ইউনিয়ন বার্লিন ২-৩ রিয়াল মাদ্রিদ
গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত ছিল আগেই। বার্লিনের অলিম্পিয়াস্তাদিওনে শেষ ম্যাচে এসে তাই ছয়ে ছয় মেলানোই লক্ষ্য ছিল রিয়াল মাদ্রিদের। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে পেনাল্টি মিসেও তাঁদের লক্ষ্যচূত মনে হয়নি। কিন্তু মিনিটখানেক পরই গোল হজম করে বসায় কোচ কার্লো আনচেলত্তিকেও বোধ হয় নড়েচড়ে বসতে হয়েছিল। বিরতির পর তাই সমতাসূচক এবং এগিয়ে যাওয়ার গোল। কিন্তু নাটকের তখনো বেশ বাকি। আনুষ্ঠানিকতার এই ম্যাচই শেষ পর্যন্ত হয়ে উঠেছিল পাঁচ গোলের রোমাঞ্চকর থ্রিল
৬১ মিনিটে সমতাসূচক এবং ৭২ মিনিটে রিয়ালকে এগিয়ে দেওয়া গোল দুটি হোসেলুর। এরপর হয়েছে আরও দুই গোল। ৮৫ মিনিটে অ্যালেক্স ক্রাল যখন গোলটি করে ইউনিয়নকে সমতায় ফেরালেন, রিয়াল ছয়ে ছয় না মেলার শঙ্কায়! ভাগ্যিস, দানি সেবায়োস তখন জায়গামতো ছিলেন। ৮৯ মিনিটে জুড বেলিংহামের পাস পেনাল্টি সীমানার কাছাকাছি পেয়ে কয়েক টাচে বলটা নিয়ন্ত্রণ করে শট নেন সেবায়োস। বল ইউনিয়নের ডিফেন্ডার লাইদুনির গায়ে লেগে জালে জড়ায়। গোল!
শেষ পর্যন্ত ৩-২ গোলের এই জয়ে ছয়ে ছয় মিলিয়েই শেষ ষোলোয় উঠল ‘পারফেক্ট’ রিয়াল। চ্যাম্পিয়নস লিগে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো গ্রুপপর্বে ৬ ম্যাচের সবগুলোই জিতল রিয়াল। মোট ১৮ পয়েন্ট নিয়ে ‘সি’ গ্রুপের শীর্ষে আনচেলত্তির দল। নেপলসে ব্রাগাকে ২-০ গোলে হারানো নাপোলি ৬ ম্যাচে মোট ১০ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের দ্বিতীয় সেরা দল হিসেবে উঠল শেষ ষোলোয়। সমান ম্যাচে ৪ পয়েন্ট পাওয়া ব্রাগা নেমে গেল ইউরোপা লিগ নকআউট রাউন্ডের প্লে অফে। আর ৬ ম্যাচে ২ পয়েন্ট পাওয়া ইউনিয়ন থামল গ্রুপের তলানিতে থেকে।
এই ম্যাচের শিরোনাম হতে পারতেন লুকা মদরিচ। সর্বশেষ রিয়াল বেতিসের সঙ্গে ড্র ম্যাচের একাদশে পাঁচটি পরিবর্তন আনা আনচেলত্তি ৩৮ বছর বয়সী মদরিচকে খেলিয়েছেন শুরু থেকেই। ভালো খেললেও প্রথমার্ধের শেষ দিকে পেনাল্টি মিস করেন। ৪৪ মিনিটে ডান প্রান্তে রদ্রিগোর ক্রসে হ্যান্ডবলের অপরাধ করে বসেন ইউনিয়ন ডিফেন্ডার ডিওগো লেইতে।
স্পটকিক থেকে ইউনিয়ন গোলকিপার রনোর সরাসরি শট নিয়েছিলেন মদরিচ। বল রনোর পায়ে লেগে লক্ষ্যভ্রষ্ঠ হয়। ২০১৪ সালে লুডোগোরেটসের বিপক্ষে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর রিয়ালের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগে পেনাল্টি মিস করলেন মদরিচ।
ক্রোয়াট তারকার পেনাল্টি মিসের পরই যোগ করা সময়ে ধারার বিপরীতে গোল করে বসে ইউনিয়ন। গোলকিপার রনোর দুরপাল্লার বল ঠিকমতো ‘ক্লিয়ার’ করতে পারেনি রিয়ালের রক্ষণ। সবচেয়ে বড় ভুলটা করেন ডেভিড আলাবা। বল ‘ক্লিয়ার’ করতে গিয়ে ইউনিয়ন ফরোয়ার্ড কেভিন ফোল্যান্ডের সামনে বাড়িয়ে দেন। গোল করতে ভুল হয়নি তাঁর।
৬১ মিনিটে রদ্রিগোর ক্রস থেকে হোসেলুর হেডে সমতাসূচক গোলটি পায় রিয়াল। বেলিংহাম এরপর দুটি গোলের সুযোগ নষ্ট করেন। প্রথমার্ধেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। কিন্তু হোসেলু নিজের পরের হেডেই আবারও গোল করে রিয়ালকে এগিয়ে দেন, আর সেটা ম্যাচের ৭২ মিনিটে। নিজেদের পুরোটুকু নিংড়ে খেলা ইউনিয়ন তখনও ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে।
৮৫ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দুরপাল্লার শটে দারুণ এক গোল করে বসেন ইউনিয়ন মিডফিল্ডার অ্যালেক্স ক্রাল। ধারাভাষ্যকার বলছিলেন, ক্লাব ফুটবলে ৫ বছর পর গোল পেলেন! আর সেটাই কিনা রিয়ালের বিপক্ষে ২-২ গোলের সমতা এনে দেওয়া গোল। যদিও সেবায়োসের গোল হজম করে শেষ পর্যন্ত রাতটা বিখ্যাত করে তুলতে পারেনি ইউনিয়ন।