প্রতিপক্ষ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র বলেই কি না, বসুন্ধরা কিংসের কোচ অস্কার ব্রুজোনের কপালে ছিল দুশ্চিন্তার ভাঁজ। গত ১৭ জানুয়ারি ফেডারেশন কাপের গ্রুপ পর্বেও একবার মুখোমুখি হয়েছিল এই দুই দল। ওই ম্যাচে বসুন্ধরার সঙ্গে সেদিন লড়াই করে মুক্তিযোদ্ধা ৪-৩ গোলের ব্যবধানে হেরেছিল।
ফেডারেশন কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে আজ অবশ্য খুব বেশি দুশ্চিন্তায় পড়তে হয়নি ব্রুজোনকে। মুন্সিগঞ্জে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে মুক্তিযোদ্ধাকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সবার আগে ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করল বসুন্ধরা কিংস।
বসুন্ধরা কিংসের হয়ে রবসন রবিনিও নিজে একটি গোল করেছেন, দরিয়েলতন গোমেজকে দিয়ে করিয়েছেন দুটি। মূলত এই দুই ব্রাজিলিয়ানের কাছেই হেরেছে মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধার একমাত্র গোলটি করেছেন জাপানি মিডফিল্ডার সোমা ওতানি।
হারলেই বাদ—নকআউট পর্বের এমন সমীকরণের ম্যাচে শুরুতে গোলের জন্য বেশ লড়াই করতে হয়েছে রবসন, মিগুয়েল, দরিয়েলতনদের। প্রথমার্ধে একের পর এক আক্রমণ করেছে বসুন্ধরা কিংস। কিন্তু গোলের দেখা পাচ্ছিল না তাদের ফরোয়ার্ডরা। বরং ৩৪ মিনিটে গোল করে প্রথমে এগিয়ে গিয়ে সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্নও দেখতে শুরু করে মুক্তিযোদ্ধা! কর্নার থেকে উড়ে আসা সোমা ওতানির শট সরাসরি জড়ায় জালে। গোলের পর বোকার মতো সেদিকে তাকিয়ে ছিলেন বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান।
পিছিয়ে পড়ে ততক্ষণে গোল শোধে মরিয়া হয়ে ওঠে বসুন্ধরা কিংস। আট মিনিটের মাথায় অবশ্য গোলটি শোধ করে ফেলে ফেডারেশন কাপের দুবারের চ্যাম্পিয়নরা। ৪২ মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে ভয়ংকরভাবে আক্রমণে ওঠেন রবসন। এরপর বক্সের মধ্যে থাকা দরিয়েলতনকে বলটি বাড়িয়ে দেন রবসন। সেখান থেকেই আলতো প্লেসিংয়ে ১-১ স্কোর করেন দরিয়েলতন।
দ্বিতীয়ার্ধে যেন আরও আক্রমণাত্মক খেলেছে বসুন্ধরা কিংস। যদিও ৪৯ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত বসুন্ধরা কিংস। কিন্তু রবসনের জোরালো শটটি দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন মুক্তিযোদ্ধার গোলরক্ষক মেহেদি হাসান। কোচ ব্রুজোন ৬৭ মিনিটে একই সঙ্গে দুই ফুটবলারকে বদলি করেছেন। ওই সময় মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ও মতিন মিয়াকে উঠিয়ে মাঠে নামিয়েছেন ডিফেন্ডার তপু বর্মণ ও ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেনকে। রাকিব নামার পর বসুন্ধরার খেলায় যেন গতি বেড়েছে আরও অনেক। সেই কারণেই কিনা ম্যাচের ৭৮ থেকে ৮১ মিনিটের মধ্যে বসুন্ধরা কিংস পেয়েছে পরপর দুটি গোল।
প্রথমে কর্নার থেকে রবসনের উড়ে আসা বলে হেডে গোল করেন দরিয়েলতন (২-১)। এরপর ৮১ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে একাই বক্সে ঢোকেন এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধার চার ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে গোল দেওয়াটা সহজ ছিল না তাঁর পক্ষে। অবশ্য বক্সের মধ্যে পড়ে যাওয়ার আগে একেবারে অরক্ষিত রবসনের কাছে বল বাড়িয়ে দেন তিনি। রবসন সুযোগটা মোটেও নষ্ট করেননি, দারুণ শটে বল জড়িয়েছেন জালে। বাকি সময় অবশ্য চেষ্টা করেও আর কেউ গোল করতে পারেননি।