জিতলেই নিকটপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে ১৫ পয়েন্টে এগিয়ে যেত বার্সেলোনা। তাতে লা লিগার চ্যাম্পিয়ন ট্রফিটার সঙ্গে দূরত্ব আরেকটু কমে আসত বার্সার। চার বছর পর আবার লা লিগা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন চোখে মাখা বার্সাকে ক্যাম্প ন্যুতে জিততে দেয়নি জিরোনা। লা লিগার সোমবারের রাতের ম্যাচটি ড্র হয়েছে গোলশূন্যভাবে।
পয়েন্ট হারানোর পরও অবশ্য রিয়ালের চেয়ে ১৩ পয়েন্টে এগিয়ে বার্সা। ২৮ ম্যাচে ৭২ পয়েন্ট জাভি হার্নান্দেজের দলের। সমান ম্যাচে কার্লো আনচেলত্তির রিয়ালের পয়েন্ট ৫৯। আর বার্সাকে রুখে দেওয়া জিরোনা ২৮ ম্যাচে ৩৫ পয়েন্ট নিয়ে আছে ১১ নম্বরে।
শেষের দিকে একের পর এক আক্রমণের ঢেউ তুলেও গোল পেতে ব্যর্থ বার্সা নিজেদের দুর্ভাগা ভাবতেই পারে। যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে গাভির হেড কী দারুণ ক্ষীপ্রতায় তা বার উচিয়ে বাইরে পাঠালেন জিরোনা গোলরক্ষক পাওলো গাজ্জানিগা। প্রথমার্ধেও অন্তত তিনবার বার্সাকে গোল করতে দেননি আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক।
একবার গোল তো প্রায় পেয়েই গিয়েছিল কাতালান ক্লাবটি। মাত্র কয়েক মিলিমিটার ও জিরোনা গোলরক্ষকের দুই হাত বাধা হয়েছে তাতে। বলের দশ ভাগের নয়ভাগই পেরিয়েছিল গোললাইন। বাকি এক ভাগ ঢুকতে পারেনি গাজ্জানিগার হাতের বাধায়।
জিরোনাও জিততে পারত। ৫৫ মিনিটে বার্সাকে স্তব্ধ করে দেওয়ার কী সুযোগটাই না নষ্ট করে জিরোনা। আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব–২৩ দলের খেলোয়াড় ভালেন্তিন কাস্তেয়ানোস টের স্টেগেনকে একা পেয়েও শুধু বাইরে পাঠাতে পারেন বলটাকে।
ফুটবল হচ্ছে না টেনিস, ম্যাচের প্রথম কয়েক মিনিট দেখে এমন মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক ছিল। বল এই বার্সেলোনার গোলমুখে তো এই জিরোনার গোলমুখে।
প্রথম মিনিটেই একবার বার্সার পেনাল্টি বক্সে ঢুকে পড়া জিরোনা দ্বিতীয় মিনিটে নষ্ট করে সুযোগ। হাভি হার্নান্দেজের ক্রস খুঁজে নেয় ডান প্রান্ত থেকে এগিয়ে আসা ভিক্তর সিগানকভকে। ইউক্রেনিয়ান মিডফিল্ডারের ভলি বার্সার জাল ছোঁয় বাইরে থেকে।
একটু পরেই বার্সার আক্রমণ। ছয় গজী বক্সে রবার্ট লেভানডফস্কিকে ক্রস বাড়িয়েছিলেন গাভি। পোলিশ স্ট্রাইকার সেটি ধরার আগেই জিরোনাকে বিপদমুক্ত করেন দাভিদ লোপেজ। মিনিটখানেক পরে সেই লেভা বল পেয়েও অবশ্য বার উচিয়ে মেরে সুযোগ নষ্ট করেন।
ধীরে ধীরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া বার্সা এগিয়ে যেতে পারত নবম মিনিটেও। গোল হয়ে গেলে অবশ্য ‘কৃতিত্ব’টা পেতেন জিরোনার খেলোয়াড়েরা। জিরোনা গোলরক্ষক পাওলো গাজ্জানিগা ও ডিফেন্ডার সান্তিয়াগো বুয়েনোর ভুল বোঝাবুঝিতে গোল তো প্রায় হয়েই গিয়েছিল। গোলরক্ষকের অবস্থান না বুঝেই বুয়েনো ব্যাক পাস দিয়েছিলেন। গোল যখন প্রায় হয় হয়, সে সময়েই অনেকটা দৌড়ে এসে কোনোরকমে বলটাকে বাইরে পাঠান গাজ্জানিগা।
২০১৮ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা গাজ্জানিগা প্রথমার্ধে আরও দুবার বাঁচিয়েছেন নিশ্চিত গোল। ৩৬ মিনিটে রাফিনিয়ার খুব কাছ থেকে নেওয়া শট পা দিয়ে বাইরে পাঠিয়ে দেন জিরোনা গোলরক্ষক।
এরপর ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারের নেওয়া কর্নার থেকে রোনালদ আরাউহোর শট কী করে যেন দুহাতে আটকে দেন গাজ্জানিগা। বলের বেশিরভাগ অংশই গোললাইন পেরিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু পেরোতে তো হবে পুরোটাই। ভিএআর রিপ্লেতে দেখা যায় গাজ্জানিগা যখন বলটাকে ঠেকালেন আর কয়েক মিলিমিটারই শুধ গোললাইন অতিক্রম করেনি।
শেষ পর্যন্ত ম্যাচের নায়ক তো এই গাজ্জানিগাই।