বায়ার্নকে বিদায় করে সেমিফাইনালে রিয়ালের সামনে সিটি
বায়ার্ন মিউনিখ ১ (১) : ১ (৪) ম্যানচেস্টার সিটি
একটা পর্যায়ে মনে হচ্ছিল, রাতটা আর যাই হোক আর্লিং হলান্ডের নয়।
একবার পেনাল্টি মিস করলেন, আরেকবার গোলরক্ষককে একা পেয়েও জায়গামতো শট নিতে পারলেন না। গোলের সহজ দুটি সুযোগ নষ্টের পর রাতটা হলান্ডের হয় কী করে! কিন্তু হলো। বায়ার্ন মিউনিখের রক্ষণ দেয়াল ভাঙলেন ম্যানচেস্টার সিটির তারকা ফরোয়ার্ডই। এর আগ পর্যন্ত ম্যাচে খানিকটাও ঘুরে দাঁড়ানোর যে আশা ছিল বায়ার্নের, শেষ সেখানেই।
শেষ দিকে পেনাল্টিতে জশুয়া কিমিখ এক গোল শোধ দিলেন বটে, কিন্তু দেনা রয়ে গেল বহু। ইতিহাদে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়া সিটি মিউনিখে ধরে রাখল ১-১ সমতা। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১ গোলের অগ্রগামিতায় ম্যানচেস্টার সিটি উঠে গেল চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে। যে মঞ্চে আগে থেকেই অপেক্ষায় বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ।
সেমিফাইনালে ওঠার জন্য বায়ার্ন মিউনিখকে হয়ে উঠতে হতো লিভারপুল। চলতি মৌসুমের হতশ্রী লিভারপুল নয়। ২০১৮-১৯ মৌসুমের লিভারপুল, যারা প্রথম লেগে বার্সেলোনার কাছে ৩-০ ব্যবধানে হেরেও পরের লেগে নিজেদের মাঠে ৪-০ ব্যবধানে জয় তুলেছিল। পাঁচ বছর আগের ইয়ুর্গেন ক্লপের দলের স্কোরলাইন ফিরিয়ে আনার দরকার ছিল টমাস টুখেল-বাহিনীর সামনে।
সেই চ্যালেঞ্জ জয়ে খেলোয়াড়রা তো বারবার মেজাজ হারালেনই, রেফারির সিদ্ধান্তে একাধিকবার অসন্তোষ প্রকাশ করে শেষ দিকে লাল কার্ড দেখে ডাগআউট ছাড়তে হয় টুখেলকেও।
বল দখলে রেখে শুরু থেকেই আক্রমণে এগিয়ে ছিল বায়ার্ন। ১৭ মিনিটে দারুণ এক সুযোগও পেয়ে যান লিরয় সানে। তবে গোলরক্ষক এদেরসনকে একা পেয়েও কোনাকুনি শটে বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি।
খানিক পরই রেফারির একটি সিদ্ধান্তকে ঘিরে নাটকীয়তা দেখা যায়। বল নিয়ে আক্রমণে ওঠা হলান্ডকে পেছন থেকে ফেলে দেন দায়ত উপামেকানো। সরাসরি লাল কার্ড দেখানো হয় তাঁকে। তবে হলান্ড অফসাইডে ছিলেন নিশ্চিত হওয়ার পর এ যাত্রায় বেঁচে যায় বায়ার্ন।
৩৫ মিনিটে আবারও উপামেকানোর কারণে চাপে পড়ে যায় স্বাগতিকরা। ইলকায় গুনদোগানের শট তাঁর হাতে লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তবে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ নষ্ট করেন হলান্ড। সর্বশেষ ১৫টি পেনাল্টিতে গোল পাওয়া সিটি তারকা বল মেরে দেন বারের ওপর দিয়ে।
প্রথমার্ধের বিরতির আগমুহূর্তে গোলের সুযোগ আসে স্বাগতিকদের সামনে। প্রথমে জামাল মুসিয়ালা শট নেওয়ার মুহূর্তে পিছলে যান, এর পর জটলার ভেতরে ঠিকমতো শট নিতে পারেননি সানে।
৫৫ মিনিটে বায়ার্ন গোলরক্ষক ইয়ান সোমেরকে একা পেয়ে যান হলান্ড। তবে সোজাসুজি দুর্বল শট নিয়ে এই সুযোগটিও নষ্ট করেন।
এর কিছুক্ষণ পরই অবশ্য ‘প্রায়শ্চিত্ত’ করে ফেলেন। প্রতি আক্রমণ থেকে বল পেয়ে প্রথমে কেভিন ডি ব্রুইনাকে দেন হলান্ড। ফিরতি বল নিয়ে দ্রুত ছুটে গিয়ে সোমেরকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়ান।
এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে এটি হলান্ডের ১২তম গোল, আর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মৌসুমে ৪৮তম।
দুই লেগ মিলিয়ে ৪-০ গোলে পিছিয়ে পড়া বায়ার্ন সান্ত¦নার গোল পায় ৮৩ মিনিটে। মানুয়েল আকাঞ্জির হ্যান্ডবলের সুবাদে পাওয়া পেনাল্টি থেকে গোল করেন জশুয়া কিমিখ।