পেনাল্টি ঠেকানোর রহস্য, কুসংস্কার ও উদ্‌যাপন নিয়ে যা বললেন মার্তিনেজ

আর্জেন্টিনার গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজএএফপি

এমিলিয়ানো মার্তিনেজ—নামটা শুনলেই সবার আগে মনে পড়ে, অবিশ্বাস্য দক্ষতায় পেনাল্টি ঠেকানোর সব মুহূর্ত। কাতার বিশ্বকাপ দিয়েই মূলত আলো ছড়িয়েছেন মার্তিনেজ। বিশেষ করে বিশ্বকাপে পেনাল্টি শুটআউটে অবিশ্বাস্য রূপে আবির্ভূত হতে দেখা গেছে তাঁকে। পেনাল্টি শুটআউটে মার্তিনেজের এই ধারাবাহিকতা দেখা গেছে বিশ্বকাপের পরেও। ব্যাপার এখন অনেকটাই এমন, আর্জেন্টিনার কোনো ম্যাচ পেনাল্টি শুটআউটে যাওয়া মানেই তাঁদের নিশ্চিত জয়!

মার্তিনেজের কারণেই মূলত এই ধারণা তৈরি হয়েছে। কিন্তু পেনাল্টি শুটআউটে এই গোলরক্ষক এমন কী করেন, যা তাঁকে এতটা অপ্রতিরোধ্য করে তুলেছে? বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য টেলিগ্রাফ’–এর সঙ্গে কথা বলেছেন মার্তিনেজ। এই আলাপচারিতায় খেলা ও খেলার বাইরে নানা বিষয় নিয়ে মন্তব্য করেছেন অ্যাস্টন ভিলার এই গোলরক্ষক। যেখানে উঠে এসেছে তাঁর কিছু কুসংস্কার মেনে চলার গল্পও।

আরও পড়ুন

মাঠে যে মানুষটি প্রতিপক্ষকে ধসিয়ে দিতে পছন্দ করেন, সেই একই মানুষ আবার ড্রেসিংরুমে হাজির হন টেডি বিয়ার নিয়ে। ম্যাচের আগে আবার তাঁকে দেখা যায় লোমশ পেঙ্গুইন এবং জিরাফ নিয়ে বসে থাকতে। আজ আর্সেনালের বিপক্ষে ম্যাচের আগেও এ ঘটনার ব্যতিক্রম হবে না।

তবে এখানেই শেষ হয়। মার্তিনেজ নিজেই বলেছেন, ‘আমার এমন অনেক কুসংস্কার আছে, যার একটি হচ্ছে বিশ্বকাপের আগে আমার স্ত্রীর দেওয়া একটি টেডি বিয়ার। সে এটা দিয়ে বলেছিল, “তুমি সোনালি কাপটা ঘরে আনতে যাচ্ছ।” আমি ৪০ দিন আমার পরিবার থেকে দূরে ছিলাম এবং আমি সেটা করে দেখিয়েছি। আমি সব সময় আমার শিন প্যাডে টেডি বিয়ারের একটি ছবি রাখি। আমি যেখানেই যাই, এটা সঙ্গে রাখি।’
ম্যাচের প্রস্তুতিতে আর কী কী করেন, তা–ও জানিয়েছেন মার্তিনেজ, ‘আমি সব সময় এসব নিয়ম মেনে চলি। আমি পাইলেটস (একধরনের ব্যায়াম) এবং যোগব্যায়াম করি। ম্যাচের আগে প্রার্থনা করি এবং মনোবিদের সঙ্গেও কথা বলি।’

পেনাল্টি শট ঠেকাচ্ছেন মার্তিনেজ
এএফপি

মার্তিনেজের সাম্প্রতিক সময়ের পারফরম্যান্স দেখলে তাঁর এসব অভ্যাসকে অব্যর্থই বলতে হয়। বিশেষ করে আর্জেন্টিনার জার্সিতে সম্ভবত একটু বেশিই সফল তিনি। আর এমন সাফল্যের পর মার্তিনেজের উদ্‌যাপনও হয় বল্গাহীন। অনেক সময় এমন উদ্‌যাপনের কারণে সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়।

নিজের উদ্‌যাপন নিয়ে মার্তিনেজ বলেছেন, ‘এটা এমন কিছু, যা ঘটতে পারে। এটাকে অ্যাড্রেনালিন কিক বলা যায়, যা কখনো কখনো নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। আমি ইচ্ছাকৃতভাবে করি না, এটা হয়ে যায়। যারা মনে করে, আমি প্রদর্শনবাদী আচরণ করি, তারা আসলে আমাকে চেনে না। আমি সাধারণ একজন মানুষ, পারিবারিক লোক। আমি ক্ষমা চাই না, আমি পণ করি না, আমি কাউকে অসম্মান করি না। আমি শুধু নিজের দলকে সাহায্য করতে চাই। এটুকুই। আমি কখনো সীমা অতিক্রম করি না। কখনো নয়। আমি সব সময় নিজেকে স্থির রাখার চেষ্টা করি।’

আরও পড়ুন

পেনাল্টি ঠেকানোর দক্ষতা নিয়ে মার্তিনেজ বলেছেন, ‘আমি তরুণ বয়স থেকেই খুব ভালো পেনাল্টি ঠেকাতে পারি। আমার মনে হয় পুরো ক্যারিয়ারে একবার পেনাল্টি শুটআউটে হেরেছি। এটা এমন কিছু যাতে আমি সব সময় ভালো করি। আমি সব সময় ভাবি, প্রতিটি শুটআউটে আমি দুটি বা তিনটি পেনাল্টি বাঁচাতে পারব। ৯০ মিনিট খেলার পর পেনাল্টি শুটআউটের চাপ একেবারে আলাদা। কখনো কখনো আপনার ভাগ্যের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমি বিষয়টা নিয়ে কাজ করি, স্ট্রাইকারদের বোঝার চেষ্টা করি।’