবল লিভারপুলকে কীভাবে সহায়তা করেছে তা বোঝা যাবে একটি পরিসংখ্যানে। লিভারপুল প্রেসিংয়ের ধারাতেই ৭৬–৯০ মিনিটের মধ্যে করেছে সবচেয়ে বেশি গোল। এ সময়ে এসেছে ২২০ গোল। এরপর ৩১–৪৫ মিনিটের মধ্যে এসেছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭৯ গোল। ১৭৩ গোল এসেছে ৬১–৭৫ মিনিটের মধ্যে। ৪৬ থেকে ৬০ মিনিটে এসেছে ১৬৫ গোল। ১৬ থেকে ৩০ মিনিটে ১৫০ গোল এবং ১ থেকে ১৫ মিনিটে ১১২ গোল।
কার তুলনায় কেমন
লিভারপুলের কোচদের বিবেচনায় নিলে ক্লপের ধারেকাছেও কেউ নেই। ক্লপের ১ হাজার গোল করতে লেগেছে ৪৭৬ ম্যাচ। কিংবদন্তি বিল শাঙ্কলির লেগেছিল ৫৬১ ম্যাচ এবং টম ওয়াটসনের লেগেছিল ৫৮৭ ম্যাচ।